নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে রয়েছে হরেক রকম খাদ্যদ্রব্যের ভাসমান দোকান। যেখানে মিলছে বিভিন্ন ধরনের আচার ফুচকা, চটপটি, পাপড়, ঝালমুড়ি, আইসক্রিম, শরবতসহ বিভিন্ন ধরনের ভাজাপোড়া খাবার। ভ্রাম্যমাণ এসব দোকানে খাবার ঢেকে রাখা হয় না বলে এসব খাবারে সব সময় ধুলাবালি পড়া এসব খাদ্য স্বাস্থ্যসম্মত নয়, অথচ সচেতনতার অভাবে সেই খাবারই স্কুল পডুয়া সন্তানকে কিনে দিচ্ছেন অভিভাবকরা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরাই কিনে খাচ্ছে এসব অখাদ্য।
রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত টিএন্ডটি আদর্শ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের গেইটের সামনে যে ফুচকার দোকান বসে সে দোকানের ফুচকার মান অত্যন্ত নিম্নমানের অস্বাস্থ্যকর। যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর! অতি মুনাফার লোভে চটপটিতে দেওয়া হয় বাসি পঁচা ডাবলি বুট ও নিম্নমানের মশলা। প্লেট, বাটি, চামচ ঠিক মতো ধোয়া হয়না! এছাড়া ফুচকার সাথে দেওয়া টকে ব্যবহার করা হয় নোংরা দুর্গন্ধ পানি ও পঁচা তেঁতুল। দুই তিন দিনের বাসি টকও খেতে দেওয়া হয়। এই ফুচকা খেয়ে প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অভিভাবকরা এসব অভিযোগ করেছেন।
শিশু শিক্ষার্থী সুমাইয়ার মা রহিমা বেগম বলেন, স্কুলের সামনে বিক্রি হয় পাপড়। এটা বানাতে ব্যবহার করা হয় মাত্রাতিরিক্ত বেকিং সোডা যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর জেনেও বাচ্চাদের বায়নার মুখে অভিভাবকরা কিনে দেন। এধরনের ক্ষতিকর খাবার বিক্রিতে কারো কোন নজরদারী নেই!
অস্বাস্থ্যকর জেনেও এমন অস্বাস্থ্যকর খাবার কেন কিনে দিচ্ছেন? জানতে চাইলে কয়েকজন অভিভাবক বলেন, বুঝতে পারছি অস্বাস্থ্যকর খাবার তবুও সন্তানের জেদে কিনে দিতে হচ্ছে। স্কুলের সামনে খোলা খাবার বিক্রি বন্ধ করলে এই সমস্যা কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করেন তাঁরা।
টিএন্ডটি স্কুলের সামনে আচার বিক্রি হতে দেখা যায়। অভিভাবক শারমিন আক্তারকে আচার কিনতে দেখে ‘এ আচারের কি মেয়াদ আছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টাতে সচেতন হওয়া জরুরি ছিল। আমরা এতদিন ভাবতাম এই আচারগুলো হয়তো প্রতিদিন বানিয়ে আনে। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি এটা অনেক আগের আবার প্রতিদিন ধুলোবালি পড়ে অস্বাস্থ্যকর খাবারে পরিণত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাস্তার পাশে বিক্রি করা খোলা খাবার খেলে ক্ষুধামন্দা, জন্ডিস, হেপাটাইটিস, পেটের পীড়া, পেটের প্রদাহসহ মারাত্মক সব রোগ হতে পারে।
কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করেছেন টিএন্ডটি স্কুলের দারোয়ান টাকা খেয়ে এসব ভাসমান হকারদের বসতে দেয়। স্কুলের গেইটে যেসব হকার বসেন তাঁরা সবাই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের কোনো না কোনো আত্মীয় বা পরিচিত। এসব ভাসমান দোকান বসা বন্ধ করা প্রয়োজন।