বিশেষ প্রতিবেদন
বৃহস্পতিবারের তুলনায় করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমল পশ্চিমবাংলায়। বৃহস্পতিবার রাজ্যে সংক্রমিত হয়েছিলেন ২ হাজার ৪৩৬ জন। করোনা–কালে বৃহস্পতিবারই রাজ্যে ঘটেছিল রেকর্ড সংক্রমণ। কিন্তু শুক্রবার শেষ ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হলেন ২ হাজার ২১৬ জন। এর অর্থ, বৃহস্পতিবারের তুলনায় এদিন সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা কমেছে ২২০ জন। এদিন করোনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ৪৮৫ জনের। বৃহস্পতিবার সংখ্যাটা ছিল ১৪ হাজার ৫৫৮। তার মানে, ৯২৭ জনের বেশি করোনা পরীক্ষা হয়েছে এদিন। তাই সংক্রমণের দিক থেকে এদিন বাংলার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলা যায়।
যদিও সংখ্যাতত্ত্বের হিসেবে এই সংখ্যা ইতিবাচক হলেও মোট জনসংখ্যার অনুপাতে খুব বেশি আশাবাদী হওয়ারও কিছু নেই বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তবে একই সঙ্গে এ কথাও তাঁরা জানিয়েছেন, যদি ধারাবাহিক ভাবে এই নিম্নমুখী হার সপ্তাহ খানেক চলতে থাকে, তা হলে অবশ্য রাজ্যের অবস্থা ক্রমশ ভালো হচ্ছে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা এখন যথেষ্ট কম। কেন না, ভারতের মতো জনবহুল একটি দেশের জনবহুল একটি রাজ্য হল এই বাংলা। সেখানে সংক্রমণের হারের রেখা এখন উর্ধ্বমুখী। এই রেখা এখন উপরের দিকেই একটা সীমার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এখনই এই রেখা নীচে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, এখন সংক্রমণ বৃদ্ধির সময়কেই নির্দেশ করছে এই রেখা। তা ছাড়া শুক্রবার বৃহস্পতিবারের তুলনায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন কম সংখ্যক মানুষ। শুক্রবার করোনা মুক্ত হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ১ হাজার ৮৭৩ জন। বৃহস্পতিবার সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন ২ হাজার ৬ জন। এর মানে বৃহস্পতিবারের তুলনায় সুস্থ মানুষের সংখ্যা কমেছে ১৩৩ জন।
শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্যে সুস্থতার হার রয়েছে ৬২.১২ শতাংশ। উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ৫১২ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য ভবনের বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে এখন মোট সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৯৭৩ জন। এঁদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সক্রিয় রয়েছে ১৯ হাজার ১৫৪ জনের শরীরে। রাজ্যে মোট করোনা–মুক্ত এবং সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৫২৯ জন। শুক্রবার যাঁরা সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কলকাতা থেকেই বেশি মানুষ রয়েছেন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় কলকাতার ৬৯৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। অন্য জেলাগুলির মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় ৫৬৭ জন, হাওড়ায় ১৮৯ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৪৩ জন, দার্জিলিংয়ে ৮৯ জন, হুগলিতে ৭৪ জন, পূর্ব মেদিনীপুরে ৭৪ জন, জলপাইগুড়িতে ৬৬ জন, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৬৬ জন, মালদায় ৫২ জন সংক্রমিত হয়েছেন এদিন।
তবে এদিন করোনায় সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৫ জন। মৃত্যুর সংখ্যার তালিকায় এদিনও প্রথমেই রয়েছে কলকাতা। মহানগরীতে এদিন মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। এ ছাড়া উত্তর ২৪ পরগনার ৬ জন, হাওড়ার ৩ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩ জন, জলপাইগুড়ির ৩ জন এবং হুগলি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর এবং মুর্শিদাবাদে ১ জন করে প্রাণ হারিয়েছেন। এদিন পর্যন্ত রাজ্যে করোনা সংক্রমিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৯০ জন। এখনও পর্যন্ত ৫৮২টি সরকারি কোয়ারেন্টিন সেন্টারে ৩ হাজার ৪০২ জন সংক্রমিত রোগী রয়েছেন। এ ছাড়া এখন রাজ্যে মোট ৮১টি হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসা হচ্ছে। করোনা পরীক্ষা হচ্ছে ৫৬টি ল্যাবে।