নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ২০২০-২১ সালের জাতীয় বাজেটে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বিশেষ বরাদ্দ এবং কৃষক ও প্রকৃত উদ্যোক্তাদের সুদমুক্ত ঋণ প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট অব বাংলাদেশ (এনআইবি)। সংগঠনের সম্পাদক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এনআইবির সম্পাদক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে। বিগত আড়াই মাসে বদলে গেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও শ্রেণিকাঠামো। করোনাভাইরাসে আক্রান্তসহ সাধারণ রোগী ন্যূনতম চিকিৎসা সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। বেকার হয়ে লাখ লাখ প্রবাসী দেশে ফিরে আসছে, কর্ম হারিয়ে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২০ শতাংশ থেকে বেড়ে প্রায় ৪০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত ভেঙে পড়া স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও বিপর্যয়ের মুখে পড়তে যাওয়া অর্থনীতিকে টেনে তোলা। বাজেটে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করা উচিত। বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া উচিত স্বাস্থ্য খাতে, কৃষক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিনা সুদে ঋণ দেওয়া এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বৃদ্ধি করা।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই খাতে জাতীয় বাজেটের ১৫ শতাংশ এবং জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। জরুরি তহবিল গঠন করে আপদকালীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মতে, ডাক্তার, চিকিৎসক এবং টেকনোলজিস্টের অনুপাত মেনে দক্ষ জনশক্তির দ্রুত নিয়োগ এবং অবকাঠামো বাড়াতে হবে। সব নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালু করতে হবে।
এনআইবির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, লকডাউনের ফলে পণ্য বিপণন ব্যবস্থা ভেঙে পড়া, পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়াসহ বিভিন্ন সঙ্কটে রয়েছে দেশের কৃষি খাত। এ অবস্থায় এই খাতের উন্নয়নে কৃষকদের বিনা সুদে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ সুবিধা প্রদানসহ কৃষি উপকরণ, বাজারজাতকরণ ও কৃষির বহুমুখীকরণে ভর্তুকির যথযাথ ব্যবহার করা উচিত। পাশাপাশি শক্তিশালী পণ্য পরিবহন ও বিপণন ব্যবস্থার কাঠামো দাঁড় করানো এবং ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আগামী বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ থেকে বাড়িয়ে চার লাখ টাকা করা দরকার। কর্মহীনদের জন্য বিনা সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বা এককালীন অনুদান ও দক্ষতা উন্নয়নে সার্বিক সহায়তা দিতে হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, করোনার এই সময়ে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে বরাদ্দ এবং সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়াতে হবে। এই খাতে পেনশন ও শিক্ষাবৃত্তি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য কমে যাওয়ায় গণপরিবহনে ব্যবহৃত জ্বালানির দাম হ্রাস এবং বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবি জানানো হয়।