রাঙামাটি প্রতিনিধি: রাঙামাটির পলওয়েল ন্যাচার পার্কে তৈরি করা হয়েছে দেশের প্রথম “লাভ পয়েন্ট” পর্যাটন বিশেষ আকর্ষন। দক্ষিন এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদে বেড়াতে গিয়ে হঠাৎ ঝড়ে কবলে আমেরিকা প্রবাসী নিহত আলাউদ্দিন-নব বিবাহিত লিমা দম্পতির স্মরণে তৈরি করা হয়েছে এই লাভ পয়েন্ট। ভালোবাসার নিদর্শন স্বরুপ বন্ধন অটুট রাখতে সেখানে বেড়াতে যাওয়া দম্পতি আর প্রেমিকযুগল তালা মেরে চাবি হ্রদে ফেলে দেন।
২০১৪ সালের ১৯শে মার্চ আমেরিকা প্রবাসী আলাউদ্দিন পাটোয়ারী নববধূ আইরিন সুলতানা লিমাকে নিয়ে রাঙামাটি পর্যাটন হলিডে থেকে হ্রদে ইঞ্জিন বোট নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন। দুপুরে তারা ইঞ্জিনচালিত বোট ভাড়া নিয়ে কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহারে গিয়ে হঠাৎ ঝড়ে কবলে পড়ে উল্টে যায় তাদের বোট।
কাল বৈশাখী ঝড় থামার পর কোথাও আলাউদ্দিন-লিমা দম্পত্তিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রায় দুইদিন পর তাদের মৃতদেহ পলওয়েল কাছে ভেসে উঠে দুই দম্পতির লাশ। সেই সময় নব দম্পতি একে অপরকে জড়িয়ে ধরে, কারো কাপড়ও শরীর থেকে সরে যায়নি। সেই দৃশ্য হাজার হাজার দর্শনার্থী দেখেছেন । মৃত্যুও এই দম্পতিকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি।
আলাউদ্দিন-লিমা দম্পতির স্মৃতি ধরে রাখতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিকল্পনায় তৈরি করা হয় লাভ পয়েন্ট। ২০১৮ সালের ২৯শে নভেম্বর উদ্বোধন করা হয় তা। এই লাভ পয়েন্টে প্রেমিকযুগল এবং দম্পতিরা তাদের ভালোবাসার বন্ধন আজীবন অটুট রাখতে তালা মেরে হ্রদে চাবি ছুঁড়ে ফেলেন।
ভালাবাসার উপলব্ধি প্রকাশের জন্যই এমন স্থাপনা বলে জানালো লাভ পয়েন্ট কর্তৃপক্ষ। দৃষ্টিনন্দন এই স্থাপনা আরো আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা চলছে।
রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বলেন, পলওয়েল পার্ককে আমরা যথাসাধ্য পর্যটকবান্ধব করার চেষ্টা করেছি। পর্যটকরা যেন রাঙামাটিতে এসে হতাশ না হন এবং নিজেদের কনফিডেন্স ধরে রাখতে পারেন আমরা সেইসব চেষ্টাই করেছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের রুচির পরিবর্তন, সৌন্দর্য্য এর পরিবতন হচ্ছে। আমাদের সার্ভিসেও আমরা উপযোগী করার চেষ্টা করছি। আমাদের কটেজসহ পার্কের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধুনিকায়ন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও নতুন কিছু সংযোজনের ভাবনা চিন্তা রয়েছে।