1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

বার্মিংহামে দুস্কৃতিকারী প্রতিবেশীর হামলার শিকার দুই বাঙালি সহোদর, পুলিশের নিস্ক্রিয় ভূমিকা

  • Update Time : রবিবার, ৭ মার্চ, ২০২১
  • ২৩০ Time View

লকডাউনে নিষিদ্ধ পার্টিতে ভলিউম কমানোর অনুরোধ করায় প্রতিবেশীদের আক্রমনের শিকার হয়েছেন বার্মিংহামের ওয়ালসলের দুই বাঙালী সহোদর। এদের একজনের নাম আব্দুল হাফিজ। বয়স ৪৪ বছর। অপরজন হলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। বয়স ৩৮ বছর। এই দুই সহোদেরর দেশের বাড়ী সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলায়। তারা দুজনই ওয়ালসলের লর্ড ষ্টীটের বাসিন্দা।

গত ১ লা মার্চ সোমবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে এই ঘঠনা ঘঠে। জানা যায়,  ছোট ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুনের ১১১ নম্বর বাসার পাশের ১০৯ নম্বর বাসায় থাকা প্রতিবেশীর নেতৃত্বে ঐ হামলা চালানো হয়। ঐ বাসায় সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই ১০/১৫ জন নিয়ে নিয়মিত পার্টির আয়োজন করা হতো। তারা লকডাউনের বিধি নিষেধেরও কোনো পাত্তা দিতো না। ঐসব পার্টি থেকে উচ্চস্বরে গান বাজানো ছাড়াও চিৎকার করে আগতরা কথা বলতো, হৈ হুল্লোড় করতো। একেবারে পাশের ঘরে থাকা আব্দুল্লাহ আল মামুন তাঁর তিন বছরের এক কন্যা সন্তানসহ কিডনী ট্রান্সপ্লান্টের গুরুতর অসুস্থ গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন। প্রতিবেশীর ঐ শব্দ যন্ত্রনায় প্রায় প্রতিদিনই তার শিশু সন্তান কেঁপে কেঁপে ঘুম থেকে উঠতো এবং তারঁ অসুস্থ্য স্ত্রী ও তিনি নিজেও ঘুমাতে পারতেন না। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেশীর ঘরের মালিককে জানিয়ে কোনো সুরাহা না পেয়ে তিনি পুলিশকেও অভিযোগ করেন। কিন্তু পুলিশ কোনো ভূমিকা রাখেনি অভিযোগ করে আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, পুলিশকে ফোন করলে তারা ঐ বিষয়টির চাইতেও গুরুত্বপুর্ণ বিষয় নিয়ে ব্যস্ত আছে বলে জানাতো। তবুও তিনি এবং তাঁর স্ত্রী অধিকাংশ দিনই পুলিশকে ফোন করতেন এমনকি একদিনে ১০/১১ বার ফোন করেও তারা পুলিশকে ঘঠনাস্থলে আনতে পারেননি জানিয়ে আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পুলিশ অন্য গুরুত্বপুর্ণ কাজে ব্যস্ত থাকলেও অন্তত একদিনের জন্য হলেও পুলিশ ঘঠনাস্থলে আসলে তার ও তার ভাইয়ের উপড় এই আক্রমন হতো না। তিনি জানান ঘটনার সময় তাঁর স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ; বিধায় তিন বছরের শিশু সন্তানকে তিনি ঘুম পাড়াবার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া লকডাউন পার্টির শব্দ যন্ত্রনায় তার শিশু সন্তানটি রাত সাড়ে দশটায়ও ঘুমাতে না পারায় তিনি দেয়ালের মধ্যে হাত দিয়ে আঘাত করেন। পরে ঐ প্রতিবেশী তার ঘরে এসে নক করলে তিনি তার সন্তানের ঘুমের সমস্যার কথা বলে পার্টির শব্দ কমানোর অনুরোধ করলে সে তা কমানোর কথা বলে চলে যায়। কিন্তু গিয়েই আরো উচ্চস্বরে গান বাজানো ও হৈ হুল্লোর শুরু করে। এমতাবস্থায় আব্দুল্লাহ আল মামুন তার ছোটো শিশুকে রেখে না যেতে পেরে একই রোডে থাকা বড় ভাই আব্দুল হাফিজকে ফোন করে বিষয়টি বুঝিয়ে বলতে ঐ প্রতিবেশীর বাসায় যাওয়ার কথা বলেন। আব্দুল হাফিজ ঐ বাসায় গিয়ে কথা বলতেই

প্রতিবেশী ও তার সহযোগিীর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং আকস্মিকভাবে আব্দুল হাফিজের উপড় এলোপাতারী আক্রমন শুরু করে। চিৎকার শুনে আব্দুল্লাহ আল মামুন এগিয়ে গেলে তার উপড়ও চড়াও হয় এবং কিল ঘুষি লাথি মারতে মারতে রাস্তায় নিয়ে আসে। ঘটনা দেখে অন্য এক প্রতিবেশী সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসলে তার উপড়ও চড়াও হলে তিনি সটকে পড়েন। এক পর্যায়ে আক্রমন থেকে রক্ষা পেতে তিনি ও তাঁর ভাই নিজের ঘর ফেলে রেখে লর্ড ষ্টীট থেকে সামনের ব্রডওয়ে দৌড়ে গেলেও আক্রমনকারীরা তাদের পিছু নেয় এবং ঐখানে গিয়েও তাদেরকে মারতে থাকে এবং আঘাত সহ্য করতে না পেরে ঘঠনাস্থলেই আব্দুল হাফিজ অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং আব্দুল্লাহ আল মামুনের থুতনি ফেটে নাক মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে পড়ে। আব্দুল হাফিজকে অজ্ঞান দেখে তাঁকে মৃত ভেবে আক্রমনকারী চলে যায় এবং পরে এম্বুলেন্স ও পুলিশের সহায়তায় তাদেরকে হাসপাতেল নেওয়া হয়। সেই সময়ও আক্রমনকারীরা ঘরে আছে এবং তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে অনুরোধ করলে পুলিশ তখনও এর চাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে বলে তা এড়িয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং আব্দুল হাফিজ দুই দিন হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভাগ্যিস তার স্ত্রী ঐদিন হাসপাতালে ছিলেন না হলে অসুস্থ ও গর্ভাবস্থায় চোখের সামনে স্বামী ও ভাসুরকে দুস্কৃতিকারীদের মারতে দেখার বিষয়টি সহ্য করতে পারতেন না এবং তার শারিরীক অবস্থার আরো অবনিত হতো। এমনিতে বিষয়টি জেনে এবং তার ক্ষত-বিক্ষত চোখ মুখ দেখে স্ত্রীর প্রেসার বেড়ে গেছে।

ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে দুদিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ঘরে আসা বড় ভাই আব্দুল হাফিজ সেই বিভীষিকাময় আক্রমনের বর্ণণা দিতে গিয়ে বলেন, তিনি ভাবছিলেন তিনি মারাই যাচ্ছেন। খুব শক্তিশালী বেদনানাশক ওষুধের কারণে বাসায় ফিরে আসা আব্দুল হাফিজ জানান, তিনি এই আক্রমনের স্বীকার হওয়ার পরও তিনি যে এখনো বেঁচে আছেন তা তার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, পুলিশ যেভাবে ভূমিকা রাখার কথা ছিলো সেভাবে রাখছে না, যা তাকে ও তার ভাইয়ের পরিবারকে মর্মাহত করেছে। লকডাউনের মধ্যে ঘঠা এই ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকে পুলিশ এখনো আটক করতে পারেনি। দুই ভাইয়ের এই হামলার স্বীকার নিয়ে ডেইলি মেইল, ডেইলি মিরর, বার্মিংহাম মেইল, সানসহ মুলধারার গণমাধ্যমগুলো বিস্তারীত সংবাদ ছেপেছে। এসব গণমাধ্যম সুত্রে জানা গেছে, ওয়েষ্ট মিডল্যান্ডস পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বিষয়টি নিয়ে তার তদন্ত করছেন। তবে এই ঘটনায় সংখ্যালঘু কমিউনিটি বিশেষ করে বাঙালী কমিউনিটির মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার ঘঠেছে। ৬ মার্চ শনিাবর বৃটেনের চ্যানেল এসে এই নিউজটি প্রচার হবার পর অনেকেই সোসাল মিডিয়ায় ওয়েষ্ট মিডল্যান্ডন্স পুলিশের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করছেন। তারা বিষয়টি নিয়ে বাঙালী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দকে ক্যাম্পেইন করার আহবান জানিয়েছেন যাতে ভবিষ্যতে সংখ্যালঘু কমিউনিটিতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে।

আরও পড়ুন : উসকানিমূলক বক্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ মিনুর

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..