প্রচন্ড ডানপিটে স্বভাবের ছেলে
যার স্বপ্ন ছিলো আইসক্রিমের দোকানের মালিক হওয়া। ছেলেটার নাম মুসতাকিম রহমান আমিন, বাবা মুজিবুর রহমান আকন্দ পেশায় সরকারী কর্মকর্তা হওয়ার সুবাদে ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশের বিভিন্ন শহরে। বাবা মুজিবুর রহমান ও মা জসিমা রহমানের অতি আদরের একমাত্র পুত্র।
শৈশব কেমন ছিলো? জানতে চাইলে দৈনিক প্রত্যয়কে বলেন, ছোটবেলায় পড়াশোনা করতে চাইতাম না খেলার নেশা ছিলো খুব। সারাদিন পাড়ার বন্ধুদের সাথে ঘুড়াঘুড়ি করা আর ক্রিকেট খেলা ছিলো সবচেয়ে আনন্দের। আর সন্ধ্যায় মায়ের হাতের মার ছিলো অবধারিত।
রাজধানীর ন্যাশনাল ব্যাংক পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি হয়ে, সেখান থেকেই এস. এস.সি পাশ করেন। বাবার ইচ্ছাতে ঢাকা কমার্স কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকেে ভর্তি হন। এইচএসসি পাশ করার পরেই বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যাওয়া। সে সম্পর্কে জানতে চাইলে দৈনিক প্রত্যয়কে বলেন, আসলে আমরা যতটা সহজ ভাবি,বিদেশে পড়তে যাওয়ার প্রক্রিয়া ততটা সহজ ছিলো না আমার জন্য। এইচএসসি পাশের পর হুট করেই ভিসার জন্য এপ্লাই করি ডেনমার্কেে। সেখানে ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়া এবং ভিসা এপ্রুভ হতে ৬ মাস সময় লেগে যায়।
হটাৎ করেই এতদিন ফ্লাইট ঠিক হয়। তারিখটা ছিলো ১৫ অক্টোবর ২০১৬ সালের এক ভোর। অনেকটা নিভৃতেই দেশ ত্যাগ করেন।
তারপর ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের নিলস ব্রোকস বিজনেস কলেজে ইকনোমিক্স এন্ড ম্যানেজম্যান্ট থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন।
ডেনমার্কেে পৌছানো ও শুরুর দিনগুলো কেমন ছিলো জানতে চাইলে দৈনিক প্রত্যয়কে জানান,ডেনমার্ক প্রবাসী দুইমামা থাকতেন, ইকবাল মামা ও বাবু মামা। সেক্ষেত্রে খুব একটা সমস্যা হয়নি বলা যায়। প্রথমদিকে খুব খারাপ লাগতো বাবা- মাকে খুব মিস করতাম।
তারপর প্রশ্ন করি, ব্যবসায় কিভাবে সম্পৃক হলেন?
আমিন দৈনিক প্রত্যয়কে বলেন, গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর কি করা যায় ভাবতে থাকি, কিভাবে শুরু করা যায়? ২০১৯ সালে একবার ঘুরতে গিয়েছিলাম পর্তুগাল। সেখানকার পরিবেশ, সংস্কৃতি ও ব্যবসায়িক আবহ আমাকে প্রচন্ডভাবে আকৃষ্ট করে। আমি সিদ্ধান্ত নেই এখানেই থাকবো এবং যা করার এখানেই করবো। তারপর পর্তুগাল সরকারের ব্যবসায়িক লাইসেন্স নিই। প্রথমে ছোট আকারে একটি সুপার শপ চালু করি।দেখতে দেখতে পরিসর বাড়তে লাগলো। ধীরে ধীরে একজন পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী বনে গেলাম। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।
জানতে চেয়েছিলাম, আজকের এই অবস্থানের পিছনে কার অবদান সবচেয়ে বেশি? তিনি জানান,মা- বাবার দোয়া আর ভালোবাসা সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। তারা সবসময় পাশে ছিলেন এবং থাকবেন। যার কথা না বললে অন্যায় হবে, কিনি হলেন আমার দুলাভাই শেখ রিয়াজ উদ্দিন ( বিশিষ্ট ব্যবসায়ী), যিনি আমকে সাহস জুগিয়েছেন। গাছের ছায়ার মত পাশে ছিলেন।
দীর্ঘদিন তো প্রবাসে থাকলেন দেশের কথা মনে পড়ে কি? তিনি উত্তরে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, সবচেয়ে মনে হয় দেশের কথা । এতো উন্নত জীবনযাপন ও নান্দনিক সৌন্দর্য থাকা সত্ত্বেও আমার মন পড়ে থাকে আমার শৈশবে কাটানো দিনগুলোতে।
সবশেষে তিনি সবার কাছে দোয়া চান, সকলের দোয়ায় আমি অনেক দূর যেতে চাই….
এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..