দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ করোনাভাইরাসের প্রভাবে ভরা মৌসুমে খুলনা থেকে হিমায়িত বাগদা ও গলদা চিংড়ি রপ্তানি প্রায় বন্ধ। ফেব্রুয়ারির তুলনায় মে মাসে রপ্তানি অর্ধেকে নেমেছে। ফলে আপাতত কর্মহীন হয়ে পড়েছেন হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিকারক কারখানার ১৩ হাজারের বেশি শ্রমিক ও কর্মচারী। ক্ষতির মুখে পড়েছেন রপ্তানিকারকরাও।
সফল চিংড়ি চাষি খায়রুল ইসলাম সজিব। স্বল্প পরিসরে আধা নিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষ করে তিনি এখন স্বাবলম্বী। বছরের এ সময়টা চিংড়ি ঘের নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস কেড়ে নিয়েছে তার কর্মচঞ্চলতা। মাছের খাদ্য ও পোনা সংকটের কারণে এ বছর যে পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রা সেটা পূরণ করা সম্ভব হবে না। তাই লোকসানের শঙ্কায় দিন কাটছে তার। সজিব বলেন, আমাদের বিনিয়োগ করা টাকা আদৌ ফেরত আসবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি।
সজিবের মতো আরও অনেক যুবকের চিংড়ি চাষের সাফল্যের গল্প থাকলেও একই শঙ্কায় ভুগছেন খুলনাঞ্চলের প্রায় আড়াই লাখ প্রান্তিক চিংড়ি চাষি । তারা বলেন, মাছ বিক্রি নেই আর যারা সাধারণ খরিদ্দার রয়েছেন তারা অত্যন্ত কম দাম বলছেন। এছাড়া পুকুর পরিচালনা করতে গেলে কিছু মেশিন প্রয়োজন হয়। এগুলো বাইরে থেকে আসে, সেগুলো আমরা পাচ্ছি না।
রপ্তানিকারকরা জানান, প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে চিংড়ি সরবরাহ কমার পাশাপাশি বিদেশে চাহিদা কমায় ১০ ভাগে নেমে এসেছে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি। চিংড়ির রপ্তানি ৩ মাস বন্ধ থাকায় কর্মহীন ২৬টি কারখানার ১৩ হাজারেরও বেশি শ্রমিক-কর্মচারী।
চিংড়ি রপ্তানিকারক এম এ হাসান পান্না বলেন, হ্যাচারিগুলো পোনা দিতে পারছে না। আমরা বাইরে থেকে ব্রুড আনি সেগুলো আনতে পারছি না।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বললেন, চিংড়ি রপ্তানি আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মজিনুর রহমান বলেন, কৃষকরা যেন সহজ শর্তে ঋণ পায় সেজন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছি।
খুলনা থেকে গড়ে প্রতি বছর রপ্তানি হয় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার হিমায়িত চিংড়ি। আর চলতি অর্থবছরে ৪ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন