স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আগামী ৩০ মার্চ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশসহ মার্চ মাস ব্যাপী ১৯ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে আমরা এদেশের দলমত নির্বিশেষ সব পেশার জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে এবং গুরুত্বের সঙ্গে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করেন। কারণ এই স্বাধীনতা এদেশের জনগণের প্রস্ফুটিত স্বাধীনতা, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা, এদেশের জনগণের জন্য জনগণের স্বার্থে এই স্বাধীনতা। তাই আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সবাই উদযাপন করতে চাই।’

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আমাদের এসব অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা এবং সুষ্ঠুভাবে যাতে করতে পারি তার জন্য সহযোগিতা চাইব। তেমনিভাবে আমরা সরকারের কাছেও সহযোগিতা চাই, যাতে করে স্বাধীনতার এই ৫০ বছর পূর্তিতে আমাদের যে আবেগ, আমাদের যে উচ্ছ্বাস তা যেন নির্বিঘ্নে সুন্দরভাবে পালন করতে পারি।’

এসব কর্মসূচি পালনের বিষয়ে কথা বলতে বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের সঙ্গে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করবে বলেও জানান খন্দকার মোশাররফ।

তিনি আরও বলেন, সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বিএনপি সারাবছর কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। বুধবার মার্চ মাসের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতি মাস শেষ হওয়ার আগে পরবর্তী মাসের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে –

১ মার্চ (সোমবার) : স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী কর্মসূচির উদ্বোধন, ২ মার্চ (মঙ্গলবার) : ছাত্র সমাজ আয়োজিত স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন শীর্ষক আলোচনা, ৩ মার্চ (বুধবার) : ছাত্র সমাজ আয়োজিত স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ শীর্ষক আলোচনা, ৮ মার্চ (সোমবার) : জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কর্তৃক বিশ্ব নারী দিবস পালন, ৯ মার্চ (মঙ্গলবার) : সেমিনার, ১০ মার্চ (বুধবার) : রচনা প্রতিযোগিতা আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি জারি, ১৩ মার্চ (শনিবার) : বছর ব্যাপী রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন।

১৫ মার্চ (সোমবার) চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আহ্বান বিজ্ঞপ্তি জারি, ২০ মার্চ (শনিবার) আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বিষয়ক সেমিনার, ২২ মার্চ (সোমবার) স্বাধীনতার ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধ, জেড ফোর্স এবং জিয়াউর রহমান শীর্ষক সেমিনার, ২৩ মার্চ (মঙ্গলবার) জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মেলা, ২৪ মার্চ (বুধবার) নির্বাচিত বিএনপি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে এরশাদের জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল, ২৫ মার্চ (বৃহস্পতিবার) : ২৫ মার্চের কালো রাত্রি।

২৬ মার্চ (শুক্রবার) সকাল : মহান স্বাধীনতা দিবসের সকালে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধাঞ্জলি, চিকিৎসা ও সেবা কমিটির রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন।

২৬ মার্চ (শুক্রবার) বিকেল : র‌্যালি, দেশব্যাপী সব জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা ও পৌরসভা পর্যায়ে কর্মসূচি পালন।

২৭ মার্চ (শনিবার) চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে গমন ও বগুড়ার বাগবাড়ি গমন এবং আলোচনা সভা। দেশব্যাপী জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা ও পৌরসভা পর্যায়ে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা, ২৮ মার্চ (রোববার) : মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা, ৩০ মার্চ (মঙ্গলবার) : সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সুবর্ণজয়ন্তী মহাসমাবেশ, ৩১ মার্চ (বুধবার) : মুক্তিযুদ্ধের বইমেলা ও চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সদ্য প্রয়াত সাংবাদিক আবুল মকসুদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালিদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন খন্দকার মোশাররফ।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান ও সদস্য সচিব আবদুস সালাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার, তথ্য গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।