বনানী (ঢাকা) প্রতিনিধিঃ রাজধানীর কড়াইল বস্তির বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি- বস্তিতে বৈধ পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ দেওয়া। দাবির মুখে পানি ও বিদ্যুৎ লাইন কিছু এলাকায় বৈধভাবে পেলেও গ্যাস পুরোটাই অবৈধ। বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি বস্তির বাসিন্দারা নিজ খরচে নিচ্ছেন পানির বৈধ সংযোগ।
বনানীতে অবস্থিত কড়াইলের বস্তিটি ‘কড়াইল বস্তি’ নামে পরিচিত হলেও এর বিভিন্ন ভাগ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কড়াইল, এরশাদ নগর, গোডাউন ও বেদে বস্তি। বস্তিটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন। তবে বেশিরভাগ অংশ ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মোট ভোটারের ৪০ শতাংশ বস্তিবাসী। বাকি ভোটার অন্য এলাকার। বস্তির কিছু অংশ ২০ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে।
বেসরকারি সংস্থা দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) ও সিবিও সূত্র অনুযায়ী, কড়াইল বস্তিতে বর্তমানে অধিকাংশ ঘরে বৈধ পানির সংযোগ রয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, এখন যাঁরা পানির সংযোগ নিচ্ছেন তাঁদের খরচ হয় মোট ১৩ হাজার ৩৫০ টাকা। এর মধ্যে ডিমান্ড নোটের জন্য ৮ হাজার ৩০৪ টাকা, মিটারের জন্য ৫ হাজার টাকা এবং প্রয়োজনীয় কাগজ ফটোকপির জন্য ৪৬ টাকা। বস্তির বাসিন্দারা এ টাকা সাধারণত তিন কিস্তিতে দিয়ে থাকেন।
বস্তিবাসী শিউলি আক্তার, রানা, কবির হোসেনসহ অনেকেই নিজ খরচে বৈধ সংযোগ নিয়েছেন। তবে তারা পানির সংযোগ নিয়ে নানা অভিযোগও করেছেন।
একাধিক বস্তিবাসী অভিযোগ করেছেন, কড়াইল, এরশাদ নগর, গোডাউন ও বেদে বস্তিতে যে সমস্ত বৈধ পানির সংযোগ আছে সেখানে বিলের কাগজ যিনি দিতে আসেন প্রতি মাসে বিল প্রতি তাকে ১০০ টাকা দিয়ে বিলের কাগজ নিতে হয়।
বস্তির বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস জানান, এরশাদ নগরে পানির লাইনের মেইন সুইচ। যখন পানির স্প্রিড কম থাকে তখন নান্দাইল গ্রুপের লোকেরা ওইখান থেকে বেদে বস্তি ও গোডাউন বস্তির লাইনটা বন্ধ করে রাখে। নান্দাইল গ্রুপ কড়াইল বস্তিতে অবৈধ পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস সরবরাহের সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তারা বৈধ মিটার থেকে বাইপাস করে আরেকটা লাইন বের করে বস্তিতে অবৈধ লাইন দেয়। শুধু পানির জন্য প্রতি ঘর থেকে ২০০-৩০০ টাকা নেয় তারা।
গোডাউন বস্তির বাসিন্দা রানা অভিযোগ করেন, বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় যার যার বাসায় টিউবওয়েল আছে তার তার বাসায় মিটার আছে। মিটার অনুযায়ী কে কত ইউনিট খরচ করেছে লোক এসে মিটার দেখে লিখে নিয়ে যায়। পরে যে এসে বিল দিয়ে যান তাকে প্রতি ঘর থেকে যেসব ঘরে টিউবওয়েল আছে সেসব ঘর থেকে ১০০ টাকা করে দিতে হয়।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার কথা হলো আমি যত টাকার পানি খরচ করি প্রতি মাসে বিল অনুযায়ী টাকা দিতে হয়। গতমাসে পানি আসেনি তবুও ১৫০ টাকা বিল আসছে। যে আমার বাসায় বিলের কাগজ দিয়ে যায় তাকেও যদি ১০০ টাকা দিতে হয় তাহলে এটা কেমন ধরনের যৌক্তিকতা!