1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

উইন্ডিজ ক্রিকেটের ‌‘পতনে’ ভূমিকা রেখেছে যেসব বিষয়!

  • Update Time : রবিবার, ২ জুলাই, ২০২৩
  • ৯২ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক: বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রথম তিন আসরের ফাইনালে, তার মধ্যে শুরুর দুবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তৃতীয় আসরে তাদের কাছ থেকে শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছিল কপিল দেবের ভারত। ১৯৮৩ সালে লর্ডসের সেই ফাইনালের পর ক্যারিবীয় ক্রিকেটের অনেককিছু বদলে গেছে। ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া সেই দলটি আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা পূরণ করতে পারেনি। বাছাইপর্বের লড়াইয়ে বিশ্বকাপ থেকে তাদের ছিটকে দিয়েছে দুর্বল স্কটল্যান্ড।

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গ্রুপপর্বে জিম্বাবুয়ের কাছে পরাজিত হয়েছিল ক্যারিবীয়রা। সেই সময়ই তাদের বিশ্বকাপ খেলা সংশয়ে পড়ে যায়। তবে তার ষোলোআনা পূর্ণতা দিয়েছে স্কটল্যান্ড। বাছাইয়ের সুপার সিক্সের ম্যাচে তারা ড্যারেন সামির দলকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে।

জিম্বাবুয়ের হারারেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হারের খবরটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল লর্ডসেও। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশেজ টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলায় ধারাভাষ্য দিতে আসা অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের এক চোখ ছিল হারারেতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়া নিয়ে ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইক আথারটনের সঙ্গে তিনি আলাপ করছিলেন। আলোচনার ফাঁকে হতাশ হয়েই পন্টিং বললেন, ‘ওরা (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) কত দ্রুত কতটা নিচে নেমে এসেছে, ভাবা যায়!’

পন্টিংয়ের মতো একই প্রশ্ন নিশ্চয়ই ক্রিকেট সমর্থকদের মনেও ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে বিষয়টিকে হয়তো উইন্ডিজদের পতন বললে বাড়িয়ে বলা হবে। তবে কিছু বিষয়ে নজর রাখলে সেটিও অমূলক মনে হবে না। টি-টোয়েন্টি সংস্করণ বাদে বর্তমান ক্রিকেটে ক্যারিবীয়দের তেমন দাপট নেই বললেই চলে। অথচ এই উইন্ডিজরাই বিশ্ব ক্রিকেটে কত বাঘা বাঘা কিংবদন্তীর জন্ম দিয়েছে।

কোর্টনি ওয়ালশ, কার্টলি অ্যামব্রোস, ম্যালকম মার্শালের নাম শুনলে এখনও দুঃস্বপ্ন দেখেন ব্যাটারেরা। যাদের বাউন্সারের ভয়ে কাঁপতেন সবাই। ক্লাইভ লয়েড, ভিভ রিচার্ডসরা ব্যাট হাতে বিশ্ব শাসন করেছেন। ১৯৭৫ এবং ১৯৭৯ সালে বিশ্বকাপ জিতে তার প্রমাণও দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু এখন কেমার রোচ, জেসন হোল্ডার, আলজারি জোসেফদের নাম কষ্ট করে মনে রাখতে হয়। ব্রেন্ডন কিং, জনসন চার্লসের মতো ব্যাটারদের আইসিসির ক্রমতালিকায়ও খুঁজে পাওয়া যায় না। সাদা বলের ক্রিকেটে কোনো ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার প্রথম ১০ জনে নেই। তবু পড়ে পাওয়া চোদ্দ-আনার মতো টেস্টে অলরাউন্ডারদের তালিকায় ষষ্ঠ এবং সপ্তম স্থানে রয়েছেন যথাক্রমে জেসন হোল্ডার এবং কাইল মায়ার্স। তারা ছাড়া আর কেউ সেই ক্রমতালিকায় নেই।

উইন্ডিজদের এমন দৈন্যদশার পেছনে বেশকিছু কারণ তুলে ধরেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা। যেখানে সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার অরুণ লালের বরাত দিয়ে সেসবের বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়। ভারতের হয়ে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে নিজের শেষ ম্যাচ খেলা অরুণ জানান, ‘সেই সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ চ্যাম্পিয়ন দল ছিল। কী অসম্ভব প্রতিভাবান সব ক্রিকেটার। ব্যাটিংয়ে রিচার্ডস, লয়েডরা ছিল। বল হাতে ছিল মার্শাল, ওয়ালশের মতো ক্রিকেটাররা। যেকোনো দলকে ভয় ধরিয়ে দেওয়ার মতো শক্তিশালী। তারা পরপর দুবার বিশ্বকাপ জিতেছিল। অথচ এবার তারাই নেই!’

ইডেনে ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবার ভারতের মাটিতে হতে যাওয়া ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে তাদের খেলতেই যাওয়া হবে না। দীর্ঘদিন ধরে দলটি ভুগছে উল্লেখ করে অরুণ লাল বলেন, ‘এটা একদিনের ঘটনা নয়। দীর্ঘদিন ধরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট মানচিত্র থেকে পিছিয়ে যাচ্ছিল। ওদের দেশের তরুণেরা অ্যাথলেটিক্স ও বাস্কেটবলের মতো খেলার দিকে বেশি ঝুঁকছে। আর্থিকভাবে আমেরিকার দিকে তাকিয়ে থাকে ওরা। সেদেশে ক্রিকেট খুব বেশি গুরুত্ব পায় না। তাই ক্যারিবিয়ানরাও ক্রিকেট নয়, অন্য খেলায় মেতে থাকে।’

উইন্ডিজ ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপের মতে প্রতিভা থাকলেও সুযোগ পান না যোগ্য ক্রিকেটাররা, ‘দেশে এখনও ক্রিকেট সমর্থকরা আছেন। তাদের জন্য অন্তত বোর্ডের চিন্তাভাবনা পাল্টানো দরকার। কোচ বা অধিনায়ক বদল করে কিছু হবে না। একদম তৃণমূল স্তর থেকে পরিবর্তন প্রয়োজন।’

অর্থসঙ্কট ও রাজনীতি
ক্যারিবিয়ান জাতীয় দল নিয়ে ক্রিকেট বোর্ড এবং ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। ঘরোয়া ক্রিকেটের তেমন গুরুত্ব নেই দেশটিতে। সেই সঙ্গে বড় সমস্যা আইপিএলসহ সারা বিশ্বের টি-টোয়েন্টি লিগে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারদের খেলতে চলে যাওয়া। নিজের দেশের হয়ে খেলার আগ্রহ দেখা যায় না সুনীল নারাইন, কাইরন পোলার্ড ও আন্দ্রে রাসেলদের। ক্রিস গেইলের মতো ক্রিকেটার দেশের হয়ে না খেলে বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগে সময় দেন। তার পুরোটাই অর্থের কারণে। কিন্তু এটা দীর্ঘমেয়াদে ভোগাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।

দেশের তরুণদের মধ্যে ক্রিকেট সেভাবে জায়গা করে নিতে পারেনি। কাজ করে না আবেগও। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোনো দেশ নয়। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রিকেটারদের নিয়ে তৈরি হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাই দেশের পতাকা নিয়ে ক্রিকেট মাঠে খেলতে পারেন না তারা। সঙ্গে রয়েছে রাজনীতি। একই দেশ থেকে সব ক্রিকেটারকে নেওয়া যাবে না। এছাড়া জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে ‘কেয়ারলেস’ ভাব নজরে পড়ে। একের পর ক্যাচ ফেলে দলটির ক্রিকেটাররা। বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার ম্যাচে যখন স্কটল্যান্ডের আর ১০ রান প্রয়োজন, তখনও উইন্ডিজ ক্রিকেটারদের হাসতে দেখা যায়। সমর্থকদের স্বাক্ষর দিতে দেখা যায়। যেন কোনো আক্ষেপ নেই তাদের মধ্যে!

দলগঠনে সমস্যা
ওয়েস্ট ইন্ডিজের দৈন্যদশার পেছনে অন্যতম কারণ অপরিপক্ক দলগঠন। ড্যারেন ব্র্যাভো ব্যাট হাতে আগামীর ব্র্যায়ান লারা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু এখন তিনি দলেই নেই। হারিয়ে গেছেন মিগুয়েল কামিন্স, ওশানে থমাসেরাও। এর মাঝে শিমরন হেটমায়ারের মতো ঘটনা ঘটে। আইপিএলে যিনি একটি ম্যাচও দলের বাইরে থাকেন না, তিনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার বিমান ধরতে পারলেন না। তা-ও এক বার নয়, দুবার। ফলে দল থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয় তাকে।

সাম্প্রতিক সময়ে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেছে ক্যারিবীয়রা। এছাড়া বিদেশের মাটিতে ভারত-পাকিস্তানসহ অন্য দেশে খেলতে গিয়েও হেরেছে। ১০ বছর আগেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবস্থা এতটা খারাপ ছিল না। সেই সময় দলে ছিলেন ক্রিস গেল, ড্যারেন সামি, সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেলের মতো ক্রিকেটার। ওঠে এসেছিলেন কার্লোস ব্রাথওয়েটের মতো ক্রিকেটার। তার ব্যাটে ভর করেই ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল উইন্ডিজরা। কিন্তু তার ক্রিকেটজীবন বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ক্রিকেট ব্যাট ছেড়ে মাইক ধরেন ব্রাথওয়েট। ধারাভাষ্যকার হয়ে যান তিনি। এরভিন লুইস ক্যারিবিয়ান দলের তারকা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু তাকে হঠাৎ ছেঁটে ফেলেন নির্বাচকেরা। তারপরই তিনি ছন্দ হারান।

তবে এমন পরিস্থিতিতেও আশা দেখেন অনেকে। অরুণ লালের মতে, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফিরবে। আগামী দিনে এমন অবস্থা থাকবে না। বদলাবে ওদের ঘরোয়া ক্রিকেটও।’ ইতোমধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন সাবেক ক্রিকেটার মাইলস বাসকম্ব। তিন বছরের মেয়াদে তিনি দলটির দায়িত্ব পেয়েছেন। তার হাত ধরে হয়তো নতুন করে আশায় বুক বাঁধতে পারেন ক্যারিবীয় ক্রিকেটের সমর্থকরা।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..