বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:করোনা ভাইরাস হল আসলে কমিউনিস্ট ভাইরাস। মঙ্গলবার কলকাতায় বিজেপি দফতরে বসে এমনই কথা বললেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি যখন এ কথা বলেন, তখনও অবধি খবর ছিল, সীমান্তে চিনা সেনার হামলায় ৩ ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে। ভারতের পাল্টা জবাবে ৫ চিনা সেনার মৃত্যু হয়েছে। ৫ সেনার মৃত্যুর সংবাদ চিনা সংবাদ সংস্থা গ্লোবাল টাইমস স্বীকার করে নিয়েছে। তবে মঙ্গলবার রাতে মৃত্যুসংখ্যার ব্যাপক বৃদ্ধি হয়েছে। এএনআই জানিয়েছে, এই সীমান্ত সঙ্ঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীও বিবৃতি দিয়ে ২০ সেনার মৃত্যুর খবর স্বীকার করে জানিয়েছে, ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে চিনা বাহিনীর হামলায়, আর গালওয়ানের ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জওয়ানের। পাশাপাশি এএনআই এ কথাও জানিয়েছে, ভারতীয় সেনার পাল্টা আক্রমণে চিনা সেনার হতাহতের সংখ্যা ৪৩ জন।
এই বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সারাদিন সারা দেশের সঙ্গে বাংলার রাজনীতিও ছিল সরগরম। যদিও বিষয়টি নিয়ে বাংলার কমিউনিস্ট দল সিপিএম মুখ খোলেনি। তবে বিজেপি চুপ করে থাকেনি। দলের তরফে দিলীপবাবু বলেন, ‘নেপালের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক শুধু ঐতিহাসিকই নয়, পৌরাণিকও। সেই সম্পর্কে চিন কেন, অন্য কোনও দেশই ফাটল ধরাতে পারবে না। নেপালে ভারতের প্রভাব নষ্ট করার চক্রান্ত চলছে। তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে চিন। যেহেতু নেপালের ক্ষমতায় এখন কমিউনিস্ট পার্টি, তারা নিজেদের গদি বাঁচাতে এইসব অপকর্ম করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘করোনা ভাইরাস নিয়ে চিন যে রাজনীতি করছে, তা গোটা পৃথিবী জানে। সব জায়গায় তা নিয়ে আলোচনা চলছে। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশই চিনের আচরণে ক্ষুব্ধ। তাই করোনা ভাইরাসকে অনেক দেশই চিনা ভাইরাস বলছে। মানে তা কমিউনিস্ট ভাইরাসই।’ সীমান্ত সমস্যার জন্য চিনকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘চিনের সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতার জন্যই এই সমস্যা। তবে ভারতের সেনারাও সবসময় সতর্ক রয়েছে। তারা ঠিক সময়ে ঠিক জবাব দিচ্ছে। চিন যদি অস্ত্র দিয়েই জবাব চায়, তা হলে তাদের তা–ই দেওয়া হবে। তবে ভারত চিরকাল শান্তি চেয়ে এসেছে। এখনও চায়।’
বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে প্রদেশ কংগ্রেসও। কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরি কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, ‘বিনা দোষে চিন আমাদের সেনাদের মারবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। এই ঘটনার বদলা চাই। বদলা নিতে হবে।’ তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘তাঁর বুকের ছাতি তো ৫৬ ইঞ্চি। এখন সেই ছাতির প্রমাণ দিতে হবে। বদলা নিতে হবে চিনের বিরুদ্ধে।’ মঙ্গলবার তিনি যখন এ কথা বলেন, তখনও অবধি খবর ছিল, চিনা সেনার আক্রমণে ভারতের ৩ সেনার মৃত্যু হয়েছে এবং ভারতের জবাবে নিহত হয়েছে ১ চিনা সেনা। তবে রাতে মৃত্যুসংখ্যার বৃদ্ধি নিয়ে নতুন খবর আসার পর অবশ্য বাংলার কোনও দল এখনও পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া জানায়নি।