প্রত্যয় ইউরোপ ডেস্ক : কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম এমন একটি সম্ভাব্য টিকার বড় ধরনের ট্রায়াল শুরু হয়েছে যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে এ নিয়ে এ ধরনের তৃতীয় ট্রায়াল হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বেলজিয়ামের কোম্পানি জ্যানসেনের বানানো এই প্রতিষেধকে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রশিক্ষিত করতে জিন পরিবর্তন করা ঠাণ্ডার একটি সাধারণ ভাইরাস ব্যবহার করা হয়েছে।
অন্য একটি ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের প্রাথমিক ফলাফলে ৯০ শতাংশ সুরক্ষা মেলার বিষয়টি জানার এক সপ্তাহের মধ্যে জ্যানসেনের এই টিকার বড় ট্রায়াল শুরু হল। মহামারীর সমাপ্তি নিশ্চিত করতে অনেক ধরনের ভ্যাকসিনেরই দরকার হয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকার সাফল্যের খবর বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষকে আনন্দিত করেছে। তবে টিকাটি এখনও সাধারণের ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হয়নি; প্রতিষেধকটি বয়স্ক মানুষদের কেমন সুরক্ষা দেবে কিংবা এর সুরক্ষা বলয় কতদিন কার্যকর থাকবে তা এখনও আমরা জানি না।
যে কারণে নতুন নতুন ভ্যাকসিনের সন্ধানে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াকে এখনও গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। নতুন কোনো টিকা আরও বেশি কার্যকর কিংবা সুনির্দিষ্ট বয়সসীমার মানুষদের উপর তুলনামূলক বেশি কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে; তাছাড়া একটি কোম্পানির পক্ষে সমগ্র গ্রহকে প্রাণঘাতী এই করোনাভাইরাসের করালগ্রাস থেকে মুক্ত করাও বেশ দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে।
“আলাদা আলাদা উৎপাদকের আলাদা আলাদা প্রতিষেধক নিয়ে আসার চেষ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি ভ্যাকসিন শেষ পর্যন্ত ঠিক কী ধরনের আচরণ করবে তা আমরা এখনও জানি না। এক উৎপাদকের কাছ থেকে ভ্যাকসিনের সরবরাহ নিরাপদ ও কার্যকর হবে ভেবে নিশ্চিত থাকতে পারি না আমরা,” বলেছেন এনআইএইচআরের সাউথহ্যাম্পটন ক্লিনিকাল রিসার্চ ফ্যাসিলিটির পরিচালক অধ্যাপক সল ফস্ট।
যুক্তরাজ্যের এই রিসার্চ ফ্যাসিলিটিই জ্যানসেনের টিকার ট্রায়াল চালাবে। ট্রায়ালের অংশ হিসেবে এর মধ্যেই যুক্তরাজ্যে ৬ হাজার লোককে বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে; পরে অন্যান্য দেশের স্বেচ্ছাসেবকদের যোগ করে এই সংখ্যা ৩০ হাজারে নিয়ে যাওয়া হবে।
এ স্বেচ্ছাসেবকদের অর্ধেককে দুই মাসের ব্যবধানে ভ্যাকসিনটির দুটি ডোজ দেওয়া হবে।
জ্যানসেন এরই মধ্যে তাদের টিকার একটি বড়সড় ট্রায়াল চালিয়েছে, যেখানে স্বেচ্ছাসেবকদেরকে ভ্যাকসিনের একটি করে ডোজ দেওয়া হয়েছে। এবারের ট্রায়ালে দুটি করে ডোজ দিয়ে এর ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও দীর্ঘমেয়াদী ও শক্তিশালী হয় কিনা, তা দেখা হবে।
ট্রায়ালের ফলাফল পেতে ৬ থেকে ৯ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার মানুষ কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিভিন্ন ট্রায়ালে অংশ নিয়েছে।
দেশটির সরকারও সম্ভাব্য ছয়টি টিকার অগ্রিম ক্রয়াদেশ দিয়ে রেখেছে, যার মধ্যে জ্যানসেনের ৩ কোটি টিকাও রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।