প্রত্যয় নিউজডেস্ক: ইসলামপন্থী উগ্রবাদ ঠেকিয়ে ফ্রান্সে ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ সংরক্ষণ পরিকল্পনার উন্মোচন করে দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘বিশ্বজুড়ে এখন সংকটে রয়েছে ইসলাম।‘ তার এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্বের ইসলামি অ্যাক্টিভিস্টরা। খবর কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার।

শুক্রবার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ভাষণে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘একটি ধর্ম হিসেবে ইসলাম বিশ্বজুড়ে সংকটের মধ্যে রয়েছে। এটা শুধু আমরা আমাদের দেশেই দেখছি না।’ ডিসেম্বরে সরকার একটি বিল আনবে যেখানে কঠোর করা হবে ১৯০৫ সালের একটি আইনে; যে আইনে রাষ্ট্রের সঙ্গে চার্চগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে পৃথক করা হয়েছে।

ফ্রান্সে ক্রমবর্ধমান উগ্রপন্থা সমস্যা মোকাবিলা এবং যৌথভাবে একটি সমাজে জীবন যাপন করার সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এমন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ম্যাক্রোঁ। তিনি বলছেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা হলো ঐক্যবদ্ধ ফ্রান্সের মূল ভিত্তি। তবে মুসলিমদের নিয়েও বিশেষ কোনো নেতিবাচক ধারণারও অর্থ হয় না।’

ম্যাক্রোঁ বলছেন, এই আইনে প্রত্যেকে তার পছন্দমতো ধর্ম মেনে চলতে পারবেন। তবে স্কুলসহ সরকারি দফতরের সঙ্গে কোনো ধরনের ধর্মীয় সম্পৃক্ততা থাকতে পারবে না। ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে এবং সরকারি কর্মচারীদের হিজাব পরার ক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

তবে ম্যাক্রোঁর এমন মন্তব্য ইসলামী অ্যাক্টিভিস্টদর ক্ষুব্ধ করেছে। ইয়াসের লোয়াটি নামে দেশটির একজন মুসলিম অ্যাক্টিভিস্ট বলছেন, ‘মুসলিমদের হুমকি হিসেবে বিবেচনার বিষয়টি প্রতিশ্রুতিতে পরিণত হয়েছে।’

তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘এক ঘণ্টার বক্তব্যে ম্যাঁক্রো ধর্মনিরপেক্ষতা কবর দিয়ে কট্টরপন্থী, মুসলিমবিরোধী বামপন্থীদের উসকে দিয়েছেন এবং মুসলিম শিক্ষার্থীদের জীবনকেও ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছেন তিনি।’

সারাহ আলাওনি নামে ফ্রান্সের আরেক শিক্ষাবিদ টুইটে লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ইসলামকে এমন একটি ধর্ম বলে বর্ণনা করেছেন, যা আজ সারা বিশ্বে সংকটময় অবস্থার মধ্যে রয়েছে। আমি জানি না কি বলবো। এই মন্তব্যটি এতটাই মূর্খের মতো যে এর জন্য আর কোনও বিশ্লেষণের প্রয়োজন নেই।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি যে বিষয়টি উদ্বিগ্ন তা আমি লুকিয়ে রাখতে চাই না। যদিও আমরা দেখেছি যে ক্রাইস্টচার্চে ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনাটি ঘটিয়েছে একদল শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসী। অথচ মহান প্রতিস্থাপনের নামে বর্ণবাদী ও শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী তত্ত্বকে রফতানি করা দেশ হলেও তার কথায় এর কোনো উল্লেখ নেই।’