স্পোর্টস ডেস্ক: বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দাপুটে জয়ের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা সবাইকে একটি বার্তা দিয়ে রাখলো তারাও বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম দাবিদার। এক ম্যাচেই বিশ্বকাপের রেকর্ড বই ওলটপালট করে ফেলেছে প্রোটিয়ারা। বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান দলীয় সংগ্রহ ৪২৮ রান করে ইতিহাস গড়ে তারা। এত বিশাল রান তাড়া করতে নেমে প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়ে রীতিমত চাপা পড়ে যায় লঙ্কানরা। অনভিজ্ঞ দল নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে এসে প্রথম ম্যাচে ১০২ রানে পরাজয় বরণ করতে হয় তাদের।
শুরুতে ব্যাটিং স্বর্গ উইকেটে টস জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দাসুন শানাকা। শুরুতে বাভুমাকে ৮ রানে হারালে ধীরে ধীরে যেন খোলস ছেড়ে বের হতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ব্যাটার ডি কক ও ভ্যান ডার ডাসেন। প্রথম দশ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৪৮ রান তোলে প্রোটিয়ারা।
এরপরেই যেন ধুন্দুমার ব্যাটিংয়ের পসরা সাজিয়ে বসে আফ্রিকানরা। শ্রীলঙ্কার বোলারদের বেধড়ক মার মেরে সেঞ্চুরি তুলে নেন কুইন্টন ডি কক ও ভ্যান ডার ডাসেন। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করে পরের বলেই পাথিরানার বলে আউট হন ডি কক। ২০৪ রানের অনবদ্য জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা পায় বড় রান গড়ার ভিত।
অন্যদিকে ভ্যান ডার ডাসেনও সেঞ্চুরি তুলে ১০৮ রান করে ডি ককের আউটের কিছুক্ষণ পরেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ৩৪ বছর ২৪২ দিন বয়সে দ্বিতীয় বয়স্ক ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়েন ডুসেন। তিনিও সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তাকে ফেরান ওয়েলালাগে।
তিন উইকেট পড়ে গেলেও খেই হারায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর মার্করামের ব্যাটে তাণ্ডব। ৫৪ বলে ১৪ চার আর ৩ ছক্কায় ১০৬ রানের ইনিংস খেলে দিয়ে যান এই ব্যাটার। লঙ্কান বোলার মাদুশঙ্কাকে ছক্কা হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি পূরণ করেন মার্করাম, ৪৯ বলেই। ১৪ চার আর ৩ ছক্কায় তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়েছেন মার্করাম। বিশ্বকাপ ইতিহাসে এটিই দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরি।
মাঝে হেনরিক ক্লাসেন ২০ বলে ৩২ আর শেষদিকে ডেভিড মিলার ২১ বলে খেলেন অপরাজিত ৩৯ রানের ইনিংস খেললে দক্ষিণ আফ্রিকা পায় ৪২৮ রানের বিশাল সংগ্রহ। যা বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই পাথুম নিশাঙ্কাকে হারায় শ্রীলঙ্কা। কিন্তু এক প্রান্ত আগলে রেখে প্রোটিয়া বোলারদের তুলোধুনো করতে থাকেন কুশল মেন্ডিস। মাত্র ২৫ বলেই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মেন্ডিস। যখনই তিনি সেঞ্চুরির দিকে আগাচ্ছিলেন তখনই তাকে ফেরান রাবাদা। ৪২ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলে দলকে ১০৯ রানে রেখে বিদায় নেন তিনি।
১৪ ওভারে ১১৪ রানের ভেতর চার উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে লঙ্কানরা। এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন চারিথ আসালাঙ্কা। তিনিও হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৬৫ বলে ৭৯ রান করে এনগিডির বলে আউট হন তিনি।
শেষ দিকে অধিনায়ক দাসুন শানাকার ৬২ বলে ৬৮ রান কেবল ব্যবধানই কমিয়েছে লঙ্কানদের পরাজয়ের। পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। ৪৪.৫ ওভারে ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩২৬ রানে অলআউট হয় তারা। বড় জয়ে বিশ্বকাপ শুরু করে নিজেদের বিশ্বকাপ নিয়ে লক্ষ্যটা আরও একবার জানান দিল বাভুমার দল।