বিশেষ সংবাদদাতা:
রেশন নিয়ে কোনও রকম দুর্নীতিকে সরকার প্রশ্রয় দেবে না। এ কথা পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার তিনি দলের জেলা সভাপতিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক করেন। যেহেতু রেশন নিয়ে দুর্নীতির প্রধান অভিযোগই ছিল শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে, তাই এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে ছিল রাজনৈতিক মহল।
জানা গিয়েছে, বৈঠকে রেশন নিয়ে নিজের অসন্তোষের কথা জেলা সভাপতিদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। স্পষ্ট বলেন, ‘সরকারের টাকা নিয়ে ছেলেখেলা করা যাবে না। কোনও রকম মাতব্বরিও সরকার বরদাস্ত করবে না। যদি কাউকে সাহায্য করতেই হয়, নিজের পয়সায় সাহায্য করো। সরকারের টাকা নিয়ে নিজের নামে সাহায্য করতে যেও না। সরকারের টাকা বরাদ্দ হয়েছে সাধারণ মানুষের জন্য। তাঁদের ব্যাপারটা তাঁদেরই বুঝে নিতে দাও। রেশন নিয়ে কোনও রকম দুর্নীতির খবর পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি তাঁদের বেশ কিছু নির্দেশও দেন। বলেন, ‘ভয় পাওয়ার কিছু নেই। নিজেদের কাজ নিজেরা করে যাও। মানুষকে সচেতন করো। মন শক্ত রেখে কাজ করো।’ উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যে রেশন বণ্টনে দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছে সমস্ত বিরোধী দলই। শাসক দলের নেতারাই রেশন নিয়ে দুর্নীতি করছেন বলে তারা অভিযোগ করেছে। এমনকী, এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন স্বয়ং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও। ফলে বিষয়টি নিয়ে সরকারকে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে।
এদিকে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ির ৩ লক্ষ মানুষের রেশন নেই! জলপাইগুড়ির জনসংখ্যা ২৮ লক্ষেরও বেশি। অন্তত লোকসভা নির্বাচনের ভোটার তালিকা সে কথাই বলছে। জানা গিয়েছে, এই ২৮ লক্ষ মানুষের মধ্যে করোনা পরিস্থিতিতে রেশন পাচ্ছেন ২৫ লক্ষ মানুষ। বাকি ৩ লক্ষ বা তার বেশি মানুষ কোনও রেশন পাচ্ছেন না। তাঁদের কাছে কোনও রেশন কার্ডই নেই। এমনকী, রেশন পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সরকারি কুপনও তাঁরা পাননি। তাই তাঁদের রেশন দেওয়া হচ্ছে না।
কিন্তু ৩ লক্ষ বা তার বেশি মানুষের নাম কেন রেশনের তালিকায় নেই সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। বিরোধী দলগুলি এই ঘটনার মধ্যে রাজনীতির গন্ধ খুঁজে পেলেও তাঁদের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।