চৌধুরী হারুনুর রশীদ, রাঙামাটি: সরকারি সেবা প্রদানে শুদ্ধাচার চর্চা ও কর্মদক্ষতার ওপর ভিত্তি করে স্বীকৃতিস্বরূপ বছর অনুযায়ী শুদ্ধাচার পুরষ্কার দিয়ে থাকে জেলাপ্রশাসন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাঙামাটিতে শুদ্ধাচার পুরষ্কার পেয়েছেন জেলা প্রশাসনের ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী। জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, সততা, কর্তব্যজ্ঞান, দায়িত্বশীলতা, কর্মদক্ষতা ও জনসাধারণকে সেবা প্রদানসহ অন্যান্য মানদ-ের ওপর ভিত্তি করেই দেয়া হয়ে থাকে শুদ্ধাচার পুরষ্কার। পুরষ্কার ক্রেস্ট, সনদপত্র ও এক ব্যাসিক সম-পরিমাণ নগদ অর্থ পাবেন।
রোববার (২৫ জুন) দুপুরে রাঙামাটি জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বছরব্যাপী শুদ্ধাচারে পুরষ্কারে মনোনীতদের মাঝে ক্রেস্ট, সনদপত্র তুলে দেন রাঙামাটির জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এবছর শুদ্ধাচারে পুরষ্কৃতরা হলেন- জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা (গ্রেড ৩-৯) হিসাবে অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম ও উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা (গ্রেড ৩-৯) হিসাবে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা বিনতে আমিন।
জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কর্মচারী (গ্রেড ১০-১৬) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সার্টিফিকেট সহকারী দীপেশ চাকমা ও জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কর্মচারী (গ্রেড ১৭-২০) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নৈশপ্রহরী গৌরাঙ্গ দে। উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কর্মচারী হলেন (গ্রেড ১০-১৬) বরকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক টিটু ত্রিপুরা ও উপজেলা পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কর্মচারী (গ্রেড ১৭-২০) লংগদু উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের জারিকারক মো. মাজেদ আলী ভূঁইয়া।
জেলা প্রশাসনের এবারের শুদ্ধাচারে নারী কর্মকর্তা হিসাবে একমাত্র শুদ্ধাচার পুরষ্কারে মনোনীত হয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজমা বিনতে আমিন। শুদ্ধাচারে পুরষ্কৃত হয়ে তাঁর অনুভূতি জানতে চাইলে ইউএনও নাজমা বলেন, ‘যে কোনো পুরষ্কারই অনুপ্রেরণা যোগায়। আমার কাজের জীবনের শুরু থেকেই আমি আন্তরিকভাবে কাজ করার চেষ্টা করে আসছি। অনেক ক্যাটাগরির (মানদ-) ওপর ভিত্তি করেই শুদ্ধাচার পুরষ্কার দেয়া হয়। উপজেলা পর্যায় থেকে জেলা পর্যায়ে মনোনীতদের বাছাই করা হয়। আমি শুদ্ধাচার পেয়ে অনেক আনন্দিত হয়েছি। আমি মনে করি আমার কাজের দায়িত্ব আরও কয়েকগুন বেড়ে গিয়েছে।’
জানতে চাইলে রাঙামাটি জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান শুদ্ধাচার পুরষ্কৃতদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘উপজেলা ও জেলা পর্যায় মিলে ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এবছর শুদ্ধাচার পুরষ্কৃত করা হয়েছে। পুরষ্কৃতরা সকলেই ক্রেস্ট, সনদপত্রের পাশাপাশি এক বেসিক সম-পরিমাণ নগদ অর্থ সম্মানি পাবেন।’ মনোনীতদের নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলাপ্রশাসক বলেন, ‘শুদ্ধাচারে মনোনীতদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নীতিমালা রয়েছে। প্রথমে উপজেলা থেকে জেলা পর্যায়ে তালিকা আসে, এরপর জেলা পর্যায়ে কমিটির মাধ্যমে বাছাই করা হয়ে থাকে। মনোনীতরা সকলেই নিজের যোগ্যতা, দক্ষতা ও নৈতিক মানদ-ের ওপর ভিত্তি করেই নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগেও যারা নির্বাচিত হয়েছেন সকলেই মানদ-ের ভিত্তিতে শুদ্ধাচার পুরষ্কার পেয়েছেন।’
বিশিষ্টজনরা বলছেন, পুরষ্কার দায়িত্বশীলদের কাজের প্রতি মনোনিবেশে আরও গুরুত্ব বাড়িয়ে দেয়। জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও জনগণের সেবায় আরও দৃঢ় ভূমিকা রাখতে এই শুদ্ধাচার পুরষ্কার অবশ্যই আন্তরিক প্রেরণা যোগাবে।