বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এবং ইউএস-বাংলাদেশ গ্লোবাল চেম্বার অব কমার্সের যৌথ উদ্যোগে সোমবার (৩০ মার্চ) ‘বাংলাদেশ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সুযোগ’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
নিউইয়র্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা এবং ইউএস-বাংলাদেশ গ্লোবাল চেম্বার অব কমার্সের চেয়ারম্যান আজিজ আহমাদের যৌথ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রায় শতাধিক মার্কিন ব্যবসায়ী ও সম্ভাব্য বিনিয়োগকারী অংশগ্রহণ করেন। ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় সহায়তা করেন বিশিষ্ট মার্কিন ব্যবসায়ী এবং নিউইয়র্ক টাইমসের সাবেক ম্যানেজিং ডিরেক্টর মার্ক জোলার।
এ সেমিনারে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) প্রেসিডেন্ট রুবানা হক, ইউসেপ-বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সাবেক মুখ্য সচিব মো. আব্দুল করিম, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবির এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবির প্যানেলিস্ট হিসেবে বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধি হিসেবে মিনিস্টার এবং ডেপুটি চিফ অব মিশন ফেরদৌসি শাহরিয়ার অংশ নেন।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিনিধি জেনিফার লারসেন, বিশিষ্ট মার্কিন ব্যবসায়ী এবং রকফেলার ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি স্টিভ রকফেলার, স্ট্রাটেজিক এক্সিকিউটিভ সার্চ গ্রুপের চেয়ারম্যান ক্রিস ট্রব, ওপেনএক্সোর চেয়ারম্যান সেলিম ইসমাইল, ইউএস-চায়না পার্টনার্সের চেয়ারম্যান সাভিও চ্যান, পিএসইজি এনার্জি রিসোর্সেসের প্রেসিডেন্ট শহিদ মালিক, সাসটেইনেবেলিটি এজ সলুশনসের প্রতিষ্ঠাতা জেবিন কাদির, নিউইয়র্ক ও নিউজার্সি মাইনরিটি ডেভেলপমেন্ট সাপ্লাই কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী টেরান্স ক্লার্ক, গ্লোবাল বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্ট এক্সের ভেঞ্চার ক্যাটালিস্ট ডেভিড ট্রব, গ্লোবাল ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজি সেন্টারের চেয়ারম্যান মাইলস এম ম্যাথিউস প্রমুখ সেমিনারে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন। সব বক্তারা বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের কথা উল্লেখ করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশকে উষ্ণ অভিনন্দন জানান।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের একটি চিত্র তুলে ধরে সম্ভাব্য মার্কিন বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি চলতি বছর বাংলাদেশে আয়োজিতব্য বিডার বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলনে (Investment Summit) যোগদানের জন্য সবাইকে আমন্ত্রণ জানান। জাপানের সুমিটোমোর বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের উদাহরণ টেনে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বাংলাদেশের মার্কিন বিনিয়োগকারীদের অনুরূপ বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জন্য কৃষি, আইসিটি ও অটোমোবাইল সেক্টরে বাংলাদেশে বিনিয়োগ লাভজনক উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধি ফেরদৌসি শাহরিয়ার আগামী ৬-৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-ইউএস বিজনেস কাউন্সিলের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট রুবানা হক বলেন, বিশ্বের শীর্ষ ১০টি গ্রিন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির নয়টিই বাংলাদেশে অবস্থিত, তাই বাংলাদেশের তৈরি পোশাক গ্রিন প্রাইসের দাবিদার। এমসিসিআই প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবির টেকসই, উদ্ভাবনী বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
বেসিসের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবির এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স), রোবোটিকসসহ তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপক সম্ভাবনার চিত্র তুলে ধরেন।
এ অনুষ্ঠানটি কনস্যুলেটের ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।