1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

শেখ মুজিবের ছবিতে মন্তব্য করায় ৪ মাসের জেল, চার বছর পড়াশোনা বন্ধ

  • Update Time : রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৩৩ Time View

ওয়েব ডেস্ক: ‘আমি কোনো ফেক আইডি থেকে পোস্ট করিনি। কেবল একটা মন্তব্য করেছি। কিন্তু আমাকে শিবির ট্যাগ দিয়ে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে চার মাস জেলে বন্দি করে রাখা হয়। আমাকে থানায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। কেউ সাহায্য করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে আমার বাবা, তাকে অপমান করা হয়েছে। আমার চার বছর পড়াশোনা বন্ধ ছিল। আমি অসংখ্যবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছি।’

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করে অঝোরে কাঁদলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ফয়েজ আহমেদ।

তার অভিযোগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের এডিট করা একটি ছবিতে শুধুমাত্র কমেন্ট করেছিলেন তিনি। এ কারণে তাকে চার মাস জেল খাটতে হয়েছে এবং তাকে দীর্ঘ চার বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।

ফয়েজ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার নাছের, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন ও আমার বিভাগের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে পড়াশোনা করতে দেননি। বাদশা স্যার আমাকে বলেছেন, তোমাকে ধর্ষণ মামলায় সহায়তা প্রদান করলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে কোনো মামলায় আপস করব না।

‘আমার জীবনটা শেষ করার পেছনে দায়ী ফ্যাসিবাদের দোসর বাদশা মিয়া। আমি সেই মামলায় খালাস পেয়েছি। তিনি আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। আমাকে পড়তে দেওয়া হবে না। আমার বিরুদ্ধে ভুয়া তদন্ত কমিটির মাধ্যমে দোষীসাব্যস্ত করে বহিষ্কারাদেশ বহাল রেখেছেন। অথচ আমি কতবার তার হাত-পা ধরেছি; বলেছি, আমাকে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি আমাকে সেই সুযোগ দেননি।’

তিনি আরও বলেন, কোনো প্রকার মামলা ছাড়াই আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নোবিপ্রবি ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেতা প্রিতম আহমেদ বাদী হয়ে আমার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। যেখানে স্বাক্ষী হিসেবে ছিলেন তৎকালীন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার নাসের, শিক্ষা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সজিব এবং বিএমএস বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগনেতা সাব্বির। দীর্ঘ চার মাস আমি কারাগারে থাকি। পরবর্তীতে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে জামিন পেয়ে বের হয়ে আসি।’

ন্যায়বিচার প্রার্থনায় আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘আমি প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অভিযোগ দেব। আমি দেখব, বিশ্ববিদ্যালয় কী ব্যবস্থা নেয়?  যদি তারা আমাকে ন্যায়বিচার দিতে না পারে আমি আদালতে মামলা করব। আমি শেষ দেখতে চাই। আমার মতো কারও সাথে এমন ঘটনা ঘটুক, আমি তা চাই না।’

জানা যায়, ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর মুহম্মদ মুমিন আদ দ্বীন নামক একটি আইডি থেকে ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামক একটি গ্রুপে নোবিপ্রবির বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সঙ্গে ভিপি নুরের এডিট করা ছবি পোস্ট করা হয়। সেই পোস্টের সমালোচনা করে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি শাহরিয়ার নাসের পোস্ট করেন। সেখানে ফয়েজ আহমেদ কমেন্ট করেন, ‘এখানে দুঃসাহসের কিছু তো দেখছি না’। এই একটি কমেন্টের কারণে ফয়েজ আহমেদকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। তাকে পাঁচদিনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে দীর্ঘ চার বছর ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত করা হয়।

পরবর্তীতে এ ঘটনায় শিক্ষা বিভাগের চেয়ারম্যান বিপ্লব মল্লিককে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে সদস্য হিসেবে ছিলেন তৎকালীন প্রক্টর নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফিরোজ আহমেদ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক আফসানা মৌসুমী, ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের প্রভোস্ট আনিসুজ্জামান রিমন ও সদস্য সচিব হিসেবে ছিলেন নোবিপ্রবি বিএনসিসির পিইউও একিউএম সালাউদ্দিন পাঠান।

সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ আহমেদের বড় ভাই রাজু আহমেদ বলেন, একটা মিথ্যা ও বানোয়াট বিষয় নিয়ে তারা আমার ভাইয়ের জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছে। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিচার হলেও সে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরতে পারেনি। দীর্ঘ তিন বছর অমানুষিক কষ্ট করেছি আমরা। শত চেষ্টা করেও নোবিপ্রবিতে পড়ালেখা চলাতে না পেরে আমরা তাকে বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যারা এজন্য দায়ী আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের বিচার চাই। বিশেষ করে যারা তদন্ত কমিটিতে ছিলেন তারাও এ ঘটনার জন্য দায়ী। তারা কোনো প্রকার তদন্ত না করেই ফয়েজকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আর কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। তারা আওয়ামী দোসরদের পক্ষ হয়ে কাজ করেছে।

অভিযোগের বিষয়ে আইন বিভাগের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা। প্রথমত, বহিষ্কার করা এবং ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড ও একাডেমিক কাউন্সিলের হাতে। সেখানে চেয়ারম্যান হিসেবে আমি ওর ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..