আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের অতর্কিত হামলার পর পরমাণু প্রকল্প ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাওয়া অর্থহীন বলে মনে করছে ইরান। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইরানের আধা সরকারি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের অতি সাম্প্রতিক হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি দায়ীও করেছেন তিনি।
তাসনিম নিউজকে ইসমাইল বাকাই বলেন, “ওয়াশিংটনের অনুমতি না পেলে ইসরায়েল ইরানে হামলা করার সাহস পেতো না। আমরা মনে করি, যুক্তরাষ্ট্র এখন যে অবস্থানে আছে— তাতে তাদের সঙ্গে (পরমাণু প্রকল্প ইস্যুতে) আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়া অর্থহীন।”
“কারণ আপনি একদিকে আলোচনার আহ্বান এবং অন্যদিক জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠীকে হামলা করার অনুমতি দিতে পারেন না।”
গত ১৩ জুন শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ অন্তত ৮টি শহরে বড় ধরনের বিমান হামলা করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী (আইএএফ)। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৭৮ জন এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩০০ জন। এছাড়া ইরানের সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরিসহ সামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও নিহত হয়েছেন।
ইরানের পরমাণু প্রকল্প ও সামরিক বাহিনীর স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে এ হামালা চালানো হয়েছিল। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হামলায় ইরানের অন্তত ১০০টি স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনী এ সামরিক অভিযানের নাম দিয়েছে ‘দ্য রাইজিং লায়ন’।
অতর্কিত হামলার পর শুক্রবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ সেনা অভিযান শুরু করে ইরান। এতে একজন নিহত এবং ৪১ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শুক্রবার ভোরে ইরানে হামলা শুরুর কিছুক্ষণ পর এক ভিডিওবার্তায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যতদিন ইরানের পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্রের হুমকি থাকবে, ততদিন ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ চলবে।
জবাবে শনিবার সকালে পাল্টা এক বিৃবতিতে ইরানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে তাদের ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’-ও অনির্দিষ্টকালের জন্য চলমান থাকবে।
ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে গত মে মাস থেকে ওমানে বৈঠক শুরু হয়েছে ইরান ও মার্কিন সরকারের প্রতিনিধিদের মধ্যে। ইতো মধ্যে ৬ রাউন্ড সংলাপও শেষ হয়েছে। কিছু দিন আগে ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে ওয়াশিংটন একটি প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান।
মার্কি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের কিছুদিন পরেই ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
সূত্র : আলজাজিরা