স্পোর্টস ডেস্ক: কোর্টে বেশ কিছুুক্ষণ লড়াইয়ের পর জয় পেলেন বেলারুশের নারী টেনিস তারকা আরিয়ানা সাবালেঙ্কা। কিন্তু জয়ের পর দেখা গেল সম্পূর্ণ ভিন্ন এক দৃশ্য। প্রতিপক্ষ দুজন স্বভাবসিদ্ধ হাত মেলানোয় গেলেন না। অবশ্য সাবালেঙ্কা এগিয়ে নেট ধরে দাঁড়িয়েছিলেন কিছুক্ষণ। তার হতাশ চেহারা দেখে মনে হয়েছিল এই মাত্র শেষ হওয়া ম্যাচে বুঝি তিনি হেরে গেলেন! মূলত অন্যপ্রান্তে থাকা ইউক্রেনীয় তারকা এলিনা সভিতোলিনা নিয়ম মানার কোনো সৌজন্যতা দেখাননি। হাত না মিলিয়েই কোর্ট ছাড়েন তিনি।
এদিন ইউক্রেনের সভিতোলিনার সঙ্গে সাবালেঙ্কার লড়াইটা বেশ জমে উঠেছিল। প্রতিপক্ষ সাবালেঙ্কা রাশিয়ান না হলেও ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে সভিতোলিনার দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান রয়েছে সাবালেঙ্কার বেলারুশের। তাই হয়তো হেরে গেলেও ম্যাচজুড়ে সভিতোলিনার মধ্যে এক ধরনের আবেগ কাজ করছিল। কিন্তু সাবালেঙ্কার অভিজ্ঞতায় ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়েন সভিতোলিনা। প্রথম সেট ৬-৪ জিতে যান সাবালেঙ্কা।
দ্বিতীয় সেটের শুরুটা অবশ্য একটু অন্যরকম হয়েছিল। প্রথম দু’টি গেম জিতে যান সভিতোলিনা। কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিলেন সাবালেঙ্কা। কিন্তু সেখান থেকে তাকে আবার খেলায় ফেরালেন প্রতিপক্ষ নিজেই। সভিতোলিনার একের পর এক আনফোর্সড এরর কাজে লাগালেন সাবালেঙ্কা। ফলে ০-২ থেকে তিনি ২-২ করে ফেলেন। তারপর সভিতোলিনার সার্ভিস ভেঙে এগিয়ে গেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় সেটও ৬-৪ জিতে সেমিফাইনালে পৌঁছে যান সাবালেঙ্কা।
সভিতোলিনার দেশে রাশিয়া সামরিক আক্রমণ চালানোর প্রতিবাদ হিসেবে রুশ ও বেলারুশের খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাত না মেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। বেলারুশ আক্রমণ না চালালেও সমর্থন দেওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনিসহ স্বদেশি খেলোয়াড়রা। সে কারণেই সাবালেঙ্কার সঙ্গে হাত মেলাননি ইউক্রেনীয় নারী টেনিস তারকা। এর আগেও মাটির কোর্টে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে দ্বিতীয় বাছাই বেলারুশ তারকার। টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ডে তার সঙ্গে হাত মেলাননি আরেক ইউক্রেনীয় টেনিস তারকা মার্তা কস্তিয়ুক।
এমন কাণ্ডে ম্যাচে শেষে দর্শকের দুয়ো শুনতে হয়েছে সভিতোলিনাকে। তবে হাত না মেলানোর বিষয়ে জবাবও দিয়েছেন তিনি, ‘কেন সে (সাবালেঙ্কা) অপেক্ষা করেছিল জানি না। কারণ আগে থেকেই হাত মেলানোর বিষয়ে আমার বক্তব্য পরিষ্কার ছিল।’
এদিকে, এই জয়ে দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের আরও কাছে পৌঁছে গেলেন সাবালেঙ্কা। সেমিফাইনালে তার প্রতিপক্ষ ক্যারোলিনা মুচোভা। আগামী ৮ জুন প্রতিপক্ষকে হারাতে পারলেই বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের পর আরেকটি শিরোপা জয়ের সুযোগ পাবেন তিনি। নারী টেনিসে দুই নম্বর সাবালেঙ্কার বিপক্ষে ক্যারোলিনার খেলা নিশ্চয়ই সহজ হবে না।