করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে আসন্ন রমজানে মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা বাতিল চেয়ে ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের কাছে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশটি দেন মুহাম্মদ তাজ জামে মসজিদের খতিব ও মুহাম্মদিয়া জামিয়ার গবেষক মুফতি আবুল খায়ের মুহাম্মদ আযীযুল্লাহ। তার পক্ষে মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) ডাক ও রেজিস্ট্রি যোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবিএম গোলাম মোস্তফা তাজ নোটিশ পাঠান।
এতে বলা হয়, ‘নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে গত ৫ এপ্রিল ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিজ্ঞপ্তির ৪ ও ৮ নং শর্ত প্রত্যাহার করে নিতে হবে। শর্ত প্রত্যাহার করা না হলে এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
নোটিশে হাদিসের বই- বোখারি, মুসলিম, আবু দাউদ ও নাসায়ির রেফারেন্স দেয়া হয়।
বলা হয়, ‘রমজানে সেহরি ও ইফতার অন্যতম উপাদান। রোজা রাখার জন্য সেহরি খাওয়ার সুন্নাত। সেহরি অর্থ হলো, যা কিছু রাতের শেষভাগে খাওয়া হয়। সর্বশেষ নবি ও রসূল হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, সেহরি খাওয়াতে বরকত রয়েছে (বুখারি, ১৯২৩)।’
নোটিশে আরও বলা হয়, ‘মানুষ যতদিন পর্যন্ত সময় হওয়া মাত্রই ইফতার করবে ততদিন কল্যাণের সঙ্গে থাকবে (বুখারি,২৮৫২)।’
বুখারি ও মুসলিমের রেফারেন্স দিয়ে নোটিশে বলা হয়, ‘হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ইফতারের সময় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। আর এটা রমজানের প্রতি রাতে। কাজেই প্রত্যেক সেহরি ও ইফতারের সময় মহান আল্লাহর দরবারে রহমত চেয়ে দোয়া কামনা করতে হবে।’
‘হাদিসের এসব উদ্ধৃতি থেকে স্পষ্ট যে, জামাতের কাতারের ক্ষেত্রে মসজিদে ইফতার ও সেহরির বিষয়ে বিধি-নিষেধ আরোপ হাদিসের কিংবা শরিয়তের কোনো নির্দেশনা নেই। শরিয়ত অনুযায়ী অসুস্থ ব্যক্তিকে মসজিদে না আসার সুযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু কারও অসুস্থতার অজুহাতে জামাতের কাতারে বিধি-নিষেধ আরোপ শরিয়তে নেই। সুতরাং ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা ৪ ও ৮ শর্তসমূহ ইসলাম পরিপন্থী।’
নোটিশে আরও বলা হয়, ‘৫ এপ্রিল ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদসমূহে সর্বসাধারণের জামাতে নামাজ আদায় প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজন করা যাবে না। এই নির্দেশনা লঙ্ঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। জামাতে নামাজ আদায় করার জন্য কাতারের ক্ষেত্রে এই নির্দেশনা এবং মসজিদে ইফতার ও সেহরির বিষয়ে এ ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ শরীয়ত পরিপন্থী।’