বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। তিনি দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালযয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। বর্তমানেও তিনি শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারেন না।
বুধবার (৩ মার্চ) গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত হতে না পারায় তার আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখিত কথা বলেন খালেদার আইনজীবী।
আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক নজরুল ইসলাম আগামী ৫ এপ্রিল অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
আইনজীবী জয়নাল আবেদীন মেজবাহ আবেদনে উল্লেখ্য করেন, সরকারের নির্দেশে স্বাস্থ্যগত কারণে মুক্তি পান বেগম খালেদা জিয়া। সরকার মুক্তির শর্ত হিসেবে বাসার বাইরে না যাওয়ার শর্ত আরোপ করেছে। যা লঙ্ঘন করা খালেদার পক্ষে বিধি সম্মত নয়। এই কারণে খালেদা আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বরে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা করা হয়। এতে আসামি করা হয় খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনকে। তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী।
মামলার পরদিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর জরুরি ক্ষমতা আইনে মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেন।
মামলার ২৪ আসামির মধ্যে ছয়জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন। তারা হলেন- সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, এম কে আনোয়ার, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামী, চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো।
অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, প্রয়াত মন্ত্রী কর্নেল (অব.) আকবর হোসেনের স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ-সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, গ্লোবাল অ্যাগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, গ্যাটকোর পরিচালক সৈয়দ তানভির আহমেদ ও সৈয়দ গালিব আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এ এস এম শাহাদত হোসেন, বন্দরের সাবেক পরিচালক (পরিবহন) এ এম সানোয়ার হোসেন এবং বন্দরের সাবেক সদস্য লুৎফুল কবীর।