বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:লকডাউনের আনলক ওয়ান পর্যায়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে বাস চালানোর অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু বাসের ভাড়া বাড়াতে নারাজ। এখানেই আপত্তি ছিল কিছু বাস সংগঠনের। তাই তারা বাস নামায়নি। তাই কলকাতায় বাসের সংখ্যা সে ভাবে বাড়েনি এতদিন। আর যে সব সংগঠন বাস নামিয়েছে, সেই বাসগুলির বেশির ভাগই বেশি টাকা ভাড়া নিচ্ছে। যদিও সরকার বাস ভাড়া বাড়ানোর অনুমতি দেয়নি।
যদিও দেড় মাস আগে বাস চালনোর অনুমতি দেওয়ার সময় প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, বাস চলবে। তবে ভাড়া বাড়ানো হবে কিনা, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বাস মালিকরাই। বাড়লে যাঁরা সেই ভাড়া দিতে পারবেন, তাঁরাই বাসে উঠবেন। যাঁরা পারবেন না, তাঁরা উঠবেন না। পরে নাগরিকদের সমস্যার কথা ভেবে সরকার সিদ্ধান্ত বদল করে। জানিয়ে দেওয়া হয়, বাসের ভাড়া বাড়ানো চলবে না।
তার পর শহরে বাস চলাচল শুরু হলে দেখা যায়, রাস্তায় পর্যাপ্ত বাস নেই। ফলে অনেক বাসে স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই অতিরিক্ত যাত্রী উঠে পড়ছেন বলেও অভিযোগ উঠতে থাকে। এমনকী, সরকারের ভাড়া না বাড়ানোর সিদ্ধান্তও অধিকাংশ বাসই মানছে না। এর পরই শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, তিনি চান না বেসরকারি বাসগুলো ভাড়া বাড়াক। তবে তাদের ক্ষতির কথা ভেবে বেসরকারি বাস পিছু মাসে ১৫ হাজার টাকা করে তিনমাস ভর্তুকি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন তিনি।
কিন্তু রবিবার সরকারের ভর্তুকি দেওয়া নিয়ে বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলির মধ্যে মতভেদ প্রকাশ্যে চলে আসে। অবশ্য বেশির ভাগ মালিকই এই ভর্তুকি নিয়ে বাস চালাতে রাজি হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যে একটি বাস মালিক সংগঠন বেসুরো গাইতে শুরু করে দিয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস অ্যান্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে শনিবার বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সরকার মাসে ১৫ হাজার টাকা ভর্তুকি দেওয়ার যে ঘোষণা করেছে, তাতে তাদের লোকসান মিটবে না।
সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমান ভাড়ায় তাদের প্রতিদিন ২ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। সরকার মাসে ১৫ হাজার টাকা দিলে, প্রতিদিনের হিসেবে হয় ৫০০ টাকা। তার মানে দেড় হাজার টাকা লোকসান থেকেই যাচ্ছে। এত লোকসানে বাস চালানো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আর প্রতিদিনই নানা কারণে বাসগুলিকে পুলিশ ট্র্যাফিক আইনে ফাইন করে। সেই ফাইনের টাকা মেটাতেই তাদের ৫০০ টাকা খরচ হয়ে যাবে। তাই এই ভর্তুকির টাকায় তাদের সমস্যার কোনও সুরাহা হবে না। পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে চিঠি দিয়ে তাদের এই সমস্যার কথা জানানো হবে বলে সংগঠনটির এক কর্তা জানিয়েছেন।