আগের তিন কার্যদিবসের মতো বুধবারও শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুর অল্প সময়ের মধ্যে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে রবি আজিয়াটা।এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের প্রতি কার্যদিবসেই দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করল।
এরপরও যাদের কাছে কোম্পানিটির শেয়ার রয়েছে তাদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হচ্ছেন না। ফলে কোম্পানিটির শেয়ারের ক্রেতা থাকলেও বিক্রেতা এক প্রকার উধাও হয়ে গেছে।
এদিন লেনদেনের শুরুতে ২৮ টাকা ৯০ পয়সা করে কোম্পানিটির ৪ হাজার ৮০০ শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে এ দামে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি।
এরপর কয়েক দফা দাম বেড়ে ২৯ টাকা ৮০ পয়সা করে ৫ কোটি ৯১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৬৬টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এর মাধ্যমে দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে কোম্পানিটি।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করা রবির শেয়ার গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়।
ওই দিন লেনদেনের শুরুতে ১৪ টাকা করে কোম্পানিটির ২ লাখ ৬১ হাজার ১৭০টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে কেউ এ দামে বিক্রি করতে রাজি হননি। এরপর কয়েক দফা দাম বেড়ে সর্বশেষ ১৫ টাকা করে ১৭ কোটি ৫২ লাখ ১৬ হাজার ৬৬২টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে।
এতেই দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। তবে এরপরও কোনো বিনিয়োগকারী তাদের কাছে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। ফলে ক্রেতা থাকলেও শেয়ারের বিক্রেতা শূন্য হয়ে পড়ে।
পরের কার্যদিবস রোববার লেনদেনের শুরুতে ২১ টাকা ৬০ পয়সা করে ১০ হাজার শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে এ দামে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি।
এরপর কয়েক দফা দাম বেড়ে ২২ টাকা ৫০ পয়সা করে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৩টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এর মধ্যে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে কোম্পানিটি।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আইপিও’র মাধ্যমে শেয়ারবাজার তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানির শেয়ার প্রথম দুই কার্যদিবসে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ হারে বাড়তে পারবে। ২২ টাকা ৫০ পয়সায় ওঠার মাধ্যমে রোববার রবির শেয়ারের দাম ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়।
পরের কার্যদিবস সোমবার লেনদেনের শুরুতে ২৩ টাকা ১০ পয়সা করে ৭ হাজার শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে এ দামে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি।
এরপর কয়েক দফা দাম বেড়ে ২৪ টাকা ৭০ পয়সা করে ৭ কোটি ১১ লাখ ৬ হাজার ৮২১টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এর মাধ্যমে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে কোম্পানিটি।
কারণ নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম দুই কার্যদিবসের পর কোম্পানিটির শেয়ার দাম ১০ শতাংশের বেশি বাড়তে পারবে না।
মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতে ২৫ টাকা ৭০ পয়সা করে ১ হাজার ৫০০ শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে এ দামে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি।
এরপর কয়েক দফা দাম বেড়ে ২৭ টাকা ১০ পয়সা করে ৭ কোটি ২ লাখ ১৯ হাজার ৭৫৪টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এর মাধ্যমে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে কোম্পানিটি।
নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং আইপিও খরচের জন্য রবিকে অভিহিত মূল্যে শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহের অনুমোদন দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিএসইসি থেকে অনুমোদন নিয়ে রবি আজিয়াটার আইপিওতে আবেদন গ্রহণ শুরু হয় ১৭ নভেম্বর। যা চলে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত।
এ টাকা তোলার জন্য কোম্পানিটি ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি সাধারণ শেয়ার আইপিওতে ইস্যু করে। এর মধ্যে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার ৯৩৪টি শেয়ার কোম্পানির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ইস্যু করা হয়েছে।