বিশেষ প্রতিবেদন:
কলকাতার পর শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে শনিবার। এর আগে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক পদে ফিরহাদ হাকিমকে সরকার প্রশাসক নিযুক্ত করলে তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক তৈরি হয় রাজ্যে। তাই বিতর্ক এড়াতে রাজ্য সরকার শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে প্রশাসক পদে রাখার কথা জানিয়ে শুক্রবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। অশোকবাবুকে মাথায় রেখে ওই বোর্ডে আরও ১২ জনকে রেখেছে তৃণমূল সরকার। কিন্তু বিজ্ঞপ্তি জারির পরই প্রবীণ সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারের সেই সিদ্ধান্ত মানবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেন।
এর আগে ফিরহাদ হাকিমকে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক নিযুক্ত করা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক তৈরি হয় রাজ্যে। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে বলেছিলেন, রাজ্য সরকার কলকাতা পুর আইনের ৬৩৪ নম্বর ধারা উল্লেখ করে প্রশাসক বোর্ড তৈরি করেছে। কিন্তু ছোটখাটো আইনি জটিলতা কাটাতে ওই ধারায় ব্যবহার করা যায়। প্রশাসক বোর্ড গড়া যায় না। আর কলকাতা পুরসভা একটি স্বশাসিত সংস্থা। সেখানে কোনও মন্ত্রীকে কখনও প্রশাসক করা যায় না।
সিপিএমকে জবাব দিতেই হয়তো রাজ্য সরকার অশোক ভট্টাচার্যকে মাথায় রেখে শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের কথা ঘোষণা করে। কিন্তু তিনি রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত উড়িয়ে দেওয়ায় শিলিগুড়ি পুরসভা নিয়ে জটিলতা তৈরি হল বলে মনে করা হচ্ছে। শিলিগুড়ি ছাড়া এদিন জলপাইগুড়ি, তুফানগঞ্জ, উলুবেড়িয়া, জয়নগর–মজিলপুর, গয়েশপুর ও রামপুরহাট পুরসভায়ও প্রশাসক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নবান্ন। সেই বিজ্ঞপ্তি নিয়েও রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে তৃণমূলের তরফে বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগই উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিন রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করে শিলিগুড়ির বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘শিলিগুড়ি পুরসভার ক্ষমতায় যেহেতু বাম বোর্ড ছিল, তাই এই সরকার সমস্ত কাজেই অসহযোগিতা করে গিয়েছে। এমনকী, কেন্দ্রীয় সরকার কোনও প্রকল্পের জন্য টাকা পাঠালে তাও শিলিগুড়ি পুরসভাকে দিতে রাজ্য সরকার টালবাহানা করেছে। তাদের এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি রাজনৈতিক।’ তিনি রীতিমতো ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডে বিরোধী দলগুলির কোনও প্রতিনিধি রাখেনি। কিন্তু শিলিগুড়ির প্রশাসক বোর্ডে পাঁচজন তৃণমূলিকে গুঁজে দিয়েছে। রাজ্য সরকারের কৌশল কী, তা এ থেকেই বোঝা যায়।’