রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি, মাছুম মিয়া:
পেঁয়াজ রপ্তানির বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারত। এ খবরে সারা দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা তাঁত বাজার, গোলাকান্দাইল, মুড়াপাড়া, কাঞ্চন, রূপসি, বরপাসহ বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বী। দেশী পেঁয়াজ ২২০-২৪০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১৮০-২২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এদিকে পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রাখতে উপজেলার মুড়াপাড়া এলাকায় বাজার মনিটরিং করেন মুড়াপাড়া বাজার কমিটির সভাপতি ও মুড়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ তোফায়েল আহমেদ আলমাছ। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান সকল ব্যবসায়িদেরকে পেঁয়াজের আকাশচুম্বী দাম কমানোর অনুরোধ করে। পরে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের অতিরিক্ত দাম কমিয়ে দেশী পেঁয়াজ ১৫০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১২০ টাকা নির্ধারন করে দেয়। এতে পেঁয়াজ ক্রেতারা বাজারের প্রতিটি দোকানে ভীড় জমায়। কেউ ৫ কেজি, কেউ ২ কেজি করে পেঁয়াজ কিনতে দেখা যায় । এ খবর পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকা থেকে পেঁয়াজ ক্রেতারা বাজারে ভীড় করতে দেখা যায়।
দরিকান্দি এলাকার সুরুজ মিয়া বলেন, আমি ২২০ টাকা কেজি পেঁয়াজ কিনেছি। আপনারা সাংবাদিক ও মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাস বাজার আসার পর থেকেই ১৫০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে বিক্রেতারা।
মুড়াপাড়া এলাকার দিনমজুর রুস্তম আলী বলেন, আমরা সাধারণ জনগণ কোথায় যাবো যেভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বাড়ছে। আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। দ্রব্যমূল্য বাড়ে আমাদের পারিশ্রমিকের টাকাতো বাড়ে না। ৫শ টাকা নিয়ে বাজারে আসছি ১ কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ কিনেছি ২শ টাকায়।
রূপগঞ্জ এলাকার চাকুরিজীবি স্বপন মিয়া বলেন, দেশে নিত্যপন্যের যে উধ্বর্গতি চাকরির সামান্য বেতনে পরিবার নিয়ে চলতে অনেক কষ্ট হয়ে পরে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের সাধারণ জনগণের দৈনন্দিন জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বাজারটা স্থিতিশীল করে দেন তাহলে আমাদের সাধারণ জনগণের আর কোন কষ্ট থাকবে না ।
মুড়াপাড়া বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতারা বলেন, আজকে আড়ৎ থেকে দেশী পেঁয়াজ ২শ ১০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ১শ ৮০ টাকায় কিনতে হয়েছে। তারপর আবার যাতায়াত খরচ। সামান্য লাভে পেঁয়াজ বিক্রি করছি। প্রসাশন যদি আড়ৎ গুলোতে মনিটরিং করে তাহলে পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল করতে পারবে। আমরা বেশি দামে পেঁয়াজ কিনি। বেশি দামে বিক্রি করি।
এ ব্যাপারে মুড়াপাড়া বাজার কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ তোফায়েল আহমেদ আলমাছ বলেন, ভারত সরকার আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিয়েছে। এ খবর শুনেই বাজারে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে দিয়েছে। আমি মুড়াপাড়া বাজার সমিতির সভাপতি হিসেবে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করি পেঁয়াজের দাম কমিয়ে বিক্রি করার। ব্যবসায়ীরা আমার অনুরোধে দেশী পেঁয়াজ ১৫০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ১২০ টাকায় বিক্রি শুরু করে।
উল্লেখ্য, ভারত দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ভারত সরকার আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
৮ ডিসেম্বর শুক্রবার দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদফতরের (ডিজিএফটি) এক প্রজ্ঞাপনে এ ঘোষণার কথা বলা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত গতকাল থেকেই কার্যকর হবার কথা বলা হয়েছে। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ থাকবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, এই নোটিশ জারির আগে পেঁয়াজের গাড়ি লোড হয়ে থাকলে সেটি সংশ্লিষ্ট দেশে পৌঁছে যাবে। অথবা পেঁয়াজ ভর্তি গাড়ি বা জাহাজ ভারতীয় পোর্ট অতিক্রম করলে সেটি এই নির্দেশনার আওতায় পড়বে না।