নিজস্ব প্রতিনিধি: রাঙামাটিতে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কাণ্ডারি ও নির্যাতিত নেতা হিসেবে পরিচিত অমর কুমার দে এবার দলীয় মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করলেও শেষে প্রত্যাহার করেন তিনি। তবে এবার দুঃসময়ের নেতা হিসেবে দল তাকে মূল্যায়ন করবে সেই প্রত্যাশা করেই দলীয় মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন বলে জানান অমর কুমার দে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের বিষয়টি নিশ্চিত করে অমর কুমার দে সোমবার বিকেলে জানান, রাঙামাটিতে গত (রোববার) সবার আগেই আমি দলীয় মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছি। আমার পরপরই অন্যান্য নেতার অনুসারীরা মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ শুরু করেন।
অমর কুমার দে প্রতিনিধিকে জানান, দলীয় মনোনয়ন পত্রে যে বিষয়গুলো সম্পর্কে লেখা হয়েছে; মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেক নেতারই সেই বাস্তবতা নেই। মনোনয়ন পত্রে দলের দুঃসময় ও বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় নির্যাতিত-নিপীড়িত হিয়েছে কিনা- এসব তথ্য চাওয়া হয়েছে। এবারের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকেই দুঃসময়ে দলের পাশে ছিলেন না। ‘বিএনপি সরকারের আমলে আমার রিজার্ভ বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৬-৭ বার হামলা, লুটপাট ও আমি নিজেই হামলার শিকার হয়েছি। এখনকার সময় যারা নিজেদের বড় নেতা ভাবেন তাদের কেউই তখন ছিলেন না’- বলেন অমর কুমার। জানা গেছে, অমর কুমার দে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক, রাঙামাটি পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দপ্তর সম্পাদক। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, দুঃসময়ে দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ হলেও সু-সময়ে দলের শীর্ষনেতাদের অবমূল্যায়ন ও অবহেলায় এখন রাজনীতিতে মাঠে প্রভাব হারিয়েছেন অমর কুমার।
আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক অস্থিরতা হলেই হামলার লক্ষ্য ছিল অমর কুমার দে’র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। অমর কুমার দে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ রাঙামাটি জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি ও জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে কেন্দ্রীয় হিন্দু ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ও জেলা কমিটির আহবায়কের দায়িত্বে থাকলেও আওয়ামী লীগের দলীয় কোনো পদবী নেই অমরের। তবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অমর বরাবরই পরিচিত মুখ। দলীয় সভানেত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে অমর কুমার দে বলেন, আওয়ামী লীগ যদি দলের ত্যাগী ও নিপীড়ন-নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সঠিক মূল্যায়ন করে তবে অমর কুমারকে বাদ দেওয়া যাবে না।
এর আগে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র কিনলেও শেষমেষ প্রত্যাহার করে নেন। এরপর সবশেষ অনুষ্ঠিত রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহ’ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোবাইল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি, যদিও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই হয়েছেন বিজয়ী। এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে মনোনয়নের পত্র সংগ্রহ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী সদস্য দীপংকর তালুকদার এবং জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে চেয়ারম্যান নিখিল কুমার দেন। দীপংকর তালুকদার খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিরও সভাপতি। নিখিল কুমার চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদ্য-সাবেক চেয়ারম্যান।