বিশেষ সংবাদদাতা:
ফের টুইট করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। আর তাতেই আবার নতুন করে মাত্রা পেল রাজভবন–নবান্নের দ্বন্দ্ব। ইঙ্গিতবহ ভাবে বুধবারের টুইটে রাজ্যপাল প্রধানমন্ত্রীর গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার যে খাদ্যসামগ্রী রাজ্যে এসে পৌঁছেছে, তার পরিসংখ্যানই তুলে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ৫ মে পর্যন্ত রাজ্যের জন্য ৯ হাজার ৮৮৯ মেট্রিক টন মসুর ডাল বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৬ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন ডাল এসে গিয়েছে। আগামী ২ দিনের মধ্যে বাকি ডালও এসে যাবে।’
এই টুইটেই তিনি রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের দায়িত্ব সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। দলীয় রাজনীতির বাইরে থেকে সরকারের কাজ করার নির্দেশও তাঁদের দিয়েছেন তিনি। রাজ্যপালের এই টুইটের পর পশ্চিমবাংলায় রাজনীতির আঙিনায় ফের বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। শাসক দলের তরফে রাজ্যপালের টুইটের জবাব দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেছেন, ‘সঠিক তথ্য না জেনেই ডাল নিয়ে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল। রাজ্য সরকার কোনও ডাল পায়নি। ৭ হাজার ২৪ মেট্রিক টন ডাল গোডাউনে পড়ে রয়েছে। নাফেড সংস্থা এখনও রাজ্যকে ডাল দেয়নি।’ তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘প্রতিদিন নাটক করা রাজ্যপালের একটা কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি সরাসরি রাজ্যপালকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘প্রকৃত তথ্য না জেনে আপনি তথ্য দেওয়া বন্ধ করুন।’
খাদ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছে বিজেপিও। দলের তরফে বলা হয়েছে, রাজ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হচ্ছে রেশন নিয়ে। দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, খাদ্যসচিবকে পর্যন্ত সরিয়ে দিতে হয়েছে। তাই তাঁর মুখে এত বড় কথা মানায় না। আর সাধারণ মানুষ তাঁকে নয়, রাজ্যপালকেই বেশি বিশ্বাস করে। তাই তাঁরই উচিত চুপ করে থাকা। এমনকী, রেশন যাতে প্রতিটি গরিব মানুষের কাছে পৌঁছয়, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখা। উল্লেখ্য, রেশনে দুর্নীতি নিয়ে অনেকদিন ধরেই সরব বিজেপি। কয়েকদিন আগে দলের নেতা রাহুল সিনহা অভিযোগ করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যে চাল পাঠাচ্ছে, সেই চাল সরিয়ে রেখে রাজ্য সরকার নাকি পচা চাল কেন্দ্রীয় সরকারের নামে চালিয়ে দিচ্ছে। এই অভিযোগ শোনা গিয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মুখেও। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকার পচা চাল রাজ্যে পাঠিয়েছে বলে কয়েকটি জেলার তৃণমূল নেতারা অভিযোগ করেছিলেন। তারই জবাবে বিজেপিও জানিয়েছিল, রাজ্যবাসীকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পচা চাল দিচ্ছে সরকার।
এরই মধ্যে রেশন নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন কলকাতার কসবা এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা বলেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু কসবা বেদিয়াডাঙা ফার্স্ট লেনে রেশন ডিলার পরিমাণ মতো রেশন দিচ্ছেন না। ডিজিটাল কার্ড থাকা সত্ত্বেও রহস্যজনক কারণে মুখ দেখে দেখে রেশন দিচ্ছেন। ওই ডিলারের বিরুদ্ধে বহুদিন ধরে বেআইনি কাজ করে যাওয়ার অভিযোগও তুলেছেন বাসিন্দারা।