সুমন, মোংলা(বাগেরহাট)সংবাদদাতাঃ মোংলা বন্দরের বিদেশী জাহাজ কেন্দ্রীক গড়ে ওঠা সংঘবদ্ধ চোরাচালানকারী চক্র আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বন্দরের প্রভাবশালী মহলের ইন্দনে গড়ে ওঠা এ চক্রের শক্তিশালী সদস্যরা বন্দরে আসা বিভিন্ন বিদেশী জাহাজ থেকে নদী পথে জ্বালানী তেল, মবিল, ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ,মেশিনারিজ, রং, ব্যারেল, নানা ধরনের লোহা, ওয়ার রোপ, হাসিল (জাহাজ বাঁধার বড় রশি), ইলেকট্রনিক্স পণ্য, নানা ধরনের মাদক (বিদেশী হুইস্কি, বিয়ার, ইয়াবা প্রভৃতি) সহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিষপত্র অবাধে পাচার ও লুটপাট করে আনছে। কাষ্টমস, পুলিশ, কোস্ট গার্ড, বন্দর প্রহরীসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে চোরাকারবারী চক্রের সদস্যরা দিনে রাতে দেধারছে এসব পণ্য পাচার ও লুটপাট করছে। এতে সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব।
আবারও মোংলা বন্দরের বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজ থেকে পাচারের সময় ডিজেলসহ দুই চোরাকারবারীকে আটক করেছে মোংলা থানা পুলিশ। শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাতে জয়মনির ঘোল মাঝির ঘাট এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি ড্রাম ভর্তি ডিজেল ও বহনকৃত একটি জালী বোট সহ তাদের আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, মোংলা বন্দর কেন্দ্রীক গড়ে ওঠা দেশী-বিদেশী তেল পাচারকারী চক্র দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে তারা রাতের অন্ধকারে প্রতিনিয়ত জাহাজ ও বোটকার্গো থেকে তেল পাচার করছে। চোরাচালান বা চোরাকারবারীদের দমন করতে পুলিশ, কোষ্টগার্ড, নৌ-বাহিনীসহ আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছে। তার পরেও মোংলা বন্দরে চোরাকারবারীদের সাথে রয়েছে একটি প্রভাবশালী গ্রুপ। তারা মুলত এ তেল পাচারের সাথে ওৎপ্রতভাবে জড়িত রয়েছে। ইতি পুর্বে এদের হাত থেকে বেশ কয়েকটি চালানও আটক করে আইনশৃংঙাখলা বাহিনী। এ যাবত আটক করা হয়েছে পাচার সিন্ডিকেট চক্রের ৯ সদস্যকে। শনিবার রাতে প্রায় এক হাজার লিটার ডিজেলসহ ২জনকে আটক করে পুলিশ।
গোপন সংবাদের সুত্রধরে জয়মনির ঘোল এলাকায় মোংলা থানার এস আই মোঃ রইচ উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালায়। এসময় তাদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে ডিজেল ভর্তি জালী বোট ফেলে দৌড়ে পালানোর সময় ধাওয়া করে মৃত হায়দার জোমাদ্দারের ছেলে মোঃ রাসেল জোমাদ্দার (২৭) ও মোঃ রব্বান খাঁন’র ছেলে মোঃ ইউনুছ খানঁ (৩২) কে আটক করে। এসময় তাদের সাথে থাকা আরো ২/৩ জন দৌড়ে পালিয়ে যায় বলে জানায় পুলিশ। আটককৃতদের বাড়ী মোংলা পোর্ট পৌরসভার শেহালাবুনিয়ার বটতলা ও জয় বাংলা সড়কে।
আটককৃতদের স্বীকারুক্তি মতে ঘাটে বাধা একটি ফাইবারের তৈরী জালী বোটে তল্লাশী চালিয়ে বেশ কয়েকটি ড্রাম ভর্তি চোরাই ডিজেল উদ্ধার করা হয়েছে। পরে পুলিশ বাদী হয়ে আটককৃত দুইজন সহ আরো অজ্ঞতনামা ২/৩ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। শেষে রোববার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে আটক ওই দুইজনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম।