কলকাতা সংবাদদাতা:দলের বিধায়কের স্মরণসভায় যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা ও কর্মীরা। মধ্যমণি ছিলেন স্বয়ং রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু লকডাউনের সময় এ ভাবে জমায়েত করা যায় না। তাই দিলীপ ঘোষ–সহ বিজেপির ১ হাজার নেতা ও মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মহামারী আইনে মামলা করতে চলেছে পুলিশ। আর সেই ঘটনা নিয়ে তীব্র আলোড়ন তৈরি হয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে। যদিও বিষয়টি নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া না জানালেও বিজেপি বিষয়টিকে যে তেমন গুরুত্ব দিতে রাজি নয়, তা বুঝিয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে রহস্যমৃত্যু হয় হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের। পুলিশ এবং শাসক দলের দাবি, ওই বিধায়ক আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু বিজেপির দাবি, তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পেছনে শাসক দলের নেতা ও কর্মীরা জড়িত বলে তারা অভিযোগ তোলে। এ নিয়ে উত্তরবাংলায় তারা বন্ধও ডেকেছে। সেই বিধায়কেরই স্মরণসভা ছিল সোমবার। সভায় যোগ দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ–সহ ১ হাজারেরও অনেক বেশি নেতা ও কর্মী। কিন্তু লকডাউনের সময় এ ভাবে জমায়েত করা যায় না। তাই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। যদিও বিজেপির অভিযোগ, শাসক দলের নেতারা ত্রাণ দেওয়ার নামে যথারীতি দল বেঁধে যাতায়াত করছেন। পুলিশ তাঁদের কাজে সহায়তাই করছে। কিন্তু বিরোধী দলের নেতা, সাংসদ বা বিধায়কদের কোথাও যেতে দিচ্ছে না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে শাসক দলকে জনসংযোগের সুবিধা পাইয়ে দিতেই পুলিশ এই কাজ করছে বলে বিজেপি নেতারা বারবার অভিযোগ করেছেন।
যাই হোক, হেমতাবাদের মৃত বিধায়কের স্মরণসভায় যোগ দিয়ে লকডাউনের নিয়মভঙ্গ করেছেন বলে দিলীপ ঘোষ–সহ ১ হাজার বিজেপি নেতা ও কর্মীর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়েছে রায়গঞ্জ পুলিশ। যাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলেছে পুলিশ, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, রায়গঞ্জের জেলা বিজেপি সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল প্রমুখ। গতমাসে বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের রহস্যমৃত্যুর পর সোমবারই প্রথম সেখানে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার সকালে রায়গঞ্জ থানার আইসি সুরজ থাপা জেলা পুলিশ দফতরে ১ হাজার বিজেপি নেতা ও কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগই এবার খতিয়ে দেখবে পুলিশ। সূত্রের খবর, জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানিয়েছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
অবশ্য পুলিশের এই পদক্ষেপকে কোনও রকম গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি। তাদের অভিযোগ, রাজ্যে বিজেপির জনপ্রিয়তা প্রায় প্রতিদিনই লাগামহীন ভাবে বাড়ছে। তাতেই শাসক দল ও সরকার ভীত। সেই কারণে নানা ভাবে বিজেপি নেতা ও কর্মীদের হেনস্তা করতে উদ্যোগী হয়েছে তৃণমূল সরকারের প্রশাসন। যদিও দলের নেতারা বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি। তৃণমূল নেতারা স্বাভাবিক কারণেই বিষয়টি নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। কেউ কেউ সংক্ষিপ্ত বার্তায় জানিয়েছেন, আইন আইনের পথে চলবে। তাতে তাঁদের কী করার আছে!