আমি তখন ক্লাস ফাইভ সিক্সে পড়ি
ছাত্র হিসেবে একেবারে নিম্ন কোয়ালিটি যা ভাবা হয়, ঠিক তার চাইতেও আরও কম। ক্লাস সিক্স, সেভে্ন, এইটে থাকাকালিন আমি যদি স্কুলে স্কাউটিং না করতাম তবে প্রতি ক্লাসেই আমাকে ২ বছর থাকতে হইত। আমি না কিছু বুঝতাম না, বুঝতে চাইলেও আমার ধ্যান খেয়াল অন্য কিছুতে। আব্বা বরাবরই সেই রেজাল্টে খুব বেশী কিছু না বললেও আম্মা বেশ অস্বস্তিতে থাকতেন।
যাইহোক, ক্লাসে একটু ভোদাই এবং মেধাহীণ স্টুডেন্টদের ক্লাসমেট খুব একটা জটেনা বা মেশার ভালো বন্ধুও খুব একটা পাওয়া যায় না। ক্লাসে শেষ বেঞ্চের ২/১ টি বেঞ্চের আগেই আমার বসার স্থান নির্ধারিত থাকতো সবসময়। আবার ক্লাস চলাকালীন ক্লাস পারটিসিপেশন জিরো পর্যায়ে থাকাতে ১-২০ নম্বর রোলধারীদের অত্যাচারে পিছনেই বসতে হতো।
একদিন পিছনের বেঞ্চে আমার পাশের দুই ক্লাসমেট শ্রী পবিত্র কুমার দাস এবং আল নুর টিফিন টাইমে একটা আনার ফল ভেঙে দুইজন শেয়ার করে খাচ্ছিল। ভাঙ্গার সময় ২/১ টি আনার বেঞ্চের নিচে পড়ে যায়। তারা যেহেতু আমাকে চাওয়ার পরও দেয় নাই তাই তাদের অনুপস্থিতিতে নিচ থেকে উঠাইয়া চুপিসারে খাচ্ছিলাম।
আমি সেইটা এখনো মনের মধ্যে গেথে রেখে ১০ টি আনার গাছ আমার বাগানে রোপণ করেছি। ১ বছরেই ফলে পরিপূর্ণ। যারাই আসে ২/১ টি করে দেই। আমার ভালো লাগে, আর পিছনের নানা কথা গুলো মনে আসে।
আমার ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত স্কুলটা ১৯৭৫ সালে স্থাপিত হয়। এই ৪৫ বছরে কেউ পিএইচডি করতে পারে নাই আমি ছাড়া যেহেতু আমার স্কুল শিক্ষকদের যারা বেঁচে আছেন তাদের সাথে আমার যোগাযোগ আছে জানতে পারি আপডেট বা কেউ বাগানও করে নাই। হয়তো বড় বড় জব করেন।
আমার বাচ্চাদের ক্লাসের পারটিসিপেশন অনেকটাই আমার মতো হয়তো খাদ্য বা খাবারের জন্য করবেনা ইনশাল্লাহ। বউকে বলি যখন বুঝতে পারবে তাদের জীবনে পরাশুনা দরকার তখন এমনিতেই করবে। তাড়াহুড়ার কিছুই নাই। বড় জবটাই জীবনের সব না। জব তো জব।
লেখক:আবু বক্কর সিদ্দীক প্রিন্স