ওয়েব ডেস্ক: ‘বিএনপি নির্বাচন বানচালে অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে’- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি। ওবায়দুল কাদেরকে ‘মিথ্যা কথা বলার শাহেন শাহ’ আখ্যা দিয়ে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘উদ্ভট এবং অসংলগ্ন অপপ্রচারের যদি কোনো মহাবিদ্যালয় করা যায়, তাহলে তার প্রিন্সিপাল করা যেতে পারে ওবায়দুল কাদেরকে।’
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আগামী সোমবারের পর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা না মানলে না কি কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার প্রশ্ন এই সরকারের দলদাস আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশন যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা কোন ক্ষমতা বলে ও কোন আইনে? সংবিধানের কোন ধারার বলে দিয়েছে? একটা নীলনকশার পাতানো নির্বাচন নির্বাচন খেলাকে সুরক্ষা দিতে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে পরিপত্র জারি করেছে তা সম্পূর্ণরূপে একাধারে অনৈতিক, অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থি। এটা জনগণের মৌলিক অধিকারের চূড়ান্ত লঙ্ঘন।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন শপথগ্রহণ করেছে সংবিধানের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের জন্য। শুধু জরুরি অবস্থা জারির সময় সংবিধানের ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০ ও ৪২ ধারার কতিপয় বিধান অর্থাৎ মৌলিক অধিকার স্থগিত করা যায়। বর্তমানে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়নি। সুতরাং কোনো অবস্থাতেই মৌলিক অধিকার স্থগিত করার কোনো কর্তৃপক্ষ প্রজাতন্ত্রের নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই পরিপত্র সরাসরি সংবিধানের ৩১ থেকে ৪১ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন।’
এসময় রিজভী প্রশ্ন রাখেন, ‘আগামী ১৮ তারিখ থেকে জরুরি অবস্থা জারি হতে যাচ্ছে কি না? কারণ সংবিধানের উল্লেখিত অনুচ্ছেদ শুধু জরুরি অবস্থা অথবা মার্শাল ল’ চলাকালে স্থগিত থাকে। দেশে কি জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে বা সংবিধান স্থগিত রাখা হয়েছে? মার্শাল ল’ তো ভিন্ন; তার সঙ্গে সংবিধানের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু জরুরি অবস্থা কিছুই নেই। তাহলে কোনো অজুহাতে নির্বাচন কমিশন বা সরকার নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকার স্থগিত রাখতে পারে না। দেশের জনগণ সংবিধান পরিপন্থি কোনো নিষেধাজ্ঞা মেনে নেবে না। তাই বলবো, অনতিবিলম্বে এই বেআইনি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করুন।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ জানে, ছাত্রলীগ-যুবলীগ, আওয়ামী লীগের নেতারা প্রতিটি এলাকায় অস্ত্রের ডিপো বানিয়েছে। পোশাকশ্রমিকদের রুটি-রুজির সংগ্রাম রুখতে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি দিচ্ছে।’
বিএনপিসহ সব বিরোধীদল আন্দোলন করছে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার ও দেশকে বাকশাল থেকে গণতন্ত্রে ফেরানোর জন্য মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। বিএনপি সন্ত্রাস, সহিংসতা, নাশকতার বিরুদ্ধে। যুগ যুগ ধরে প্রমাণিত হয়েছে সন্ত্রাস, সহিংসতা, নাশকতার একচেটিয়া কৃতিত্ব বা পেটেন্ট আওয়ামী লীগের।’