বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরং প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমণ। মৃত্যুর ঘটনায়ও লাগাম পরানো যায়নি। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নন তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, এ বছর ২১ জুলাই শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান ধর্মতলায় হবে না। পরিবর্তে প্রতিটি বুথে ছোট ছোট করে শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান পালন করতে হবে নেতা–কর্মীদের। তবে সেখানেও ২৫ জনের বেশি উপস্থিত থাকা যাবে না।
শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে এক বৈঠকে দলের নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন নেত্রী। প্রতি বছর ধর্মতলায় বিশাল আকারে শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান হয়। সেই অনুষ্ঠানে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে তেমন অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়। আবার ছোট আকারে ধর্মতলায় শহিদ দিবস করা যাবে না। দলের কর্মী–সমর্থকরা ভিড় করবেনই। তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে ছোট আকারে রাজ্য জুড়ে ব্লকে ব্লকে শহিদ দিবস পালনের নির্দেশ দিয়েছেন নেত্রী। উল্লেখ্য, এর আগে আরও একবার শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান ধর্মতলায় করেনি তৃণমূল। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার বছরে শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ব্রিগেডে।
এদিন বৈঠকে দলের কর্মসূচি নিয়ে নেতাদের রীতিমতো বকাঝকা করেন নেত্রী। প্রশ্ন তোলেন, বিজেপি যেখানে কথায় কথায় কর্মসূচি নিচ্ছে, তখন তৃণমূল নেতাদের পথে দেখা যাচ্ছে না কেন? তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে পেট্রোল–ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, কয়লা খনিতে বেসরকারি বিনিয়োগ নিয়ে বেশ কিছু কর্মসূচির কথা ঘোষণা করে দেন। জানিয়ে দেন, সব কর্মসূচিতে তৃণমূল নেতা–কর্মীদের উপস্থিত থাকতে হবে। এদিকে, দলের বেশ কিছু হেভিওয়েট নেতার আচরণ নিয়ে আড়ালে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই মনে করছেন, তৃণমূলের পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর নাকি বেশ কিছু বিধায়ককে প্রার্থী করার বিপক্ষে মত দিয়েছেন। তাই অভিযোগ উঠেছে, সেইসব বিধায়ক দলের সঙ্গে থেকেও যেন নেই। এমনকী, তাঁদের অনেকে নাকি দলবদলও করতে পারেন। বিষয়টি কানে গিয়েছে মমতারও। এদিন তিনি বৈঠকে পরিষ্কার জানিয়ে দেন, যাঁরা বিধায়ক রয়েছেন, তাঁরা সকলেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন।
এ ছাড়া আমফান–দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া নিয়ে বেশ কয়েকজন বিধায়ক ও নেতাকে এদিন রীতিমতো ভর্ৎসর্না করেন মমতা। যে সব এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি হতে দেরি হচ্ছে, সেইসব এলাকার বিধায়ক ও নেতাদের কাছে কৈফিয়ত তলব করেন তিনি। জানিয়ে দেন, দলের ভাবমূর্তি খারাপ হলে কাউকে রেয়াত করা হবে না। দুর্নীতির সঙ্গে কোনও রকম আপস করা হবে না। কেউ দুর্নীতিতে জড়ালে, নেত্রী তাঁদের বরদাস্ত করবেন না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন।