স্পোর্টস ডেস্ক: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আগের মতো নিয়মিত বোলিং করলে কোনো কথাই ছিলনা। এক সময় জাতীয় দলের হয়ে টেস্টের পাশাপাশি ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নিয়মিত বোলিং করতেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু গত এক বছরের বেশি সময় ধরে জাতীয় দলই শুধু নয়, ঢাকা মোহামেডানের হয়ে প্রিমিয়ার লিগেও সেভাবে বল করতে দেখা যায়নি তাকে।
জাতীয় দলের পক্ষে শেষ ১০ ওভারের বোলিং কোটা পূরণ করেছিলেন ২ বছরের বেশি সময় আগে, ২০২১ সালের ২০ জুলাই হারারে স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সে ম্যাচে ১০ ওভার বল করে ৪৫ রানে ২ উইকেট দখল করেন মাহমুদউল্লাহ।
তারপর ২২ ওয়ানডেতে খেলে ১২টিতে বল হাতে নেননি মাহমুদউল্লাহ। আর কোনো খেলায় ৪ ওভারের (২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেস্বর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-০-২১-০) বেশি বোলিংই করেননি। তাই তাকে এখন আর অফস্পিনার আর ধরা হয় না।
কিন্তু আজ মাহমুদউল্লাহকে দলে নেওয়া হলো আরেক অফস্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মেহেদিকে বাদ দিয়ে। যে মেহেদি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঠিক আগের ম্যাচেই পেয়েছেন ৪ উইকেট। মাহমুদউল্লাহকে খেলানোও হলো শেখ মেহেদির পজিশন, মানে আট নম্বরে। ভাবা যায়!
মানা গেল তার বয়স হয়েছে। স্বর্ণ সময়টা পিছনে ফেলে এসেছেন। তারপরও ভুলে গেলে চলবে না মাহমুদউল্লাহর বিশ্বকাপে (২০১৫ সালের ৯ মার্চ অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৩ আর ২০১৫ সালের ১৩ মার্চ হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের সাথে ১২৮*) একজোড়া সেঞ্চুরি আছে। বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে সাকিব ছাড়া আর কারোরই যে কৃতিত্ব নেই।
টপ অর্ডারে তানজিদ তামিমের ব্যাটে একদমই রান নেই। তিন খেলায় (৫+১+ ১৬) মোটে ২২। তাওহিদ হৃদয়ের অবস্থাও বিশেষ সুবিধার না। ইংল্যান্ডের সাথে ৩৯ তাও পাতে আনার মত। আজ করেছেন মোটে ১৩।
সেখানে মাহমুদউল্লাহকে এত নিচে খেলানোর কোনো যুক্তি খুঁজে পাওয়া গেল না। ৮ নম্বরে খেলা মানে সঙ্গী হিসেবে কোনো স্বীকৃত ব্যাটারকে পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। তবু আজ তাওহিদ হৃদয় ছিলেন। কিন্তু রিয়াদ ক্রিজে যাবার ঠিক ১১ বল পর হৃদয়ও ফিরে গেলেন। শেষ বল পর্যন্ত উইকেটে থাকা এ অভিজ্ঞ যোদ্ধা ব্যাট করলেন তিন পেসার তাসকিন, মোস্তাফিজ আর শরিফুলকে নিয়ে।
কিছু ডট বল দিয়েছেন। আর অপর প্রান্তে বোলার ছিলেন বলে কিছু ডেলিভারিতে সিঙ্গেলস নেননি। তারপরও শেষ পর্যন্ত সমান দুটি করে চার ও ছক্কা হা^কিয়ে ৪৯ বলে ৪১ রানে অপরাজিত থেকে মাহমুদউল্লাহ যেন জানান দিলেন-একদম ফুরিয়ে যাইনি আমি।
প্রশ্ন হলো, এই সত্যটা কি টিম ম্যানেজমেন্ট অনুধাবন করে? বাংলাদেশের থিংক ট্যাংকের কি ধারণা, মাহমুদউল্লাহর চেয়ে তানজিদ তামিম ও তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাট বেশি বিশ্বস্ত? অধিক কার্যকর?
কোনো ক্রিকেটীয় যুক্তিতেই এটা মানা যায় না। ওই যে শুরুতে বলা হয়েছে, মাহমুদউল্লাহ যদি নিয়মিত অফস্পিন করতেন, তাহলে মানা যেতো। কিন্তু এখন যেহেতু মাহমুদউল্লাহর পরিচয় শুধুই ব্যাটার। তাহলে তাকে এত নিচে খেলানোর মানে কী? মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কিনা হলেন শেখ মেহেদির বিকল্প, ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে এসে এ কেমন দৃষ্টিকটু ব্যাপার দেখতে হলো!