স্পোর্টস ডেস্ক: ভারত বিশ্বকাপের বল-ট্র্যাকিং প্রযুক্তি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে এলবিডব্লিউ হয়ে আউট হওয়ার পর প্রযুক্তি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি। এক্ষেত্রে আম্পায়ারদের আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ওয়ার্নার।
গত সোমবার (১৬ অক্টোবর) লখনউতে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়া। ওই ম্যাচে ১১ রানের মাথায় লঙ্কান পেসার দিলশান মাদুশঙ্কাকে পেছনে নেমে খেলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন ওয়ার্নার। বল গিয়ে লাগে তার পায়ে। তখন আম্পায়ার জোয়েল উইলসন তাকে এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত দেন।
আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে রিভিউ নেন ওয়ার্নার। কিন্তু বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, বলটি লেগ স্টাম্পের বাইরের দিকে স্পর্শ করেছে। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত হওয়ার কারণে রিভিউ করেও কোনো লাভ হয়নি ওয়ার্নারের। এসময় তিনি হতবাক হয়ে যান এবং রেগে যান। প্যাভিলিয়নে ফেরার সময়ও তাকে রাগে গজরাতে গজরাতে কিছু বলতে দেখা যায়।
গতকাল মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সেই ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন ওয়ার্নার। কেন সেদিন রাগান্বিত হয়েছিলেন এবং আউট হওয়ার পর আম্পায়ারকে কি বলেছিলেন সে বিষয় জানিয়েছেন অসি ব্যাটার। এসময় ক্রিকেটারদের ব্যাটিং পরিসংখ্যানের মতো আম্পায়ারদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের নির্ভুলতার পরিসংখ্যান বড় পর্দায় দেখানোর আহ্বান জানান।
ওয়ার্নার বলেন, ‘আমি জোয়েলকে (আম্পায়ার) জিজ্ঞেস করেছি, আমি স্টাম্পের বাইরে ছিলাম তবুও তিনি কেন আউট দিলেন। তিনি বললেন, বলটি পিছনের দিকে সুইং করছিল। এমনটি ভেবেই তিনি আউটের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। কিন্তু আপনি যদি রিপ্লে দেখেন তাহলে আপনি বিরক্ত হবেন। কিন্তু এটি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।’
‘আমরা কি দেখতে চাই, সে বিষয়ে বলার মতো অনেক কিছুই আছে। ব্যাট করতে নামার সাথে সাথে ক্রিকেটারের পরিসংখ্যান বোর্ডে দেখা যায়। যখন আম্পায়ারদের নাম ঘোষণা করা হয়, তখন আমরা তাদের পরিসংখ্যানও বোর্ডে দেখতে চাই। কারণ আমরা এনআরএল (ন্যাশনাল রাগবি লিগ) এ এমনটি দেখতে পাই। এনআরএল-এ পরিসংখ্যানগুলো দেখায়। আমার মনে হয় ন্যাশনাল ফুটবল লিগেও (এনএলএফ) এ পরিসংখ্যানগুলো দেখায়। আমি মনে করি এটি (আম্পায়ারের পরিসংখ্যান দেখানো) দর্শকদের জন্যও একটি ভালো বিষয়’-যোগ করেন ওয়ার্নার।
তবে ওয়ার্নার স্বীকার করেছেন, কোনো আম্পায়ারই ইচ্ছেকৃতভাবে ভুল সিদ্ধান্ত দেন না। যতটুকু ভুল হয় সেটি অসতর্কতার কারণেই হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বল-ট্র্যাকিং প্রযুক্তিকেই দায়ী করেছেন তিনি।
বল-ট্র্যাকিং প্রযুক্তি ‘হক-আই’ নিয়ে অভিযোগ করে ওয়ার্নার বলেন, ‘এই প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে তা কখনো তাকে ব্যাখ্যা করে বলা হয়নি। অনেক সময় রিপ্লেতে দেখা যায় বল-ট্র্যাকিং পদ্ধতি ঠিকমতো মিলছে না। এক্ষেত্রে প্রযুক্তিটি কিভাবে কাজ করছে সে বিষয়ে আরও জবাবদিহিতা থাকা উচিত।’
ওয়ার্নার আরও বলেন, ‘অনেক সময় রিভিউ নিয়ে আমরা সিদ্ধান্তের (বল-ট্র্যাকিংয়ের) জন্য অপেক্ষা করি। একজন খেলোয়াড় হিসেবে আপনি তখন আরও হতাশ হয়ে পড়েন যখন আপনি মনে করেন, এটি কি স্টাম্পকে স্পর্শ করেছে? গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলি কী? বল স্টাম্পে যাওয়ার আগে কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট রয়েছে?’
‘আমি কখনই ‘হক-আই’ কিভাবে কাজ করে সেটি ব্যাখ্যা করতে দেখিনি। এটি কেবল টিভির জন্য করা হয়। এটি কিভাবে কাজ তা যদি আমাদেরকে ব্যাখ্যা করা হতো তাহলে কখনো কখনো আমরা রিভিউ নিতাম না’- অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার যোগ করেন।