ওয়েব ডেস্ক: বরগুনার পাথরঘাটায় দুটি আর্টিসানাল ট্রলিং বোট জব্দকে কেন্দ্র করে কোস্টগার্ডের ক্যাম্প ও যানবাহন ভাঙচুর করেছে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জেলেরা। এ সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে কোস্টগার্ডের সদস্যরা জেলেদের ওপর ফাঁকা গুলি ও লাঠিচার্জ করেন। তবে জেলেদের দাবি, হাইকোর্টের চলমান রিট না মেনেই বোট দুটি জব্দ করে কোস্টগার্ড।
বুধবার (১৮ জুন) বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পাথরঘাটার কোস্টগার্ডের জেটি-সংলগ্ন ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পাথরঘাটা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মধ্যরাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরের দিকে পাথরঘাটার আলম কোম্পানি ও মাসুম কোম্পানির অবৈধ দুটি আর্টিসানাল ট্রলিং বোট জব্দ করে কোস্টগার্ড সদস্যরা। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে রাতে ট্রলার মালিক ও জেলেরা কোস্টগার্ডের ক্যাম্প ঘেরাওয়ের চেষ্টা করেন। এ সময় কোস্টগার্ডের ১টি পিকআপ ও ১টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন তারা। এ ছাড়া টহলকাজে ব্যবহৃত একটি কাঠের বোট নদীতে ডুবিয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে কোস্টগার্ড। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোন অধীনস্থ বিসিজি স্টেশন পাথরঘাটা সূত্র জানায়, অবৈধ ট্রলিং বোট জব্দ করাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় উচ্ছৃঙ্খল জনগণ একতাবদ্ধ হয়। পরে তারা কোস্টগার্ডের স্থাপনায় হামলা, সরকারি গাড়ি ভাঙচুর, কোস্টগার্ড সদস্যদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করেন। আত্মরক্ষার্থে কোস্টগার্ড বিধি মোতাবেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক মাসুম আকন বলেন, গতকাল আমার একটি ট্রলারের ত্রুটি থাকায় ডগে ওঠানো হয় এবং আরেকটি ট্রলার সাগর থেকে সেইব ভেঙে আসে। কোস্টগার্ড ওই ট্রলার দুটিকে জব্দ করে। হাইকোর্টে চলমান রিট অনুযায়ী ছয় মাস সময় এবং কাগজপত্র থাকলেও তা তারা মানেনি। পরে গ্যাস কাটার দিয়ে ট্রলারের নেট কাটা শুরু করলে উৎসুক মানুষ পাশের একটি ব্রিজের ওপর ভীড় করেন। এ সময় কোস্টগার্ড অতর্কিতভাবে গুলি বর্ষণ করে। অতীতেও আরও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বিক্ষুব্ধ জনতা একত্রিত হয়ে কোস্টগার্ড সদস্যদের অবরুদ্ধ করেন।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, কোস্টগার্ড দুটি ট্রলিং বোট জব্দ করে কাটিং ওয়েল্ডিংয়ের তার কাটার সময় জনগণ বাধা দেয় এবং কোস্টগার্ডকে উদ্দেশ্য করে ঢিল নিক্ষেপ করেন। এ সময় কোস্টগার্ড ফাকা গুলি ছোড়ে। তবে উভয় পক্ষের মধ্যে কিছু ভুল বোঝবুঝি রয়েছে, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রাতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাথরঘাটা সার্কেল) শাহেদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত কালকের ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। এ ছাড়া কোস্টগার্ড ক্যাম্পেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।