স্পোর্টস ডেস্ক: আগের দিন সেঞ্চুরি করা ট্রাভিস হেড টিকলেন না বেশিক্ষণ। সেঞ্চুরি ছুঁয়ে বেশিদূর যেতে পারলেন না স্টিভেন স্মিথ। তাদের বড় জুটি ভাঙার পর ঘুরে দাঁড়াল ভারত। বোলারদের মিলিত অবদানে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস গুটিয়ে দিল পাঁচশ রানের আগেই। তবে টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় রোহিত শর্মাদের চোখ রাঙাচ্ছে ফলো-অন।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ভারতের রান ৫ উইকেটে ১৫১। আজিঙ্কা রাহানে ২৯ ও শ্রিকর ভারত ৫ রানে ব্যাট করছেন। ফলো-অন এড়াতে এখনও ১১৯ রান চাই তাদের।
অস্ট্রেলিয়াকে ৪৬৯ রানে থামিয়ে দেওয়া ভারত প্রথম পাঁচ ওভার কাটিয়ে দেয় নিরাপদেই। এরপরই ৩০ রানে পাঁচ বলের মধ্যে তারা হারায় দুই ওপেনারকে। রোহিত শর্মাকে এলবিডব্লিউ করে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম সাফল্য এনে দেন প্যাট কামিন্স। স্কট বোল্যান্ডের বল ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হন সবশেষ আইপিএলের সর্বোচ্চ স্কোরার শুবমান গিল।
জোড়া ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন চেতেশ্বর পুজারা ও বিরাট কোহলি। এবার কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে সাসেক্সের হয়ে তিনটি সেঞ্চুরি করা পুজারা টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ১৪ রান করে তিনিও বোল্ড হন ক্যামেরন গ্রিনের বল ছেড়ে দিয়ে। কোহলিও পারেননি তেমন কিছু করে দেখাতে। স্টার্কের বাড়তি বাউন্সে স্লিপে স্মিথের দারুণ ক্যাচে তিনি ফেরেন ১৪ রান করে। তখন ৭১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে ভারত।
এরপর রাহানে ও রবীন্দ্র জাদেজার ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে ভারত। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এক প্রান্ত আগলে রাখেন রাহানে। আরেক প্রান্তে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান করেন জাদেজা। দ্রুতই জমে যায় তাদের জুটি। মনে হচ্ছিল এই জুটিতেই দিন পার করে দেবে ভারত। কিন্তু শেষ দিকে আক্রমণে এসে দারুণ এক ডেলিভারিতে জাদেজাকে ফিরিয়ে ৭১ রানের জুটি ভাঙেন নাথান লায়ন। ভারতীয় বাঁহাতি অলরাউন্ডার ৫১ বলে এক ছক্কা ও সাত চারে করেন ৪৮ রান।
ভারতকে নিয়ে বাকি সময়টা কাটিয়ে দেন রাহানে। তৃতীয় দিন তাদের সামনে অপেক্ষা করছে দলকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কঠিন চ্যালেঞ্জ।
এর আগে দা ওভালে বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় দিন শুরু করে ৩ উইকেটে ৩২৭ রান নিয়ে। আগের দিন ৯৫ রানে অপরাজিত স্মিথ দিনের প্রথম ওভারে পরপর দুই চারে পূর্ণ করেন সেঞ্চুরি। এটি তার ৩১তম টেস্ট শতক, ভারতের বিপক্ষে নবম, ইংল্যান্ডের মাটিতে সপ্তম।
হেড আগের দিনের ১৪৬ রানের সঙ্গে এ দিন যোগ করতে পারেন আর ১৭ রান। মোহাম্মদ সিরাজের শর্ট বলে তিনি কট বিহাইন্ড হলে ভাঙে ২৮৫ রানের জুটি ভাঙে। ১৭৪ বলে ২৫ চার ও এক ছক্কায় সাজানো বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ১৬৩ রানের ইনিংস।
ছয় নম্বরে নেমে ক্যামেরন গ্রিন বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। মোহাম্মদ শামির অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে ড্রাইভ করে স্লিপে ধরা পড়েন তিনি। খানিক পর স্মিথকে বোল্ড করে থামান শার্দুল ঠাকুর। ২৬৮ বলে ১৯ চারে গড়া স্মিথের ১২১ রানের ইনিংস।
দলের স্কোর চারশ পেরুনোর পরপরই রান আউট হয়ে যান মিচেল স্টার্ক। অষ্টম উইকেটে অ্যালেক্স কেয়ারি ও কামিন্সের ৫১ রানের জুটিতে সাড়ে চারশ ছাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ।
৬৯ বলে ৭ চার ও এক ছক্কায় ৪৮ রান করা কেয়ারিকে এলবিডব্লিউ করে দেন জাদেজা। লায়ন ও কামিন্সকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস গুটিয়ে দেন সিরাজ। ১০৮ রানে এই পেসার নেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩২৭/৩) ১২১.৩ ওভারে ৪৬৯ (স্মিথ ১২১, হেড ১৬৩, গ্রিন ৬, কেয়ারি ৪৮, স্টার্ক ৫, কামিন্স ৯, লায়ন ৯, বোল্যান্ড ১*; শামি ২৯-৪-১২২-২, সিরাজ ২৮.৩-৪-১০৮-৪, উমেশ ২৩-৫-৭৭-০, শার্দুল ২৩-৪-৮৩-২, জাদেজা ১৮-২-৫৬-১)
ভারত ১ম ইনিংস: ৩৮ ওভারে ১৫১/৫ (রোহিত ১৫, গিল ১৩, পুজারা ১৪, কোহলি ১৪, রাহানে ২৯*, জাদেজা ৪৮, ভারত ৫*; স্টার্ক ৯-০-৫২-১, কামিন্স ৯-২-৩৬-১, বোল্যান্ড ১১-৪-২৯-১, লায়ন ২-০-৪-১)