বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সুযোগসন্ধানী-অনুপ্রবেশকারী, মাদক ব্যবসায়ী, নিরক্ষর, রাজনীতিতে অপরিচিত বর্তমান সভাপতির আত্মীয় স্বজন এমন ব্যক্তিদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ত্যাগী নেতা-কর্মীদের ব্যানারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। প্রতিবাদ সভায় ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিতর্কিত কমিটি বাতিল করে ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে নতুন করে উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়।
সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর রাণীশংকৈল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় অধ্যাপক সইদুল হক সভাপতি ও তাজউদ্দীন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে নির্বাচিত নেতৃত্ব ঘোষণা দেন জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি মু. সাদেক কুরাইশী। কমিটি ঘোষণার ১৫ মাস পর চলতি বছরের ২২ মে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে জেলা আওয়ামী লীগ।
ওই কমিটি ঘোষণার কিছুদিন পূর্বে দলের ত্যাগী ও জ্যেষ্ঠ নেতা–কর্মীদের বাইরে রেখে বিতর্কিতদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ এনে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
এদিকে নবনির্বাচিত নেতারা সেপ্টেম্বরে গোপনে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে অনুমোদনের জন্য জেলা কমিটির কাছে পাঠায় ঘোষিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এদিকে গত ২২ মে তা অনুমোদন দেয় জেলা কমিটি। অনুমোদনকৃত কমিটিতে দেখা যায় ত্যাগী ও জ্যেষ্ঠ নেতা–কর্মীদের সেখানে রাখা হয়নি। এতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা পৌর শহরের চৌরাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেন। সড়ক অবরোধ করায় পুলিশের সাথে বিক্ষুদ্ধদের হট্রগোলে সৃষ্টি হয়। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান শাহারিয়ার আযম মুন্নার হস্তক্ষেপে পুলিশ ও নেতাকর্মিদের হট্রগোল থেমে যায় এবং পুলিশের কাছে আধা ঘন্টা সময় নিয়ে তারা প্রতিবাদ কর্মসুচি সমাপ্ত করেন।
উপজেলা আ’লীগের সাবেক যুগ্ন সম্পাদক আনিসুর রহমান বাকীর সভাপতিত্বে সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি সফিকুল আলম, সাবেক ভিপি রফিউল ইসলাম, সাবেক মেয়র আলমগীর সরকার, উপজেলা যুবলীগের সম্পাদক রমজান আলী, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আইয়ুব আলী, পূজা উদযাপন পরিষদের সম্পাদক আ’লীগ নেতা সাধন বসাক, সাবেক ছাত্রনেতা রুকুনুল ইসলাম ডলার, ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সমসের আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আনিসুর রহমান বাকি অভিযোগ করে বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি করা হয়নি। ঘোষিত কমিটিতে স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সদস্য, মাদকসেবী, বর্তমান সভাপতির আত্মীয়-স্বজন এমন ব্যক্তির নাম কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অধ্যাপক সইদুল হককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। জেলা আ’লীগের সম্পাদক দীপক কুমার রায়কে ফোন দিলে তিনি মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় কোন মন্তব্য করেন নি।