মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন
ওয়েব ডেস্ক: জয় বাংলা ব্রিগেডের জুম মিটিংয়ে অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাত ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনকে আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করে মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তত হওয়ায় তা বদলির আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ (মঙ্গলবার) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জেনিফার জেরিন মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তত হওয়ায় তা বদলির আদেশ দেন। পরবর্তী বিচারিক কার্যক্রমের জন্য মামলাটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়।
মামলার বাদী সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এই মামলায় আসামি শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জন। তাদের মধ্যে ২৫৮ জন পলাতক রয়েছেন। গত ১৪ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ২৬১ জন পলাতক থাকায় তাদের আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত। পরে আরও তিনজনকে বিভিন্ন সময় এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এ মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনসহ ২৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তার দেখানো উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— মো. ইব্রাহীম খলিল বিপুল, মো. আব্দুস সবুর, মোছা. ছানোয়ারা খাতুন, মেহেদী হাসান আকাশ, এ কে এম আকতারুজ্জামান, কে এম রাশেদ, মোছা. মেরিনা খাতুন মেরি, সুশান্ত ভৌমিক, নিজাম বারী, জাহাঙ্গীর আলম, শেখ আনিচুজ্জামান আনিচ, মো. আকরামুল আলম, মো. নুর উন নবী মন্ডল দুলাল মাস্টার্স, মো. সাইফুল ইসলাম সর্দার, কাজী আবুল কালাম, মোছা. ফেন্সী, কে এম শাহ নেওয়াজ ওরফে শিবলু, রফিকুল ইসলাম, জিন্নাত সুলতানা ঝুমা, মেহেদী হাসান ঈশান ও জনি চন্দ্র সূত্রধর।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মিটিংয়ে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ গঠন করে একটি গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে পলাতক শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বুঝিয়ে দেওয়া এবং তা নিশ্চিতকরণের জন্য শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত যুদ্ধ করে যাবেন বলে অনেকেই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। মোট ৫৭৭ জন অংশগ্রহণকারী দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উক্ত জুম মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করে এবং শেখ হাসিনার সমস্ত নির্দেশ পালন করার ব্যাপারে একাগ্রচিত্তে মত প্রকাশ করেন। ড. রাব্বি আলমের (যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি) হোস্টিং এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং হোস্ট, কো-হোস্ট ও অংশগ্রহণকারী নেতা-কর্মীদের কথোপকথনে ভয়েস রেকর্ড পর্যালোচনায় ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামক প্লাটফর্মে দেশ-বিদেশ থেকে অংশগ্রহণকারীগণ বৈধ সরকারকে শান্তিপূর্ণভাবে দেশ পরিচালনা করতে দেবে না মর্মে আলোচনা হয়।
সেই সঙ্গে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম মিটিং এ বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার জন্য গৃহযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধের সুস্পষ্ট উপাদান রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. এনামুল হক। এরপর সিআরপিসির ১৯৬ ধারায় ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে সিআইডির এই কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১৪ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলামের আদালতে শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশন্স) মো. এনামুল হক। আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে সকল আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন— যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড. রাব্বি আলম, জয়বাংলা বিগ্রেডের সদস্য কবিরুল ইসলাম, এডভোকেট কামরুল ইসলাম, এলাহী নেওয়াজ মাছুম, জাকির হোসেন জিকু, প্রফেসর তাহেরুজ্জামান, এ কে এম আক্তারুজ্জামান, আওয়ামী লীগ নেতা সাবিনা ইয়াসমিন, আজিদা পারভীন পাখি, শাহীন, এডভোকেট এএফএম দিদারুল ইসলাম, মাকসুদুর রহমান, সাবেক এমপি সৈয়দ রুবিনা আক্তার, সাবেক এমপি পংকজ নাখ, লায়লা বানু, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, রিতু আক্তার, নুরুন্নবী নিবির, সাবিনা বেগম ও শরিফুল ইসলাম রমজান।