ফরিদপুর সংবাদদাতা: ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেএম শাহেদ আলী ওরফে সাহেব ফকির হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি (রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় মুক্ত) আসলাম ফকিরকে (৫০) অন্য একটি খুনের মামলায় গ্রেফতার করেছে র্যাব। আসলাম উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি।
র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্পের অধিনায়ক দেবাশীষ কর্মকার জানান, ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে গ্রামবাসীর বিরোধে খুন হন শহিদুল ইসলাম শহিদ নামের একজন। এ ঘটনার জেরে নিহতের চাচা বাদী হয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা আসলাম ফকিরকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২১ এপ্রিল রাতে লক্ষ্মীপুর গ্রামের লতিফ মাতুব্বরের ঘরের টিনের চালের পানি পড়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরই জেরে আসলাম ফকির ও উসমান ফকিরের নেতৃত্বে এবং হুকুমে আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় রফিক মাতুব্বরের ওপর। পরে শহিদ মাতুব্বর এগিয়ে এলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার ঘটনায় আসলাম ফকিরকে প্রধান আসামিসহ ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনের নামে একটি হত্যা মামলা করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে আসলাম ফকির পলাতক ছিল। র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্পের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যশোর জেলার চৌগাছা থানার কলেজ রোড এলাকার একটি বাসায় রোববার ভোরে তাকে আটক করে।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ভাঙ্গার মানিকদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেএম শাহেদ আলী ওরফে সাহেব ফকির হত্যা মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে আসলাম ফকিরকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন ফরিদপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর আসলাম ফকিরের ফাঁসি কার্যকরের দিন ধার্য করা হয়। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে চিঠি দিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়। পরিবারের সবাইকে আসলাম ফকিরের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু ফাঁসির সবকিছু ঠিক থাকলেও ফাঁসির একদিন আগে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে আসলাম ফকির। ফলে তার ফাঁসি স্থগিত হয়ে যায়। ওইদিনই দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন তিনি। এরপর সাধারণ ক্ষমায় তার ফাঁসির দণ্ড মওকুফ করে ১৪ বছরের সাজা দেওয়া হয়। কারাগারে ভালো আচরণের কারণে সাজা কমিয়ে দিলে ১৩ বছর ২ দিন কারাভোগের পর ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট গাজীপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে মুক্তি পান আসলাম ফকির। মুক্তি পেয়ে ফের এলাকায় রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি।