নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ‘বিয়েবাড়িতে’ বর-কনেসহ দু’পক্ষের আত্মীয়র উপস্থিতিতে হঠাৎ আগুন লাগল। লোকজন বালতিতে করে পানি ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করেন। এরমধ্যে খবর দেওয়া হলে আগুন নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট। তারা দ্রুত দক্ষতার সঙ্গে সেই আগুন নিভিয়ে ফেলে। শুরু করেন আহতদের উদ্ধার কাজ। এমন পরিস্থিতিই তৈরি করা হয়েছিল ‘জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস ২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত মহড়া অনুষ্ঠানে। ভূমিকম্প ও পরবর্তী করণীয় বিষয়ক পরিস্থিতিও তৈরি করা হয় আয়োজনে।
শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে এগারটায় রাজধানীর কড়াইল বেলতলায় ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলামসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
মহড়া শেষে মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘অগ্নিনির্বাপণ ও ফায়ার ড্রিলের সনদ না থাকলে ডিএনসিসি থেকে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা বড় বড় অট্টালিকা তৈরি করি, কিন্তু সেগুলোর কমপ্লায়েন্স মেনে চলি না। যারা বড় বড় ভবন তৈরি করছেন তাদের নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকতে হবে।’
মেয়র আরও বলেছেন, ‘আপনারা ৪০, ৫০, ৬০ তলা বিল্ডিং করবেন, কিন্তু নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা তৈরি করবেন না, এটা হতে পারে না। নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ও ফায়ার ড্রিল সনদ না থাকলে ডিএনসিসি থেকে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হবে না। যারা ভবন তৈরি করবেন তাদেরই ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে।’
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফায়ার সেফটি, বিল্ডিং সেফটি, ইলেকট্রিক্যাল সেফটি এগুলো নিজ দায়িত্বে নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের জন্য বসে থাকলে হবে না। ফায়ার ব্রিগেডের আশায় বসে থাকলে হবে না। নিজের দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে।
মেয়র আরও বলেন, ‘বস্তিবাসীর আবাসিক সমস্যা সমাধানে ডিএনসিসি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করতে চায়। গাবতলীতে ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য আবাসিক ভবনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একইভাবে বস্তিবাসীর জন্য বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করা যেতে পারে।’
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বে রোল মডেল। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য বর্তমান সরকারের আমলে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। দেশব্যাপী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, অত্যাধুনিক কমিউনিকেশন টেকনোলজিসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি কেনা হবে। এর ফলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের যে দক্ষতা তৈরি হবে তা পৃথিবীর যেকোনো উন্নত শহরের সমপর্যায়ের সঙ্গে তুলনীয় হবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মহসীন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সাজ্জাদ হোসাইন, ডিএনসিসির ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মফিজুর রহমান মফিজ, ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ নাছির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।