স্পোর্টস ডেস্ক: চোখের জলে বার্সেলোনা ছেড়ে প্যারিসে পা রেখেছিলেন আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি। তবে প্যারিসের দিনগুলো ভালো যায়নি তার। ফুটবল মাঠে নিজের প্রভাব বজায় রাখলেও মাঠের বাইরে সমর্থকদের কাছ থেকে ভাল কিছু পাওয়া হয়নি এই খুদে জাদুকরের। প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনের হয়ে ৭৫ ম্যাচে মেসি করেছেন ৩২ গোল আর করিয়েছেন ৩৫ টি।
তবে বড় কথা, পিএসজিকে আরাধ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানো হয়নি তার। যদিও আর্জেন্টিনার জার্সিতে জিতেছেন বিশ্বকাপ, তাও ফ্রান্সকে হারিয়ে। ফলে দর্শকদের কাছ থেকে আরও দূরে সরে যেতে থাকেন মেসি।
সবমিলিয়ে ফ্রান্সে মেসির সময়টা ভাল যায়নি। মেসি নিজেই বলেছেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে পিএসজিতে খুবই অসন্তুষ্ট ছিলাম, উপভোগ করিনি। শুধু বিশ্বকাপ জেতার মাসটা অসাধারণ কেটেছে, এ ছাড়া বাকি সময়টা আমার জন্য কঠিন ছিল।’
মেসির এই মন্তব্যে ফ্রান্সের কট্টর সমর্থকরা অসন্তুষ্ট হলেও তাকে সমর্থন জানিয়েছেন ফ্রান্সেরই আরেক কিংবদন্তি ডেভিড ত্রেজেগে।
ফ্রান্সের জার্সিতে ৭১ ম্যাচ খেলেছেন ত্রেজেগে। জিতেছেন ১৯৯৮ এর বিশ্বকাপ। তার গোলেই ২০০০ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করেছিলো ফরাসিরা। কিংবদন্তি এই তারকা মনে করেন, ফ্রান্স মেসিকে তার প্রাপ্য সম্মানই দিতে পারেনি।
ক্রীড়াবিষয়ক গণমাধ্যম ইএসপিএন-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা বলেন, ‘ফ্রান্স কখনো প্রতিভাবানদের উৎসাহ দেয়নি। মেসি ফ্রান্সের ফুটবলে আর না থাকায় আমি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। মেসি এমন একজন মানুষ, যে আপনাকে সব সময় সেরাটা দেবে। সেটা ফুটবল, ভাবমূর্তি, সম্মান—সব ক্ষেত্রেই। ফ্রান্স কখনোই এমন সমৃদ্ধ কোনো ফুটবলার পায়নি।’
মেসিকে সমর্থন জানিয়েছেন পিএসজির আরেক তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। সময়ের অন্যতম সেরা এই তারকার সাথে সময়টা ভালোই যাচ্ছিলো মেসির। বন্ধু মেসিকে নিয়ে খোলামেলা আলোচনায় এমবাপ্পে জানান, ‘আমি বুঝতে পারছি না, মেসি পিএসজি ছাড়ায় কেন অনেকেই খুশি। মেসি সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার। সে পিএসজি ছাড়ছে, এটা কখনোই ভালো খবর হতে পারে না ক্লাবের জন্য। আমি তো মনে করি, মেসি কখনোই পিএসজিতে তার প্রাপ্য সম্মান পায়নি।’
এমবাপ্পের এমন মন্তব্যেও সায় দিয়েছেন ডেভিড ত্রেজেগে। ফরাসি এই তারকার মন্তব্যকেই মেসির জন্য বড় প্রাপ্তি বলে মানছে তিনি। ত্রেজেগের মতে, ‘মেসি অসাধারণ ছিল। দিন শেষে পরিসংখ্যানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়, দুই বছরে সে দেখিয়েছে, কে প্যারিসের সেরা ফুটবলার। এমবাপ্পের মতামতটা যথার্থ সময়ে এসেছে। সে ফ্রান্স ফুটবলের মুখ, সেটা ঘরোয়া কিংবা আন্তর্জাতিক হোক। সে বলেছিল, ফ্রান্স ভাবমূর্তি হারিয়েছে ফ্রেঞ্চ ফুটবলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারকে হারিয়ে। এটাই স্বীকৃতি।’