সুমন,মোংলা(বাগেরহাট)সংবাদদাতা: এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যাংকের (এআইআইবি) জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে বাংলাদেশ পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বাংলাদেশে এআইআইবি’র কোন বিনিয়োগ নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে সমর্থন করেনা। জলবায়ু সংকটের সময়ে এটি অগ্রহণযোগ্য। এআইআইবি’র বিনিয়োগ আমাদের জীবনকে ধ্বংস করছে, পরনির্ভশীলতা বাড়িয়ে তুলছে। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে এআইআইবি’র বিনিয়োগ প্রত্যাহার করো এবং কার্বন নির্গমন বন্ধে অর্থায়ন করো।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় মোংলার দক্ষিণ কাইনমারিতে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যাংক (এআইআইবি) এর জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের বিরুদ্ধে মোংলা নাগরিক সমাজ, ক্লিন খুলনা ও বিডাব্লিউজিইডি আয়োজিত নাগরিক পদযাত্রা শেষে সমাবেশে বক্তারা একথা বলেন।
নাগরিক পদযাত্রা শেষে মোংলা নাগরিক সমাজ’র আহ্বায়ক মোঃ নূর আলম শেখ’র সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নাগরিক নেতা গীতিকার মোল্লা আল মামুন, নারীনেত্রী কমলা সরকার, সাংবাদিক শেখ রাসেল, সাংবাদিক হাছিব সরদার, পরিবেশকর্মী মার্টিন সরকার, তন্বী মন্ডল প্রমূখ।
নাগরিক পদযাত্রা শেষে সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন এআইআইবি’র চালিকা শক্তি হচ্ছে চীন। আর চীনের সাথে বাংলাদেশের ব্যাপক অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। জরিপের তথ্য অনুযায়ি ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ব্যবহৃত মোট জ্বালানির ৯০ শতাংশ হবে আমদানি নির্ভর। বিশেষ করে কয়লা এবং এলএনজি। আর এর জন্য বাংলাদেশকে মোটা অংকের অর্থের যোগান দিতে হবে যা ডলারে পরিশোধ করতে হবে। ইতিমধ্যে আমাদের রিজার্ভের সংকটের কথা আমরা জানি। এআইআইবি’র পরামর্শে কাজ করতে যেয়ে আমাদের দেশ সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছে। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মোংলা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মোঃ নূর আলম শেখ বলেন এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রথম তিন বছরের মধ্যে যত অর্থ বিনিয়োগ করেছে তার মধ্যে ২০ শতাংশ বিনিয়োগই জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্প। দ্রুত গতিতে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য এই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারই অন্যতম দায়ী। এআইআইবি ২০১৭ সাল থেকে আমাদের দেশে জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করছে। ২০২২ সাল পর্যন্ত ৫১০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এসে এআইআইবি বিদ্যুৎ খাতে দুটি প্রকল্পে ২৭৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এআইআইবি’র বিনিয়োগ সামাজিক, পরিবেশ ও অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছে এবং একই সাথে জলবায়ু সংকট বাড়িয়ে তুলছে। তাই বাংলাদেশে এআইআইবি- কে সকল কয়লা এবং জীবাশ্ম জ্বালানি পরিবহনসহ ট্রান্সমিশন, ডিস্ট্রিবিউশন, বন্দর উন্নয়ন, হাইব্রিড প্লান্ট এবং কার্বন ক্যাপচার, ইউটিলাইজেশন ও স্টোরেজ সমর্থক পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ বন্ধের আহ্বান জানাই। নাগরিক সমাজের নানা শ্রেণীপেশার কয়েকশো মানুষ এক কিলোমিটার রাস্তা এআইআইবি বিরোধী পদযাত্রা শেষে দক্ষিণ কাইনমারিতে সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসুচি শেষ হয়।