1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

২০ কোটি টাকার বই দুর্নীতির তদন্তে মন্ত্রণালয়

  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট, ২০২০
  • ১৭৪ Time View

প্রত্যয় নিউজ ডেস্কঃ মুজিববর্ষে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’-এর জন্য বঙ্গবন্ধুবিষয়ক বই কেনা এবং সেই বইয়ের গ্রন্থস্বত্ব ও মেধাস্বত্ব চুরি করে ২০ কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বঙ্গবন্ধু কর্নারের জন্য বই কেনার প্রকল্পে এসব অনিয়মের পেছনে রয়েছে ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ নামে দুটি প্রকাশনা সংস্থা।

জানা গেছে, মুজিববর্ষে দেশের ৬৫ হাজার ৭০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু কর্নারের’ জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে বই কেনা প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। এর ধারাবাহিকতায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এই প্রকল্পের জন্য ক্রয় প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে (স্মারক নাম্বার ৩৮০১ ০০০০ ০০৫০৭ ৭০, ১৯-১২৫৪) আটটি বই কেনার প্রস্তাব রয়েছে। সেই আটটি বইয়ের মধ্যে দুটি বইয়ের গ্রন্থস্বত্ব ও মেধাস্বত্ব নিয়েই যত কাণ্ড। একটি ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ এবং অন্যটি বঙ্গবন্ধুর জেলজীবন নিয়ে বই ‘৩০৫৩ দিন’। ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ বইটির প্রথম সংস্করণে উল্লেখ আছে, বইটির প্রকাশক ‘মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ এবং বইগুলো কেনার যে প্রাথমিক তালিকা করা হয়, সেখানেও বইটির প্রকাশক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়েরই নাম রয়েছে। ‘৩০৫৩ দিন’ বইটির লেখক বা প্রকাশক বাংলাদেশ কারা অধিদপ্তর এবং এর গ্রন্থস্বত্বে রয়েছে বাংলাদেশ জেল। তারপরও চূড়ান্ত ক্রয় প্রতিবেদনে দুটি বইয়ের ক্ষেত্রে সম্পাদক নাজমুল হোসেন ও প্রকাশকের নাম জার্নি মাল্টিমিডিয়া দেখা গেছে।

অভিযোগ মতে, প্রকল্পের মোট ২৮ কোটি ৭৮ লাখ ১২ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে ২০ কোটি ৭০ লাখ ৮৬ হাজার ৪০০ টাকাই পাচ্ছেন ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে নাজমুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক পদে কর্মরত রয়েছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নাজমুল বলেছেন, সমস্ত নিয়ম মেনেই তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নারের জন্য বই সরবরাহ করেছেন।

এদিকে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে। আর সবকিছু পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত বই সরবরাহকারীকে চেক ছাড় করবে না বলে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

এ বিষয়ে সাংবাদিক অমিতাভ দেউরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর কিংবা এর সঙ্গে যারা জড়িত তারা কেউ আমাকে জানায়নি। আমি হঠাৎ করে জানতে পারলাম, আমার নাম মেধাস্বত্ব যেভাবে সংরক্ষিত ছিল তা আর নেই। সাম্প্রতিক যে প্রকাশনা সেখানে আমার সে অধিকার নেই। আমি আমার অধিকার ফিরে পেতে চাই। তার জন্য আমি যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।’

এর আগে বঙ্গবন্ধু কর্নারের জন্য বিতর্কিত প্রাথমিক ৩৯টি বইয়ের তালিকা সংশোধিত হয় লেখক ও প্রকাশকদের বিপুল প্রতিবাদ ও আলোচনা-সমালোচনার মুখে। ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ বইটি ২০১৮ সালের ৭ জুন প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। অথচ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গত ২৭ জুনের প্রজ্ঞাপনে দেখা যাচ্ছে বইটির সম্পাদকের নাম অমিতাভ দেউরী অবিকৃত থাকলেও বদলে গেছে প্রকাশকের নাম। প্রজ্ঞাপনে দেখা যাচ্ছে, বইটির প্রকাশক জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড। যদিও প্রথম সংস্করণে আছে বইটির প্রকাশক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। আর বইগুলো কেনার প্রাথমিক তালিকায় বইটির প্রকাশক মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। দ্বিতীয় সংস্করণে দেখা গেছে, ক্রেডিট লাইনের সবার নিচে থেকে একেবারে সম্পাদকের নামের ওপরে উঠে এসেছেন নাজমুল হোসেন। তার পরিচয় দেখানো হয়েছে প্রধান গবেষক ও প্রধান নির্বাহী, জার্নি। তৃতীয় সংস্করণে আমূল পরিবর্তন দেখা গেছে। প্রকাশকেরই নাম বদলে গেছে। প্রকাশক মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের জায়গায় ‘সমন্বয়ক ও প্রকাশক’ হিসেবে ছাপা হয়েছে নাজমুল হোসেনের স্ত্রী শারমীন সুলতানার নাম। সব সংস্করণেই উপদেষ্টা কিংবা প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নাম রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ বইটির প্রকাশক বদল ও ক্রেডিট লাইন বারবার পাল্টানোর ঘটনায় বইটির সম্পাদক অমিতাভ দেউরী গত ৩ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন-২), মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এবং নাজমুল হোসেনের নামে একটি লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছেন।

অন্যদিকে ‘৩০৫৩ দিন’ বইটির প্রকাশনা বিষয়ে আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশা বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত আমার জানা নেই। আমি দেখিনি। তবে মন্ত্রণালয় (স্বরাষ্ট্র) থেকে আমার কাছ থেকে একটি কাগজ চেয়েছিল। আমি মন্ত্রণালয়কে কাগজ পাঠিয়েছি।

জালিয়াতির অভিযোগ সম্পর্কে নাজমুল হোসেন বলেন, জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড একটি গবেষণাধর্মী ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ এবং জেলের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সমগ্র কারাজীবন নিয়ে ‘৩০৫৩ দিন’ বই দুটির স্বত্ব জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের নামে। কপিরাইট সংক্রান্ত কাগজপত্র রয়েছে। সমস্ত নিয়ম মেনেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নারের জন্য বই সরবরাহ করা হয়েছে। অমিতাভ দেউরীর মেধাস্বত্ব খর্ব হয়নি। তার অবস্থান যেখানে থাকার কথা সেখানেই আছে। অথচ তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। যা খুবই দুঃখজনক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু কর্নারের জন্য বই কেনা প্রকল্পে এসব অনিয়মের পেছনে রয়েছে প্রকাশনা সংস্থা জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড এবং স্বাধীকা পাবলিশার্স। এই দুই প্রকাশনা সংস্থা দুর্নীতি করে ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ মতে, প্রকল্পের মোট ২৮ কোটি ৭৮ লাখ ১২ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে ২০ কোটি ৭০ লাখ ৮৬ হাজার ৪০০ টাকাই পাচ্ছেন দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে একই ব্যক্তি। নাজমুল হোসেন নামে এই ব্যক্তি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রতিবেদক পদে কর্মরত।

এ ব্যাপারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, আমরা এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। মন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..