ওয়েব ডেস্ক: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় চাঞ্চল্যকর আবুল কাশেম হত্যা মামলার বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে ২৩ বছরে। এই হত্যা মামলায় ১০ আসাসিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক ড. মো. আলমগীর এ রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আলী হায়দার।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, গজারিয়া উপজেলার চর বাউসিয়া গ্রামের মো. নাছির উল্লাহ ওরফে নাছির, নুরু মিয়ার ছেলে মোশারফ হোসেন, হেলাল উদ্দিনের ছেলে রিপন, মৃত মনু মিয়ার ছেলে আ. রাজ্জাক ওরফে কানা রাজ্জাক, মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে আক্কাস আলী, সিরাজ মেম্বারের ছেলে রিপন, আলেক জানের ছেলে শাহ আলম, মো. খোরশেদের ছেলে শফিক, হক মিয়ার ছেলে শফিকুল ওরফে শফিক।
রায় ঘোষণার সময় আসামি আলম, রাজ্জাক, দেলোয়ার, হবি, মোশারফ, রিপন, শফিক হাজির থাকায় তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপর পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন আদালত। মামলায় ১৫ জন আসামি করা হলেও অপর ৫ জন আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালের ৭ জুন রাতে উপজেলার চর বাউসিয়া গ্রামে এই মামলার ভিকটিম নিহত আবুল কাশেম এর লাশ জজ মিয়ার বাড়ির পাশে পড়ে আছে বলে তার বাড়িতে জানায় একই এলাকার শান্তি বেগমসহ আরও কয়েকজন।
এ সময় নিহতের ছিলে রিপন ও তার মা, ভাই, চাচা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায় আবুল কাশেমের মাথার বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কাটা জখম আছে। নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে।
এ ঘটনায় রিপন বাদী হয়ে শান্তি বেগম, জজ মিয়া ও জয়নালকে আসামি করে পরের দিন গজারিয়া থানায় মামলা করেন।
পরে সন্দেহভাজন আসামি মোশারফ, আ. রাজ্জাক, শাহ আলম ও সফিকুলকে গ্রেফতার করলে তারা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। আসামিদের জবানবন্দির উপর ভিত্তি করে পুলিশ অপর আসামিদের আটক করতে সক্ষম হয়। দীর্ঘ ২৩ বছর মামলা চলমান ছিল বিচার আদালতে। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ওই ১০ আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে এই রায় ঘোষণা করেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আরিফ হোসেন জানান, গজারিয়ায় চাঞ্চল্যকর আবুল কাশেম হত্যা মামলায় ২৩ বছর পর বিচার কার্য সম্পন্ন হয়েছে। আদালত ১৫ জন আসামির মধ্যে ১০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন। অপর ৫ জনের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। আদালতের রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট পোষণ করছি।