রাঙামাটি প্রতিনিধি : রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদের সম্মানিত মহিলা ভাইস চেয়রাম্যান কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগকে জড়িয়ে মিথ্যা, বানোয়াট, ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্যের প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলন। লিখিত বক্তব্য বলেন, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্নকারী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলামকে ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করে উক্ত শূণ্যপদে পূর্ন নির্বাচন দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছে।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কান্তি চাকমা. এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন,সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান সহসম্পাদক আনোয়ার হোসেন কায়সার,মেঝবাহ উদ্দীন সাবেক প্রচার সম্পাদক ও মোসলেহ উদ্দীন সহ-সম্পাদক ।
ইতিমধ্যে অবগত হয়েছেন যে, বিগত ১৯/০৮/২০২০ ইং তারিখ আলম ডক ইয়ার্ড এলাকায় ভাড়াটিয়া সম্মানিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলামের বাসায় রাত প্রায় ১২.৩০ ঘটিকায় কিছু অনতিপ্রেত ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।উক্ত কথিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্মানিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিগত ২৯/০৮/২০২০ ইং সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন এবং লিখিত বক্তব্য পেশ করেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিকে জড়িয়ে যে মিথ্যা তথ্য প্রদান করা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাকে সহ ছাত্রলীগকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য করা হয়েছে মর্মে আমাদের বিশ^াস। সংবাদ সম্মেলনের সম্পূর্ণ ভিডিও ফুটেজ ছাত্র লীগ রাঙামাটি জেলা শাখার দৃষ্টিগোচরে এসেছে এবং উক্ত সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য হস্তগত হয়েছে।
যদিও তিনি সংবাদ সম্মেলনে বর্ণিত বিষয়ে লিখিতভাবে তিনি রাঙামাটি জেলা শাখার নিকট অভিযোগ করেন নি তথাপি একটি দায়িত্বশীল ছাত্র সংগঠনের নেতা কর্মীদের বিষয়ে যেহেতু অভিযোগ আনয়ন করা হয়েছে সেহেতু অত্র সংগঠনের পক্ষ হতে কথিত ১৯/০৮/২০২০ ইং তারিখে ঘটনার বিষয়ে তাৎক্ষণিক অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আরো বলেন.প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে সম্মানিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম একজন স্বামী পরিত্যক্ত হন। তিনি আলম ডক ইয়ার্ড এলাকায় একজন ভাড়াটিয়া। পক্ষান্তরে তিনি নিজেকে বাড়ির মালিক হিসেবে দাবী করেন। যা সবৈব মিথ্যা, তিনি আলম ডক ইয়ার্ড এলাকায় বাসা ভাড়া নেবার পর বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য নন্দিত। যার কারণে এলাকাবাসী সংক্ষুব্ধ।
নাসরিন ইসলাম একজন জনপ্রতিনিধি। তার নিজস্ব দাপ্তরিক কার্যালয় এবং অফিস কর্ম সময় রয়েছে। এমতাবস্থায় রাত্রি বেলায় নিজ দাপ্তরিক কার্যালয় ও দাপ্তরিক কর্ম সময় ব্যতিরেখে নিজ বাস ভবনে উনার কথিত মতে জনাব নুরুল আলম (নৈতিক স্খলনজনিত কারণে ছাত্রলীগ হতে বহিস্কৃত) এর সাথে টিউবওয়েল বরাদ্দের মতো জরুরী কর্ম সম্পাদনের মিটিং কোন নৈতিক ও যৌক্তিক মানদন্ডে গ্রহণযোগ্য হতে পারে তা আমাদের বোধগম্য নয়।
আমাদের প্রশ্ন উক্ত জনাব নুরুল আলম রাঙামাটি সদর উপজেলার কোন ইউনিয়নের প্রতিনিধিত্ব করেন? উক্ত নাসরিন ইসলাম কি পৌর এলাকায় টিউবওয়েল বরাদ্দ দেয়ার ক্ষমতা রাখেন কিনা?
জেলা ছাত্রলীগ অনুসন্ধানে জানতে পারেন রাঙামাটি সদর উপজেলার সম্মানীত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে এলাকার সামজিক পরিবেশ কলুষিত করে তোলায় এলাকাবাসী ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯/০৮/২০২০ ইং তারিখ আনুমানিক রাত ১২.৩০ ঘটিকায় সময় আলম ডক ইয়ার্ড এলাকায় নাসরিন ইসলামের বাসায় নুর আলম প্রবেশ করার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে স্থানীয় এলাকাবাসী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের অবহিত করলে কোতয়ালী থানা পুলিশের সহযোগীতা নিয়ে নুর আলমকে নাসরিন ইসলামের বাসা হতে উদ্ধার করে জনরোষ থেকে রক্ষায় কোতয়ালী থানার এসআই ওসমান তাকে নিজ হেফাজতে নিয়ে নেয়। আমরা ইতিমধ্যে আরও জানতে পেরেছি সদর উপজেলা পরিষদের সম্মানিত ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম রাঙামাটি সদর উপজেলা কৃষক লীগের সাথে জড়িত ছিলেন এবং বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন। পক্ষান্তরে নিজেকে সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা হিসেবে প্রেস ব্রিফিং-এ দাবী করেন যা সত্য নয়।
আলোচিত এই বিষয় সমূহের যাবতীয় ঘটনাবলী নেহায়েত একটি এলাকার সামাজিক পরিবেশ বিনষ্টকারী একটি ঘটনা মাত্র। আপনারা অবগত আছেন তিনি ছাত্র জীবনে রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ শাখার ছাত্রদলের সহছাত্রী বিষয়ক সম্পাদিকা হিসাবে নেতৃত্ব ছিলেন এবং জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) এর একজন সক্রিয় কর্মী। তিনি স্বাধীনতা বিরোধী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বিদ্বেষী ধ্যান ধারণা অন্তরে লালন করে ক্ষমতা লিপ্সা নিয়ে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশে প্রচেষ্টা লিপ্ত আছেন যা তার কর্মকান্ডে প্রতিফলিত হচ্ছে। সত্য কখনো গোপন থাকে না। কথিত ঘটনার তারিখে নাসরিন ইসলামের উপর দা, ছুড়ি, রড দিয়ে কোন হামলা কিংবা উনার নাবালিকা সন্তানকে নির্যাতন করে কাপড় ছেঁড়ার মতো কোন ঘটনা ঘটেছে কিনা আপনার যাচাই করবেন। আমাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এ ধরণের ঘটনার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে প্রমাণ সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার আশ^াস প্রদান করছি।
আমরা নাসরিন ইসলামের ব্যক্তিগত বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে নীতিগতভাবে অপারগ তবে আপনারা সমাজের তৃতীয় চক্ষু হিসেবে অবশ্যই যাচাই করবেন এই আশা রাখি।অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় নাসরিন ইসলাম তাঁর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথিত নাটকীয় ঘটনার বিষয়ে আলোকপাত না করে কে বা কারো প্ররোচনায় ও আঙ্গুলীর নিদের্শে অনেকের ব্যক্তিগত জীবনে কাহিনীর অবতারণা করেছেন এবং সরাসরি রাঙামাটি জেলা শাখার ছাত্রলীগসহ অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগের কুৎসা রটনা করেছেন। যা ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিত মর্মে প্রতীয়মান হয়। তাই জেলা ছাত্রলীগের নিম্মে প্রশ্ন করেন!
ক্স নাসরিন ইসলাম কি আলম ডক ইয়ার্ড এলাকার ভাড়াটিয়া নাকি বাড়িওয়ালা?
ক্স তিনি কি মেজবাহ উদ্দিনের নিকট ভাড়া পাওনা আছেন কিনা?
ক্স উনার ল্যাপটপ, মোবাইল ও নগদ টাকা চুরির বিষয়ে কেন আইন আদালতের আশ্রয় নিলেন না?
উনার কথিত মতে হাতুড়ি দিয়ে তালা ভাঙ্গা ইত্যাদি ঘটনার কোন তারিখ ও সময় উল্লেখ করেন নি কেন?
লিখিত বক্তব্য বলেন- দীর্ঘদিন যাবৎ তাকে নির্যাতনের অভিযোগ করলেও তিনি আইনের আশ্রয় বা প্রশাসনকে অবহিত করেন নি কেন? তাকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করণেও তিনি হাসপাতালে ভর্তি হলেন না কেন? তার বাসা থেকে বিভিন্ন জিনিষপত্র চুরি হওয়ার যে তথ্য সে দিয়েছে তার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো তিনি থানা পুলিশকে কেন দিলেন না? ইতিমধ্যে তার বাসায় এহেন অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়টি অবহিত হওয়ায় তাকে বাসা ছেড়ে দিতে বলেন বাসার মালিক মৃত নুরুল হুদার স্ত্রী। কিন্তু উক্ত ভদ্র মহিলাকেও নানা ধরণের হুমকি প্রদান করে বাসাটি দখল করে রেখেছে ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম। এছাড়াও ঘটনা পরদিন থেকে নিজের মুঠোফোন নাম্বার ব্যবহার করে নাসরিন ইসলাম নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতা কর্মী ও তাদের পরিবারকে হুমকি ধামকি প্রদান করে আসছে। যাহার অডিও ভয়েস রেকর্ডও সংরক্ষিত আছে। গত ২৯/০৮/২০২০ তারিখে সংবাদ সম্মেলনে নাসরিন ইসলাম বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে ঢালাওভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন উল্লেখ করে যে বক্তব্য দিয়েছেন আমরা রাঙ্গামাটি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ছাত্রলীগকে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে গণমাধ্যমে যে সকল মিথ্যা তথ্য নাসরিন ইসলাম দিয়েছেন সেটি তথ্য প্রযুক্তির আইনেরও সু-স্পষ্ট লংঘন। গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে মানহানিকর মিথ্যা তথ্য প্রদান করায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে বলে আমরা মনে করছি।