1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে লিখা ** কিশোরীর ক্ষনিকের ভুল **

  • Update Time : শনিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২০
  • ৬৫৪ Time View

নবম শ্রেণীর কুসুম( ছদ্মনাম) নামের কিশোরী টি অসম্ভব রূপবতী

বাবা মায়ের আদরে সে অনেকটাই বেপরোয়া। চাঁদ অথবা ফুল অথবা কাব্যের বনলতা কোনটি ই তার রূপের সাথে মানানসই নয় । বান্ধবী দের কাছে মেধাবী ও সুন্দরি হিসাবে তার অনেক সুখ্যাতি। স্কুলে যাওয়া আসার পথে উৎসুক চোখ গুলি তাকে এক নজর দেখে নিতে মোটেই ভুল করতো না। এমনি করেই বৃষ্টি ভেজা কদম্ব ফুলের মতই বিকশিত হচ্ছিল এই কিশোরীর শিক্ষাজীবন। সে ছিল একাধারে সুহাসিনী, সুকেশিনী, সুবচনী, উদ্দাম, উচ্ছল, তারুণ্যে চঞ্চলা হরিনী। কিন্তু এই হাসি আর সুখ তার কপালে বেশী দিন সইল না। এক ফুৎকারে সবকিছু যেন নির্বাপিত হয়ে গেল।
সেই কাহিনী টাই এখন লিখবো।

তখন আমি একটি থানায় নতুন যোগদানকৃত অফিসার। মেয়েদের সমস্ত সমস্যা সমাধান করা যেন আমার একান্ত দায়ীত্ব মনে হতো। ভয় কি জিনিস….ইয়ে.. মানে.. থাক সেকথা। এমনি সময়ে কোন এক বিকেলে এক প্রৌঢ় থানায় এসে আমগাছতলায় অত্যন্ত ম্লান মুখে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। আমার নজর এড়িয়ে গেল না বিষয়টি। আম গাছে ঝিঁ ঝিঁ পোকার প্রচন্ড আওয়াজে তার নিভৃত কান্না যেন হারিয়ে যাচ্ছিল। কাউকে সে কিছু বলতেও পারছিল না। আমিই জিজ্ঞাসা করলাম, ভাই… অনেক্ষন এখানে দাঁড়িয়ে আছেন, আপনার কি হয়েছে? কিছু বলবেন? আমার কথা শুনেই তার করুন চাহুনীর চোখ বেয়ে নীরবে কয়েক ফোঁটা অস্ত্রু গড়িয়ে পড়লো। বুঝলাম গুরুতর কিছু হবে। এক পর্যায়ে সে আমার হাত চেপে ধরে হাউ মাউ করে কেঁদে ফেললো।

* স্যার, আমার একটি মাত্র মেয়ে, তার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। তাকে দয়াকরে বাঁচান।
# (কিছুটা অবাক হয়ে) আপনি সব কিছু খুলে বলুন তো?
* স্যার, এলাকার ছেলেদের মোবাইলে আমার মেয়ের কিছু অশ্লীল ছবি আছে।
বাজারের কিছু গান ডাউন লোডের দোকানেও তার কিছু আপত্তিকর ভিডিও আছে। মান সন্মান সব গেছে স্যার। আমি মরে যাব, আমার মেয়েও…
সে ঘর থেকে বেড় হচ্ছে না। কখন যে কি করে বসে…

# ভিডিওটা আমাকে দেখানো যাবে?
* এই যে, এই মোবাইলে আছে। বলেই কপালে কয়েকটা কড়াঘাত করলো, আর বুক ফাঁটা আর্তনাদ।

আমি তাকে শান্তনা দিলাম। যা ভেবেছিলাম, সেরকম কিছুই না, তবে মান হানিকর অবশ্যই।
ইচ্ছা করছিল শয়তান টাকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলি। চিবানোর মত যথেষ্ট শক্তিও ছিল দাঁতে। কিন্তু সে অনেক দূরে একটি জেলায় সরকারি চাকুরী করে। পূর্বে থেকেই অবশ্য তাদের মাঝে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ছুটিতে বাড়ি এসে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবুঝ মেয়েটির অজান্তে মোবাইলে কিছু ছবি ও ভিডিও করেছিল। আনন্দের আতিশয্যে ছেলেটি ওটা তার ক্লোজ ফ্রেন্ড কে দেখিয়েছিল। সেই বন্ধু শেয়ার করে ওটা নিয়ে নিছে তার মোবাইলে। কিভাবে যেন তা বাজারেও চলে গেছে। ভিডিও তেমন কিছু নয় কিন্তু তার রূপের কারনে সেটির প্রাধান্য ছিল অনেক বেশী।

যথারীতি মামলা নিলাম। তদন্তে গিয়ে প্রথমেই বাজারের সব কয়টি গান ডাউন লোডের দোকান ঘেড়াও করে ফেললাম। যেসব কম্পিউটারে আপত্তিকর কিছু পেলাম সেগুলো সিজ করলাম। কয়েক জন গান ডাউন লোডার কেও গ্রেফতার করলাম। ভিডিও শেয়ার করা সেই ক্লোজ ফ্রেন্ড টিকেও হ্যান্ডকাফ পড়ালাম। এক ঘন্টায় বাজার সহ এলাকা একেবারে ঠান্ডা।
অতঃপর আমার মেধার সর্ব শক্তি দিয়ে এবং ডেল কার্নেগীর কিছু পদ্ধতি মোতাবেক মেয়েটির মন স্বাভাবিক করে দিবার চেষ্টা করলাম। কাজ হলো। সে আবার স্কুলে যাওয়া শুরু করলো। যদিও স্কুলে যাওয়া আসার পথে অনেকেই আঙ্গুল দিয়ে তার দিকে ইশারা করে কি যেন বলে। বান্ধবীরা মুখ টিপে টিপে হাসে। কিন্তু তাকে শিখিয়ে ছিলাম, কিভাবে চরম প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হয়। সে নিজেকে সামলে নিল। আমি তাকে সাহস দিলাম, অভয় দিলাম, মানষিক প্রেরণা দিলাম। তদন্ত কালে প্রায় ৪০০ কিঃমিঃ দুরের একটি অফিস থেকে ঐ কুলাঙ্গার কে সরকারী বিধি মালা মেনে গ্রেফতার করে নিয়ে আসলাম। কঠিন ফরোয়ার্ডিং দিয়ে কোর্টে চালান দিলাম। সম্ভবতঃ মামলাটি এখনো চলতেছে। শুনেছি তার চাকুরী নেই। বছর ২/৩ আগে এক জনের কাছে শুনেছিলাম মেয়েটি উচ্চ শিক্ষিত হয়েছে। সে ভালই আছে।

শিক্ষাঃ ১। কেউ যেন কোন মেয়ের অশালীন ছবি তুলতে না পারে তার জন্য মা বাবার উচিৎ মেয়ে কে পূর্ব থেকেই সতর্ক করে দয়া।
২। স্কুল কলেজ গামী মেয়েদের হাতে মোবাইল না দেয়াই ভাল।
৩। অযাচিত কিছু ঘটে গেলে অবশ্যই আইনের আশ্রয় নিতে হবে।
৪। এটি মেয়েদের জন্য একটি শিক্ষণীয় পোষ্ট।
(সংগত কারনে থানার নাম, সময়, ভিকটিম এর নাম ইত্যাদি গোপন রাখা হয়েছে)

 

লেখক: মুজিবুর রহমান,ওসি তাড়াইল থানা,কিশোরগন্জ।

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..