প্রত্যয় ইউরোপ ডেস্ক : করোনার ভারতের ধরন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ব্রিটেনে । আর সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হচ্ছে ভয়ংকর এই ভারতীয় ধরন কিন্তু যুক্তরাজ্যে ঢুকে নতুন আরেকটি ধরনে রুপান্তর হচ্ছে, যেটি আরো বেশী ভয়ংকর, আরো বেশী দ্রুত ছড়ায়, আরো বেশী মানুষকে কাবু করে ফেলছে।
এই ভারতীয় ধরন কতটুকু ভয়ংকর তা ভারতের দিকে তাকালেই বুঝা যায়। প্রতিদিন সেখানে সাড়ে ৩ হাজারের বেশী মানুষ মারা যাচ্ছেন, আক্রান্ত তো বিশ্ব রেকর্ড করে প্রায় ৪ লাখের কাছাকাছি প্রতিদিন।
এই ভয়ংকর ভারতীয় ধরনে এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে ৪০০ জনের বেশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর এই ধরনটি আরো দ্রুত মানুষের মধ্যে ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞরা।
ইংল্যান্ডের পাবলিক হেলথ বা জনস্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় জানিয়েছে, ভারতীয় স্ট্রেন থেকে তৈরি হওয়া দু’টি নতুন ভ্যারিয়্যান্ট চিহ্নিত করা হয়েছে ইংল্যান্ডে। এ দুটি আরও বেশি সংক্রামক। ফলে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ।
পাবলিক হেলথের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নতুন ভ্যারিয়্যান্ট দুটি মূল ভারতীয় স্ট্রেন থেকেই তৈরি হয়েছে। তবে দুই ধরনে আলাদা আলাদা মিউটেশন ঘটেছে। নতুন এই ধরন গুলো জানার জন্য আরও তদন্ত করে দেখছেন বিশেষজ্ঞেরা।
স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, ভারতীয় স্ট্রেনের নতুন ভ্যারিয়্যান্টের একটিতে ২০২ জন আক্রান্ত হয়েছে। অন্যটিতে এ পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছে ৫ জন। মূল ভারতীয় স্ট্রেনে আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানে ২০০ জন ছাড়িয়েছে। সব মিলিয়ে যুক্তরাজ্যে ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে করোনার ভারতীয় ধরনে আক্রান্তের সংখ্যা । তবে এই ভ্যারিয়্যান্টগুলি বেশি ভয়ঙ্কর হওয়ার কোনও প্রমাণ মেলেনি এখনও পর্যন্ত।
পাবলিক হেলথের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বর্তমানে ২৪ ঘণ্টা নজরদারীর মধ্যে রাখা হয়েছে আক্রান্তদের। ভ্যারিয়্যান্ট দুটির গতিবিধিও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ভারতের ধরন প্রথম ধরা পরার পরই মার্চ মাস থেকেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। মিউট্যান্ট স্ট্রেনে সংক্রমিতের তালিকাও বানানো হয়েছে গবেষণার সুবিধার জন্য। তাতে দেখা গিয়েছে যুক্তরাজ্যে পাওয়া কেন্ট স্ট্রেনে সংক্রমিতের সংখ্যা ২ লক্ষ ২৬ হাজার ৬৩৫। ভারতীয় স্ট্রেনে ইংল্যান্ডে আক্রান্ত ১৭২ জন। স্কটল্যান্ডে ১৩ জন। ৮ জন ওয়েলসে।
এছাড়া গত বৃহস্পতিবার ডাউনিং স্ট্রিটে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যানকক জানান, তাঁদের চিন্তা হচ্ছে মিউট্যান্ট স্ট্রেনগুলির ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন কতটা কার্যকরী হবে। ইংল্যান্ডের ডেপুটি চিফ মেডিক্যাল অফিসার জনাথন ভ্যান-ট্যাম বলেন, এটা বলা খুব কঠিন, যুক্তরাজ্যে যে টিকাকরণ চলেছে, তা নতুন স্ট্রেন রুখতে কতটা কার্যকরী হবে। তবে এটুকু আশা রাখা যায় যে, টিকার প্রভাবে রোগী হয়তো মারত্মক অসুস্থ্য হবে না বা হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে না।