নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশজুড়ে চলছে তীব্র গ্যাস সংকট। রাজধানীর মহাখালীতে বাসাবাড়ি, সিএনজি স্টেশন, পেট্রোল পাম্প, শিল্প-কলকারখানা সর্বত্র একই দশা। বাসাবাড়িতে সকাল ১০ টার পর থেকে দিনভর জ্বলে না চুলা। প্রচণ্ড শীতের মধ্যেই অনেক এলাকায় মধ্যরাতে হচ্ছে রান্নার কাজ। এতে গৃহবধূদের ভোগান্তির শেষ নেই।
জ্বালানি সচিব নুরুল আলম জানান, শীত মওসুমে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় অনেক স্থানে গ্যাস লাইনে ফেনা জমে যায়। এতে লাইনে গ্যাসের চাপ বাধাগ্রস্ত হয়। এ সমস্যার পাশাপাশি জাতীয় সঞ্চালন লাইনের গ্যাসের সরবরাহের পরিমাণও কমে গেছে।
গ্যাস সঙ্কটের কারণে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে গ্যাস সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। বাসাবাড়িগুলোতে গ্যাসের চুলা জ্বলে না। দিনের বেলায় গ্যাস থাকবে না—শঙ্কায় মধ্য রাতে রান্না করে রাখছেন গৃহবধূরা। সেই খাবার দিনের বেলায় গরম করে খাওয়ার উপায়ও থাকে না। এতে তাদের প্রাত্যাহিক জীবনের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে।
মহাখালী ‘চ’ ব্লকের বাসিন্দা খালিদ হাসান রাফি দৈনিক প্রত্যয়কে জানান, গত কিছুদিন যাবত এই এলাকায় গ্যাস থাকছে না। সকাল ১০ টার আগেই
গ্যাস বন্ধ হয়ে যায় এবং সন্ধ্যায় গ্যাস আবার আসে।
এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
মহাখালী ওয়্যারলেস গেইটের বাসিন্দা তামান্না আক্তার লামিয়া প্রতিবেদককে অভিযোগ করেন, জানুয়ারির ৭,৮ তারিখ পর্যন্ত দিনের বেলাতে সুন্দর গ্যাস থাকতো। এরপর থেকে সকাল আটটায় যায়, আসে তিনটার পর তাও কোনো রকম। আবার ছয়টায় যায়। আসে রাত দশটায়। চরম ভোগান্তির মধ্যে যাচ্ছে।
আবাসিকে গ্যাস সংকটের কথা স্বীকার করেছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, শীতে সঞ্চালন লাইনে সমস্যার কারণেই এই সংকট। চলতি মাসের ১৯ তারিখের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
মহাখালীর রয়েল ফিলিং স্টেশনে কথা বলে জানা যায়, সিএনজি গ্যাস রূপান্তর করার জন্য ২০০ বার চাপের গ্যাসের প্রয়োজন হলেও গত তিন দিন ধরে এসব ফিলিং স্টেশনে ১৩০ থেকে ১৪০ বার চাপের গ্যাস আসছে। ফলে নানা উপায়ে গ্যাসের চাপ বাড়াতে গিয়ে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গ্যাসের জন্য অপেক্ষমান যানবাহনের লাইনও দীর্ঘ হচ্ছে।
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হারুনুর রশীদ মোল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, এ সমস্যা সাময়িক। আগামী ১৮ বা ১৯ তারিখের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। ১৯ তারিখ থেকে গ্যাস সরবরাহ বাড়বে। তখন বর্তমানের মতো এত সমস্যা থাকবে না।