স্পোর্টস ডেস্ক: চলমান বিশ্বকাপ ক্রিকেটকে ঘিরে উত্তেজনার ব্যারোমিটারে পারদের উচ্চতা আজ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। আবার নেমে যেতে পারে একবারে তলানিতে। সবকিছু নির্ভর করছে প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচের ওপর। যে ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে স্বাগতিক ভারত ও বিশ্বকাপের বর্তমান রানার্স আপ দল নিউজিল্যান্ড। আজ দুপুর আড়াইটায় ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে শুরু হবে ম্যাচটি।
ম্যাচ জিতলেই ২০১১ সালের পর ভারতের এটা হবে প্রথম ফাইনাল। আর নিউজিল্যান্ড জিতলে টানা তৃতীয় ফাইনাল। চার বছর আগে বিশ্বকাপের এক সেমিফাইনালে এই ভারত ও নিউজিল্যান্ড মুখোমুখি হয়েছিল। সে ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে নিউজিল্যান্ড ফাইনালে খেলেছিল। এবারের বিশ্বকাপেও দল দুটো মুখোমুখি হয়েছিল। সে ম্যাচে অবশ্য শেষ হাসি হেসেছিল স্বাগতিক ভারত।
আজ উভয় দলের জন্য প্রতিশোধের ম্যাচ। আগের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে হারের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য উম্মুখ হয়ে আছে স্বাগতিক ভারত। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড উম্মুখ হয়ে আছে গ্রুপ পর্বে হারের প্রতিশোধ নিতে।
ওয়াংখেড় স্টেডিয়াম ভারতের জন্য এক সুখস্মৃতির নাম। ২০১১ সালে এই স্টেডিয়ামে মাহেন্দ্র সিং ধোনীর নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ভারত দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জয় করেছিল। তৃতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের পথে প্রথম ধাপে আজ সেই ওয়াংখেড়ে নামছে ভারত।
বিশ্বকাপে ভারত দূর্দান্ত ফর্মে রয়েছে। কোনো শর্ত বা সমীকরণের দোহাই দিয়ে ভারত সেমিফাইনালে আসেনি। প্রচণ্ড দাপটের সঙ্গে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই তারা শেষ চারে পৌঁছায়। দশ দলের টুর্নামেন্টে ৯ ম্যাচের সবকটিতেই জয় তাদের।
অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড ধুঁকতে ধুঁকতে সেমিফাইনালে। শেষ ম্যাচের আগেও তাদের সেমিফাইনাল খেলা নিশ্চিত ছিল না। যদিও টুর্নামেন্টে তাদের শুরুটা ছিল দারুণ কিন্তু মাঝে পথ হারিয়ে বসে দলটি। আর তাতেই সেমিফাইনালের পথ কঠিন হয়ে যায়।
নিজেদের মাঠ, নিজেদের সমর্থক এ সব এক পাশে সরিয়ে রাখলেও প্রতিপক্ষের তুলনায় এগিয়ে ভারত। ব্যাটিং ও বোলিং উভয় বিভাগে স্বাগতিক দলের একচ্ছত্র আধিপত্য। সবেচেয়ে বেশি রান করার তালিকায় ভারতের বিরাট কোহলি নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিশ্বকাপে তার গড় রান ৯৯। ৯ ম্যাচে তিনি দুটো সেঞ্চুরি করেছেন। পাঁচটি হাফ সেঞ্চুরি।
কোহলির পাশাপাশি অধিনায়ক রোহিত শর্মা, শ্রেয়াস আইয়ের, লোকেশ রাহুলরা রয়েছেন চমৎকার ফর্মে। যে কোনো বোলিং আক্রমণকে ছত্রখান করে চলেছেন তারা। ব্যাট হাতে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা ভারতের মত অতটা আধিপত্য বিস্তার করতে পারছেন না ঠিকই তবে কিইউ ব্যাটার রাচিন রাভিন্দ্র ঠিকই বোলারদের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন। তিন সেঞ্চুরি তার, দুটো হাফ সেঞ্চুরি। আছেন ড্যারিল মিচেল আর ডেভন কনওয়ে। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন মূলত এদের ওপর নির্ভরশীল। সাফল্য পেতে এই তিন ব্যাটারকে অবশ্যই রান পেতে হবে।
বল হাতে তো অসাধারণ বোলিং করছেন মোহাম্মদ শামি, জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ আর রবীন্দ্র জাদেজারা। দলের তিন পেসার এরই মধ্যে ৪৫ উইকেট নিয়েছেন। শামি তো অসাধারণ বোলিং করছেন। ৫ ম্যাচেই তার শিকার সংখ্যা ১৬।
ম্যাচ জিততে নিউজিল্যান্ডকে পরে বোলিং করতে হবে। অন্যথায় ভারতকে মোকাবেলা করা তাদের জন্য কঠিন হতে পারে। ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে সূর্যের আলো নিভে যাওয়ার পর বল দারুণ কার্যকর হচ্ছে। ট্রেন্ট বুল্ট, ম্যাট হেনরি ভালো বোলিং করছেন। মিচেল স্যান্টনার তো তার ঘূর্ণি বোলিংয়ে কুপোকাত করে চলেছেন ব্যাটারদের। ১৬ উইকেট তার দখলে।
তবে সবকিছুর ওপরে এটা ক্রিকেট। নির্দিষ্ট দিনটা ভালো গেলে যে কোনো দল যে কোনো দলকেই হারিয়ে দিতে পারে। এ বিশ্বকাপে তার প্রমাণ পেয়েছে ক্রিকেটভক্তরা। ফলে নিউজিল্যান্ডকে হালকা করে নেওয়ার মত ভুল ভারত যে করবে না এটা নিশ্চিত।